বিশেষ প্রতিনিধি : চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে ছেলের কোপে প্রাণ হারায় বাবা। মূলত ছেলের বউকে বকাঝকা করায় ক্ষিপ্ত হয়ে এ লোমহর্ষক ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানা যায়। ঘটনাটি ১২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন ৮নং ওয়ার্ড টোরগড় সরকার বাড়ীতে ঘটেছে।
স্থানীয়রা জানান, গত বুধবার গভীর রাতে আকতার হোসেন (৫৫) তার ছেলে সাকিবের (২৪) স্ত্রীকে বকাঝকা করে। এ ঘটনার পর পরই ক্ষিপ্ত হয়ে সাকিব তার বাবাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ২টি কোপ দেয়। পরবর্তীতে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক কুমিল্লা রেফার করে। কুমিল্লা নেয়ার পথে আকতার হোসেন মৃত্যুবরণ করেন।
সড়ক দর্ঘটনায় আহত হয়ে মৃত্যুবরণ করার কথা বলে গোপনে ভোরে মৃতদেহ দাফন করার প্রস্তুতি নেয় পরিবারের সদস্যরা। পুলিশ সংবাদ পেয়ে সকালে মৃতদেহ থানায় নিয়ে আসে।
রই মধ্যে ছেলের বউ (সাকিবের স্ত্রী ফারহানা) তার বাবার বাড়িতে বেড়াতে যায়। তারপর থেকে ছেলে নিজ বাড়ি ও শ্বশুরবাড়িতে থাকা শুরু করে।’
তিনি আরো বলেন, ‘গতকাল বুধবার রাতে ফের বাবা-ছেলের সাথে ঝড়গা হলেও পরে আবার থেমে যায়। এর পরে আমি আমার আত্মীয়কে দেখতে বাজারস্থ একটি হাসপাতালে যাই। রাত ১২টার দিকে আমার শাশুড়ি, আমার অন্য ছেলেরা ও মেয়েরা ঘুমিয়ে ছিল।
হঠাৎ করে আমার স্বামীর চিৎকার শুনে তারা ঘুম থেকে জেগে উঠে দেখে সাকিব ঘর থেকে বের হয়ে যাচ্ছে। পরে তারা তাদের বাবাকে (আকতার হোসেন) নিয়ে হাসপাতাল চলে যায় সেখান থেকে কুমিল্লা নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। ছেলে যখন বাবাকে কুপিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যায় তা দেখেছে আমার মেয়ে। মেয়েই ফোন করে তাড়াতাড়ি বাড়িতে আসতে আমাকে জানায়। এ ঘটনায় আমার ছেলের বউ (ফারহানা) জড়িত। সে আমার ছেলের মাথা খারাপ করে ফেলেছে। আমি আমার স্বামী হত্যায় ছেলে ও ছেলের বউয়ের বিচার চাই।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. গোলাম মাওলা নঈম জানান, আহত আকতার হোসেনের শারিরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কুমিল্লায় রেপার করা হয়। পরে শুনেছি কুমিল্লা নেওয়ার পথে তিনি অ্যাম্বুলেন্সে মারা যান।
স্থানীয়রা জানান, আকতার সরকারের ছেলে সাকিব প্রেম করে বিয়ে করে ফারহানা নামের নামের এক মেয়েকে বিয়েতে সম্মতি ছিলোনা পরিবারের। এ নিয়ে প্রায় পরিবারের সদস্যদের সাথে ঝগড়া বিবাদ লেগে থাকতো। মূলত: এ ঘটনাকে ঘিরেই ঘটে এ নির্মম হত্যাকাণ্ড।
হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আবদুর রশিদ বলেন, ‘নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে আমরা জানতে পেরেছি পারিবারিক কলহের জেরে এই হত্যাকাণ্ড।’