চট্র্রগ্রাম-চাঁদপুর রেলপথে ২টি ট্রেন চলাচলের সিদ্ধান্ত

বিশেষ প্রতিনিধি : জাতীয়,স্থানীয় ও জাতীয় অনলাইনে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন মিডিয়ায় যাত্রীদের হয়রানি কথা চিন্তা করে পত্র-পত্রিকায় রিপোট প্রকাশ করায় রেলওয়ে বিভাগের কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হয় এবং তারা নড়েচড়ে বসেছে।

চাঁদপুর-চট্রগ্রামের মধ্যে চলাচলকারী বিগত সময়ের ১১টি ট্রেনের মধ্যে ২টি ট্রেন চলাচলের সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে বিভাগ।

বুধবার(২৮ আগস্ট) দুপুরে এক তার বার্তার মাধ্যমে চট্রগ্রাম বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (ডিটিও/চট্রপ্রাম) মো: আনিছুর রহমান চাঁদপুর স্টেশন মাস্টারের কাছে এ নির্দেশ প্রদান পূর্বক এ মেঘনা এক্রপ্রেস ট্রেন চলাচলের বিষয়টি আবগত করেছেন।
এ বিষয়টি এ প্রতিনিধিকে নিশ্চিত করেন, চাঁদপুর স্টেশনের দায়িত্বে থাকা (ভারপ্রাপ্ত) স্টেশন মাস্টার শোয়াইবুল শিকদার। তবে গতকাল বুধবার এ পথে চলাচলকারী যাত্রীর সংখ্যা বিগত সময়ের তুলনায় অনেক কম ছিল।

এদিকে চট্রগ্রাম থেকে বুধবার সকাল ৮টায় সাগরিকা ট্রেন ও বিকেল ৬ টায় তাৎক্ষনিক সিদ্ধান্তের আলোকে আন্ত:নগর মেঘনা এক্রপ্রেস চাঁদপুরের উর্দেশে ছেড়ে আসে বলে চাঁদপুর স্টেশন মাস্টার শোয়াইবুল শিকদার জানিয়েছেন। তিনি আরো জানান,এ পথে প্রতিদিন একমাত্র মেঘনা এক্রপ্রেস থেকে সরকার প্রায় ২লাখ টাকা রাজস্ব আয় পেত। চাঁদপুর-চট্রগ্রামের মধ্যে আসা ও যাওয়ায় ট্রেনটি প্রতিদিন প্রায় ৪লাখ টাকা রাজস্ব আয় করতো। গত এক সপ্তাহ ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় সরকার প্রায় ২৮ লাখ টাকা রাজস্ব হারিয়েছে।

এদিকে চাঁদপুর স্টেশন সূত্রে জানা গেছে,গত (২২ আগস্ট) থেকে (২৭ আগস্ট) পর্যন্ত চাঁদপুর-চট্রগ্রাম রেলপথে মেঘনা এক্রপ্রেস ট্রেনটি চলাচল না করায় সরকারের বিরাট অংকের কোটি টাকার মত রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে। অন্যদিকে দেখা যায় এক সপ্তাহ যাবত ট্রেন চলাচল না’করলেও এ এক সপ্তাহের জন্য এ পথের যাত্রীরা অগ্রিম টিকেট ক্রয় করে। সে অগ্রিম টিকেটের মূল্য লক্ষ লক্ষ টাকা স্টেশন কর্তৃপক্ষ যাত্রীদেরকে ফেরত দেওয়ায় সরকারের কয়েক লাখ টাকা রাজস্ব ক্ষতি গুনতে হয়েছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের চট্রগ্রাম বিভাগীয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে রেলওয়ে বিভাগের প্রধান কার্যালয় মহা-পরিচালকের দপ্তর থেকে ২টি ট্রেন চলাচলের আদেশ প্রদান করেছেন। সে মতে বর্তমান এ সময় যে দুইটি ট্রেন চলাচল করবে,সেগুলো হচ্ছে, সাগরিকা এক্রপ্রেস ও আন্ত:নগর মেঘনা এক্রপ্রেস।

