চাঁদপুর খবর রির্পোট : চাঁদপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে ছাত্র নাগরিক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ বিকাল সাড়ে তিনটার সময় চাঁদপুর হাসান আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে
গণঅভ্যুত্থানের প্রেরণায় শহীদ পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ এবং দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে এ সভার আয়োজনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আয়োজিত এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আব্দুল কাদের। এতে বক্তব্য রাখেন অন্যতম কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সুমাইয়া আক্তার, হামজা মাহবুব, মো. মহিউদ্দিন, আলী আহমেদ আরাফ, খালেদ হাসান, তাসনিয়া নাওরীন ও জিয়া উদ্দিন আয়ান।
চাঁদপুরের সমন্বয়ক নাদিম পাটওয়ারী, জোবায়ের হোসেন, আব্দুল রহমান, হাসান মাহমুদসহ অন্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন শহীদ পরিবারের সদস্য বৃন্দ, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীবৃন্দ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আবদুল কাদের তাঁর বক্তব্যে বলেছেন, ছাত্র-জনতা গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশকে ফ্যাসিবাদ মুক্ত করেছিলেন। আমাদের অর্ধেক দায়িত্ব পালন হয়েছে। আমাদের বাকি দায়িত্ব অর্থাৎ যে দায়িত্বের স্বপ্ন নিয়ে আমাদের ভাইয়ের শহীদ হয়েছে, আমাদের অসংখ্য ভাই হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছে। যারা স্বপ্ন দেখেছিল এদেশ একদিন ফ্যাসিবাদমুক্ত হবে। এদেশে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত হবে। এদেশের সরকার হবে জনতার সরকার। মানুষের বাক স্বাধীনতা থাকবে। এদেশের পুলিশ প্রশাসন কোন সরকারের পেটুয়া বাহিনী হিসেবে কাজ করবে না। এদেশের মানুষের বিচার বিভাগের প্রতি আস্তা থাকবে। এসব স্বপ্ন নিয়ে আমাদের যে ভাইয়েরা শহীদ হয়েছেন, তার ধারবাহিকতা আমাদের রক্ষা করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আমরা আগেও বলেছি আন্দোলন ও দেশ রক্ষার সময় নিজেদের মধ্যে ভেদাবেদ সৃষ্টি করিনাই। কখনো ভাবিনি দেশ স্বাধীন হলে আমরা কি পাব। ভেবেছি দেশ স্বাধীন হলে আমি কথা বলতে পারব। আমার মা, বোন, ভাই শান্তিতে ঘরে বসবাস করতে পারবে। তারা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে।
সমন্বয়ক কাদের বলেন, আপনারা দেখেছেন নোয়খালীতে ভিন্ন মতের লোককে ভোট দেয়ার কারণে তৎকালীন সরকারি দলের বাহিনী কিভাবে গণধর্ষণ করেছিলো। আমরা শুধুমাত্র ধৈর্য্য ধরেছিলাম। আমরা সুযোগ পেয়েছি এবং সেটার জবাব দিয়েছি। আমাদের লক্ষ্য শুধুমাত্র ফ্যাসিবাদি হাসিনাকে বিতাড়িত করা নয়, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে তারা যে ফ্যাসিবাদি কাঠামো তৈরী করেছে, তা ভেঙে চুরমার করে দেয়া।
অন্যান্য সমন্বয়করা তাদের বক্তব্য বলেন,কোন ধরনের ফ্যাসিবাদকে বাংলাদেশে অবস্থান নিতে দেয়া হবে না। এই বাংলার ছাত্রসমাজ সকল অত্যাচার অনাচার কে অস্বীকার করছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যত শহিদ হয়েছে। প্রত্যেক শহীদের প্রত্যেক আহত ব্যক্তির রক্তের প্রতিটি ফোটার বিচার এই বাংলার মাটিতে হবে। এই বাংলার মাটিতে শেখ হাসিনাকে সেই দিল্লি থেকে টেনে নিয়ে আসবো এবং ফাঁসির দড়িতে ঝুলানো হবে ।
সমন্বয়করা আরো বলেন, আমরা একটি স্বাধীন বাংলাদেশ চাই, যে বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদি কাঠামো, ফ্যাসিবাদি ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দাঁড়াতে পারবে না। আমরা কাঠামোগত পদ্ধতিতে চলতে চাই। যেখানে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার নিশ্চিত হবে। যেখানে মানুষের ভোটাধিকার থাকবে এবং যে যার মত করে মতামত প্রকাশ করতে পারবে।
ছাত্রদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সাংগ্রামী বন্ধুরা আপনারা মানুষদেরকে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। আমি যখন শহীদ ভাইয়ের কবরের কাছে দাঁড়াই, আমি প্রতিবার নতুন করে শপথ করি, আপরা যে দায়িত্ব আমাদের কাদে দিয়েগেছেন, সে দায়িত্ব আমরা নিষ্ঠার সাথে পালন করবো। বার বার আমি শপথ করছি । আপনারাও শপথ করুন যে স্বপ্ন নিয়ে আমাদের ভাইয়েরা আমাদের ওপর দায়িত্ব দিয়েগেছে, সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন না হওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকবো। নিজেদের মধ্যে দলাদলি এবং বিশৃঙ্খলা করবো না।