মহসিন হোসাইন: চাঁদপুরে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর গত ১ বছরে ১৭১ টি অভিযানে ৪১৫ প্রতিষ্ঠান কে দন্ড ও জরিমানা করা হয়েছে । উক্ত অভিযানে ৩০ লক্ষ ২৪হাজার ৫০০টাকা আদায় করেছে চাঁদপুর জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
এর মধ্যে বাজারে অভিযানে ২৯লাখ ৬ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। অভিযোগের ভিতরে নিষ্পত্তি করে জরিমানা আদায় করা হয় ১লক্ষ ১৮হাজার টাকা। ২৯ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেয়া হয়েছে ।এর মধ্যে ২৯ হাজার ৫০০ টাকা অভিযোগকারীদের শতকরা ২৫% হারে প্রদান করা হয়।
এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, জুন ২৩ থেকে জুলাই ২৪ পর্যন্ত জনগণের ১২৩ টি অভিযোগের সবকটিই নিষ্পত্তি করা হয়েছে। যা কিনা ভোক্তার সফলতা অর্জন বললেই চলে। এদিকে অভিযোগে দন্ড ও জরিমানা করা হয়েছে মোট ২১ প্রতিষ্ঠানকে। অন্য দিকে জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে বিভিন্ন বাজারে ১৭১টি অভিযানে ৪১৫ প্রতিষ্ঠান কে দন্ড ও জরিমানা করা হয়। যা ভোক্তার বার্ষিক টার্গেটের তুলনামূলক বেশি রয়েছে।
৮টি উপজেলা নিয়ে গঠিত জেলায় ১৭১টি অভিযান খুবই সন্তোষজনক বলে মন্তব্য করেছেন সচেতন মহল। যেখানে ভোক্তার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বার্ষিক টার্গেট থাকে মিনিমাম ১৫০টি অভিযানের। সেখানে চাঁদপুর জেলা ভোক্তা অধিকার সহকারী পরিচালক মোঃ নূর হোসেন রুবেল মাত্র একজন অফিস সহকারী’কে নিয়ে প্রতি বছর তিনি তার কর্তব্যের জায়গাটা পুরোটাই ফিলাপ করতে সক্ষম হয়েছেন।
এ দিকে পুরো জেলায় ভোক্তার সহকারী পরিচালক ও অফিস সহকারী এই দু’জন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের চাঁদপুর জেলা কার্যালয় দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন। লোকবল বলতে সহকারী -পরিচালক ও একজন অফিস সহকারী। জেলা কার্যালয় হলেও ঢাল নেই, তলোয়ার নেই যেনো নিধিরাম সর্দার।
ভোক্তা অধিকারের উপজেলা পর্যায়ে কোনো অফিস নেই। তারপরেও উপজেলা পর্যায়ে অভিযান পরিচালনা করে আসছেন ভোক্তার এই সহকারী পরিচালক মোঃ নূর হোসেন রুবেল।জেলা অফিসের এই একজন কর্মকর্তা ও একজন কর্মচারী ব্যতিত আর কোনো লোকবল না থাকায় জনগণ একজন ভোক্তা হিসেবে আশানুরূপ সেবা থেকে বঞ্চিত ও বিক্রেতা কর্তৃক প্রতারিত হচ্ছে।
তাছাড়া চাঁদপুর জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের নিজস্ব কোন অফিস নেই। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ৩য় তলায় ছোট একটি কক্ষে এক টেবিলেই কাজ সাড়ছে তারা। নেই পিয়ন ও বাজার পরিদর্শকসহ প্রয়োজনীয় লোকবল । লোকবল না থাকায় একজন সহকারী-পরিচালকের একার পক্ষে কাজ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। অভিযান পরিচালনার সময় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর স্থানীয় অফিস ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের সমন্বয়ে প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন। খাদ্যসহ বিভিন্ন পন্যে ভেজাল পাওয়া গেলে প্রশাসনিকভাবে কারাদন্ডসহ জরিমানা করে থাকেন।
গত বছর জুলাই থেকে জুন ২৪ পর্যন্ত অভিযান পরিচালিত হয়। ১২৩টি জনগণের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালিত হয়েছে। এতে দন্ড ও জরিমানা করা হয় ২১ প্রতিষ্ঠানকে। জেলা ভোক্তা সংরক্ষন অধিকারের উদ্যোগে বাজারের অভিযানগুলোতে ৪১৫টি প্রতিষ্ঠানকে দন্ড দেয়া হয় । সবচেয়ে বেশি অভিযান পরিচালিত হয় চলতি বছরের মে মাসে।
ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এর ধারা ৭৬ (১) অনুযায়ী, যে কোন ব্যক্তি, যিনি, সাধারণভাবে একজন ভোক্তা বা ভোক্তা হতে পারেন, এই অধ্যাদেশের অধীন ভোক্তা-অধিকার বিরোধী কার্য সম্পর্কে মহাপরিচালক বা মহাপরিচালকের নিকট ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে অবহিত করে লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে পারেন।
ভোক্তা অধিকারের সহকারী-পরিচালক মোঃ নূর হোসেন রুবেল জানান, চেষ্টা করে যাচ্ছে ভোক্তার অধিকার আদায়ে।
ভেজাল খাদ্য সামগ্রী, ঔষধ, পোষাক, কাঁচা পন্যসহ বাজারের বিভিন্ন বিষয় আমাদের তদারকিতে রয়েছে। তবে আমাদের নিজস্ব লোকবল নেই বললেই চলে। পর্যাপ্ত লোকবল নিয়োগ দিয়ে জেলার কার্যক্রমে উপজেলা অফিস স্থাপনসহ পরিপূর্ণ একটি কার্যালয় স্থায়ী করার জন্য তিনি আহ্বান জানান।