চাঁদপুর খবর রির্পোট: ভারি বর্ষণে ভয়াবহ জলাবদ্ধতার শিকার হয়েছে চাঁদপুর সেচ প্রকল্প। এতে ভেসে গেছে শত শত খামারের মাছ, ডুবে গেছে গ্রাম্য সড়ক। ফলে দুর্ভোগে পড়েছে প্রকল্প অভ্যন্তরের ছয়টি উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ। দ্রুত সময়ের মধ্যে জলাবদ্ধতা দূর করা না গেলে ভোগান্তি বাড়বে এসব মানুষের।
তবে প্রকল্পের বেড়িবাঁধের বাইরে নদীতে পানির উচ্চতা বেশি। তাই পানি নিষ্কাশনে কিছুটা সময় লাগছে। জানালেন সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। এমন পরিস্থিতিতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষজন।
এরই মধ্যে ভেঙে পড়েছে পল্লী বিদ্যুতের স্বাভাবিক কার্যক্রম। উঁচু জায়গার বসতবাড়ি আর মূল সড়ক রক্ষা পেলেও ভারি বর্ষণে ডুবে গেছে অন্য সব কিছু। গ্রাম্য সড়ক কিংবা সেচ খালের রিং বাঁধ। সবই এখন পানির নিচে।ফলে একাকার হয়ে গেছে বিস্তীর্ণ জনপদ। বিল, ঝিল আর বিভিন্ন জলাশয়ে খামারের মাছ ভেসে গেছে। জলমগ্ন হয়ে পড়েছে মুরগির অসংখ্য খামার। চাঁদপুর সদরের বাগাদী, ফরিদগঞ্জে ধানুয়া, গাজীপুর, কেরোয়া, মিরপুর, শাহাপুর, সাফুয়া, লক্ষ্মীপুরের রায়পুর, কেরোয়া এমন আরো অর্ধশত গ্রামের সেই একই চিত্র।
চাঁদপুরের বিশিষ্ট সমাজসেবক, নানুপুর গ্রামের বাসিন্দা আলমগীর আলম জুয়েল জানান, প্রকল্প এলাকার মানুষের দুর্ভোগ এবং ক্ষয়ক্ষতি কমাতে এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
সাংবাদিক ও সংগঠক নুরুন্নবী নোমান জানান, অপরিকল্পিত রাস্তাঘাট, বসতবাড়িসহ নানা স্থাপনা নির্মাণের কারণে সহজেই পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। এতে ভারি বৃষ্টিতে এমন জলাবদ্ধতার শিকার।
এদিকে পরিস্থিতি সামাল দিতে নানা উদ্যোগের কথা জানান পানি উন্নয়ন বোর্ড, চাঁদপুর সেচ প্রকল্প (যান্ত্রিক) উপবিভাগীয় প্রকৌশলী শরীফ হোসেন।
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটছে। তার পরও স্লুইচ গেটের পাম্প চালু রেখে দিন-রাত কাজ চলছে। তবে নতুন করে বৃষ্টিপাত না হলে দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে। পল্লী বিদ্যুতের ফরিদগঞ্জ জোনাল অফিস ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, বৃষ্টিতে ঝোড়ো হাওয়ার কারণে বেশ কয়েকটি এলাকায় গাছপালা ভেঙে পড়েছে। তাই কিছু কিছু স্থানে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
গাছপালা অপসারণ করে লাইন মেরামতের কাজ চলমান রয়েছে, আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাবে।’
ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মৌলি মণ্ডল বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে পানি প্লাবিত হওয়ায় উপজেলার বিভিন্ন মানুষের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জেনে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করব।’
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে কথা হয়েছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।