চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বছরের পর বছর একেই কর্মস্থলে!

চাঁদপুর খবর রিপোর্ট : প্রশাসনিক সংস্কারের অংশ হিসেবে চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের অধীন জেলা প্রশাসনের বিতর্কিত  কর্মকর্তা-কর্মচারী(দ্বিতয়ি ও তৃতীয় শ্রেনীর কর্মচারী),অফিস সহায়কদের ব্যাপক  রদবদল দাবী উঠেছে ।
বছরের পর পর বছর একেই কর্মস্থলে চাকুরী করছেন তারা । ঘুর-ফিরে একেই কর্মস্থলে  উপজেলা ও জেলা প্রশাসনে চাকুরী করছে ।  দ্রুত বির্তকিত স্টাফদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে  বিভাগীয় ব্যবস্থা এবং রদবদল করার দাবী উঠছে । চাঁদপুরের নবাগত জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে এ দাবী করেন ।
এ ছাড়াও  নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে,চাঁদপুরের ডিসি অফিসের স্টাফ কোয়ার্টারে নতুন মোট ৯টি  কোয়ার্টার (ভবন) করার  সিদ্ধান্ত হয়েছে ,এর মধ্যে ৬টি ভবনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে । এসব নতুন ভবনে এসব বিতর্কিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নামে ৪/৫টি ফ্লাট/ইউনিট রয়েছে । সম্পুর্ন বেআইনীভাবে নিয়ম নীতি না মেনে বিগত দিনে কিছু সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব ফ্লাট/ইউনিট নিজেদের নামে বরাদ্দ নিয়েছেন ।
এনিয়ে জেলা প্রশাসনে স্টাফদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে । তদন্ত করে স্টাফ কোয়ার্টারে ফ্লাট বরাদ্দের বিষয়টি পুন:বিচেনার দাবী করছে এবং একজন স্টাফ কিভাবে ৪/৫টি ফ্লাট বরাদ্দ পেলো এবং এতো বিশাল  অর্থই বা কিভাবে পেলো,তা তদন্তেরও দাবী উঠেছে ।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন একই পদে আকড়ে রাখা বিগত ১৫ বছরে পতিত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে পোস্টিং পাওয়া এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বহাল তবিয়তে আছেন। বছরের পর বছর জেলা প্রশাসনে,উপজেলা প্রশাসনে ও এসিল্যান্ড অফিসে এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পদ দখল করে আছেন । জানা গেছে,সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী  জেলা প্রশাসক , অতিরিক্তি জেলা প্রশাসক,ইউএনও ও এসিল্যান্ড মহোদয়রা বদলী হলেও এসব অফিসের কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বদলী হয় না । কেউ দুই-তিন বছরের অধীন সময়ে একেই পদে আছেন ।
কেউ কেউ অর্ধযুগের বেশী সময় একেই কর্মস্থলে চাকুরী করছেন । বিগত নির্বাচনে পতিত আওয়ামীলীগ সরকারের পক্ষে কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীরে প্রকাশ্যে কাজ করারও অভিযোগ রয়েছে । অপরদিকে জানা গেছে, চাঁদপুর  জেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইটে অবসরে যাওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নাম ও ছবি  এখনো রয়েছে । আপগ্রেড করা হয়নি ওয়েবসাইটও ।
জানা গেছে,চাঁদপুর জেলা প্রশাসনে স্থানীয় সরকার শাখা,রাজস্ব শাখা,জেনারেল সার্টিফিকেট শাখা,রেকর্ড রুম, রাজস্ব মুন্সিখানা,ভূমি অধিগ্রহন(এলএ )শাখা,সাধারণ শাখা,সংস্থাপন শাখা,নেজারত শাখা,শিক্ষা ও কল্যান,জুডিশিয়াল মুন্সিখানা  শাখায় বছরের পর বছর পোস্টিং পাওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বহাল তবিয়তে আছেন এসব শাখায় । নাজির এর নেতৃত্বে বিভিন্ন শাখায় পদ আকঁড়ে আছেন ।
চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে,চাঁদপুর জেলা প্রশাসনে দীর্ঘদিন কর্মরত প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো: আক্তারুজ্জামান , প্রশাসনিক কর্মকর্তা মিজান,উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা ভোলানাথ নন্দী, উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা এমরান হোসেনসহ একডজন কর্মকর্তা-কর্মচারী ,অফিস সহায়করা চাঁদপুর জেলা প্রশাসনে পদ আকঁড়ে আছেন ।
এ ছাড়াও প্রতিটি জেলার  ইউএনও অফিস , এসিল্যান্ড অফিস ,ইউনিয়ন ভূমি অফিসগুলো একেই অবস্থা বিরাজ করছে । রদবদল খুবই কম হয়েছে । মাঝে মধ্যে  কিছু রুটিন রবদবল হয়েছে । ব্যাপক পরিসরে রদবদল হয়নি ,এমনই প্রশ্ন আছে । এদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগও আছে । অনেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চাঁদপুরে বিলাশ বহুল ফ্লাটের ,ব্যাংকে বিপুল পরিমান টাকা ও    সঞ্চয়পত্রে জমা আছে । তদন্ত করলে সব তথ্য বেরিয়ে আসছে ।
এ ব্যাপারে চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের  নাজির  ভোলানাথ নন্দী গতকাল দৈনিক চাঁদপুর খবরকে জানান, বদরীর বিষয়টি দেখে সাধারণ শাখা ও সংস্থাপন শাখা দেখে ।আমি বেশীদিন নাই । কয়েকমাস পর অবসরে চলে যাবো ।
এ ব্যাপারে চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের  সংস্থাপন শাখার প্রশাসনিক কর্মকর্তা  শাহআলম  গতকাল দৈনিক চাঁদপুর খবরকে জানান, জেলা প্রশাসনে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেনীর ৯০জনের মত স্টাফ রয়েছে ।তিন বছরের বেশী সময় অনেক স্টাফই আছে ।
নবাগত  জেলা প্রশাসক স্যার চাইলে বদলীর ফাইল প্রেসেস করবো ।
চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের সংস্থাপন শাখার  মাধ্যমে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তালিকা দেখে (বর্তমান পদে যোগদান তারিখ দেখে )রদবদল  করার দাবী করেছে নাগরিক সমাজ ।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর বিকেলে চাঁদপুরের নবাগত  জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মহসীন উদ্দিনের  সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময় অনুষ্ঠানে প্রশাসনিক সংস্কারের অংশ হিসেবে চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের অধীন জেলা প্রশাসনের কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রদবদল দাবী জানানো হয়েছে ।
রবদবল করা হলে  জেলা প্রশাসনে কাজের গতিশীলতা বাড়বে ।  সাংবাদিকদের পক্ষে এ দাবী জানানো হয় ।

সম্পর্কিত খবর