স্টাফ রিপোর্টার : চাঁদপুর সদর উপজেলার ফরক্কাবাদ ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে ভাঙচুর করে তাঁর কার্যালয় ও কলেজের ফটকে তালা দিয়েছেন একদল শিক্ষার্থী। এতে এক সপ্তাহের জন্য কলেজের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কলেজের শিক্ষকেরা একটি সমঝোতায় এলে সোমবার কলেজের কার্যক্রম শুরু হয়। তবে অধ্যক্ষ এখনো কলেজে প্রবেশ করতে পারেননি।
শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকার পরিবর্তনের পর সদর ফরক্কাবাদ ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিলীপ চন্দ্র দাসের পদত্যাগ চেয়ে প্রাক্তন ও বর্তমান একদল শিক্ষার্থী ৩ সেপ্টেম্বর কলেজে ও অধ্যক্ষের কক্ষে তালা দেন। এ সময় তাঁরা অধ্যক্ষের কক্ষে ভাঙচুর চালান। একপর্যায়ে কলেজের প্রধান ফটকে ও অধ্যক্ষের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। এতে কলেজের শিক্ষাকার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। পরে গত রোববার দুপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী ও কলেজশিক্ষকদের মধ্যে আলোচনার পর কলেজের ফটকের তালা খুলে দেওয়া হয়। তবে অধ্যক্ষের বিষয়ে কোনো সমাধান হয়নি।
কলেজের কয়েকজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিক্ষুব্ধ ছাত্রদের বেশির ভাগ দাবি ইতিমধ্যে পূরণ হয়েছে। তবে তাঁরা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিলীপ চন্দ্র দাসের পদত্যাগ চেয়ে নিজেদের পছন্দমতো অধ্যক্ষ দেওয়ার দাবি করে যাচ্ছেন। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কলেজে না থাকায় এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া যাচ্ছে না।
কলেজের সভাপতি চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাখাওয়াত জামিল বলেন, ‘ফরক্কাবাদ ডিগ্রি কলেজে ভাঙচুর বিষয়টি আমি জানি না। তবে কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে কলেজে নতুন অধ্যক্ষ বসানো নিয়ে নানা মত রয়েছে বলে আমরা অবহিত হয়েছি। আমরা বিষয়টি জানার পর জেলা প্রাণী ও পশুসম্পদ কর্মকর্তাকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। পরবর্তী সময়ে তাদের রিপোর্ট ও সরকারি নতুন বিধিমালা অনুযায়ী অধ্যক্ষের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে।’
এদিকে কলেজের পাশেই ফরক্কাবাদ উচ্চবিদ্যালয়ে ৬ আগস্ট থেকে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে তালা ঝুলে আছে। সরকার পতনের পর থেকে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে আসছে শিক্ষার্থীরা। এ কারণে প্রধান শিক্ষক তাঁর কক্ষে তালা ঝুলিয়ে বিদ্যালয়ে আসছেন না। এতে বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে আছে।
বিদ্যালয়টিতে ৩০ থেকে ৩৫ জন শিক্ষক-কর্মচারী আছেন। প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয় না আসায় তাঁদের বেতন দেওয়াও সম্ভব হচ্ছে না। এ ছাড়া পরীক্ষার নম্বরপত্র প্রধান শিক্ষকের কাছে থাকায় বিপাকে আছেন এসএসসি পাস করা অনেক পরীক্ষার্থী।
ফরক্কাবাদ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইলিয়াস মিয়া বলেন, ‘আমি অসুস্থতার কারণে ২০ আগস্ট থেকে ছুটিতে আছি। বর্তমানে চিকিৎসাধীন। প্রথমে আমি ১৪ দিনের ছুটি নিয়েছিলাম, শারীরিক সুস্থতা বোধ না হওয়ায় পুনরায় ১৪ দিনের ছুটিতে আছি আমি।
আমার ছুটির দরখাস্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে জমা দিয়েছি। বিদ্যালয়ে আমার কক্ষে কিছু ছাত্র-ছাত্রীর রেজাল্ট শিট আছে। আমার সহকারী প্রধান শিক্ষকের মাধ্যমে তা দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।’