আজ বুধবার সকাল ৮টায় চট্রগ্রাম থেকে সাগরিকা এক্রপ্রেস ট্রেন ও বিকেল ৬টায় আন্ত:নগর মেঘনা এক্রপ্রেস ট্রেন চাঁদপুরের উর্দেশে ছেড়ে যায়। এ ২টি ট্রেনের মধ্যে বুধবার দুপুর ২টা ২০মিনিটে সাগরিকা এক্রপ্রেস চাঁদপুর থেকে ছেড়ে আসে এবং আন্ত:নগর মেঘনা এক্রপ্রেস রাতে চাঁদপুর পৌছে পরদিন বৃহস্পতিবার সকাল ৫টায় চাঁদপুর থেকে চট্রগ্রামের উর্দেশে ছেড়ে আসবে।

এ ২টি ট্রেন চলাচলের মধ্যদিয়ে এ পথের যাত্রীদের চাহিদা ও হয়রানি কিছুটা হলেও লাগব হবে বলে এ পথে চলাচলকারী ভুক্তভোগী যাত্রীদের সাথে আলোচনায় জানা গেছে। তবে চাঁদপুর থেকে চট্রগ্রাম ও চট্রগ্রাম থেকে চাঁদপুরের এ পথে নিত্যদিন চলাচলকারী যাত্রীরা ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় চরম দূর্ভোগ ও মারাত্বক উৎকন্ঠার মধ্যে থাকতে হয়েছে।

চট্রগ্রাম থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়তের জন্য কয়েকটি লাইন পূর্বে ব্যবহার হলেও এখন মাত্র ২টি লাইন সচল করে ট্রেন চলাচলের উপযুক্ত করেছেন বলে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। রেলওয়ে স্টেশন সুত্রে জানা গেছে, এ পথের শত-শত যাত্রী ১১টি ট্রেনে চলাচল করে তাদের চাহিদা পূরন হতো না। এরই মধ্যে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এ পথের রেললাইনের বিরাট অংকের প্রায় ২শ’২০কোটি টাকার রাজস্ব ব্যয় করে রেলপথ সংস্কার করলেও এ চাঁদপুর-চট্রগ্রাম ও সিলেটের পথে চলাচলের জন্য কোন ট্রেন বাড়ায়নি বা বরাদ্ধ দেননি।

এ পথের হাজার হাজার যাত্রী এ পথের ট্রেনের মধ্যে ২টি ট্রেনের উপর দীর্ঘ বছর নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। এ পথের যাত্রীদের মধ্যে বেশীর ভাগ যাত্রী দক্ষিনঞ্চলীয় এলাকার। তাদের এক মাত্র যাতায়তের মাধ্যম হচ্ছে,বরিশাল,খুলনা,ভোলাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে তারা নদী পথে চাঁদপুর এসে সেখান থেকে ট্রেনের মাধ্যমে চট্রগ্রাম যেতে হয়। গত এক সপ্তাহ ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় ঢাকা থেকে যাত্রীবাহি লঞ্চ চাঁদপুর নৌ-টার্মিনালে এসে ট্রেনের যাত্রী না পেয়ে তারা খালি অবস্থায় তাদের গন্তব্যের যেতে হয়েছে। এতে ঢাকা-চাঁদপুর-বরিশাল ও খুরনার যাত্রীবাহি লঞ্চ গুলো প্রতিদিন লোকশানর গুনতে হয়েছে বলে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ জানান।

এদিকে প্রতিদিনের ন্যায় আন্ত:নগর মেঘনা এক্রপ্রেস ট্রেন চাঁদপুর-চট্রগ্রামের মধ্যে চলাচল করলেও চট্রগ্রাম-লাকসাম রেলপথের বিভিন্ন স্থানে রেলপথ পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় গত বৃহস্পতিবার(২২ আগস্ট) বিকেল ৬টায় থেকে (২৭ আগস্ট) পর্যন্ত চট্রগ্রাম থেকে চাঁদপুরের উদ্দের্শে আন্ত:নগর মেঘনা এক্রপ্রেস ট্রেন ছেড়ে আসেনি।

উল্লেখ্য,চাঁদপুর-চট্রগ্রাম ও চট্রগ্রাম-চাঁদপুরের মধ্যে এর পূর্বেও গত ১৮ জুন থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় র্দীঘ দিন ট্রেনে দূর্বৃত্তের হামলা ও নাশকতার আশংকায় এ পথের ২টি ট্রেন বন্ধ রেখেছিল রেলওয়ে বিভাগ। বিগগ জুন মাসে ও আগস্ট মাসে ৭দিন এ পথে ২টি ট্রেন চলাচলর বন্ধ থাকায় সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাতে হয়েছে বলে রেলওয়ের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে।

সম্পর্কিত খবর