স্টাফ রিপোটার: চাঁদপুর সদরে পূর্ব শত্রুতার জেরে বিদ্যালয়ে প্রবেশের পথে প্রধান শিক্ষক মোঃ শাখাওয়াত হোসেন পাটওয়ারী উপর হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে যুবলীগ নেতা সাঈদ উজ্জামান পাটওয়ারী।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক গুরুতর আহত হয়ে প্রাথমিত চিকিৎসা নিয়ে বাসায় চিকিৎসাধীন আছেন।
ভুক্তভোগী মোঃ শাখাওয়াত হোসেন পাটওয়ারী চাঁদপুর সদর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী এম এম নুরুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তার গ্রামের জেলার কচুয়া উপজেলার রহিমানগর এলাকায়।এ ঘটনায় বিচারের দাবীতে আশিকাটি এলাকায় নিন্দার ঝড় বইছে । অবিলম্বে অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা সাঈদ উজ্জামান পাটওয়ারীকে গ্রেফতারের দাবী উঠেছে ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৭ আগস্ট সকালে ওই স্কুল শিক্ষক চাঁদপুর শহরের বাসা থেকে স্কুলের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে সোয়া ১০টার দিকে স্কুলের সামনে নামেন। এসময় ওৎ পেতে থাকা চাঁদপুর সদর উপজেলার ৪নং শাহমাহমুদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও বিদ্যালয়ের পাঠ টইম বহিষ্কৃত শিক্ষক সাইদ উজ্জামান পাটওয়ারী ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষকের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। কিছু বুঝে উঠার আগেই হামলার শিকার শাখাওয়াত হোসেন পাটওয়ারী মাটিতে লুটিয়ে পড়লে স্থানীয়রা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে বিদ্যালয়ের ভিতরে নিয়ে যান। এই সময় ক্ষিপ্ত হয়ে সাঈদ উজ্জামান বিদ্যালয়ের গেইটে হামলার চেষ্টা চালায় এবং প্রধান শিক্ষককে উদ্দেশ্য করে বিভিন্ন ভাষায় গালমন্দ করে।
ঘটনাটি এলাকার সর্বমহলে ছড়িয়ে পড়লে তীব্র নিন্দা জানানো হয়। পরে গত ৮ আগস্ট বিকালে স্থানীরা বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয়ে বসলে অভিযুক্ত শিক্ষক সাঈদ উজ্জামান প্রধান শিক্ষকের উপর আরো চড়াও হয়ে যায় বলে জানা যায়।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত সাড়ে ৪ বছর পূর্বে এম এম নুরুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ে খন্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে চাকরি নেন চাঁদপুর সদর উপজেলার মহামায়া হানাফিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্দুল বারেক পাটওয়ারীর ছেলে সাঈদ উজ্জামান পাটওয়ারী। ঐ সময় বিদ্যালয়ের ১০ শ্রেনীর একজন ছাত্রীকে জোড় পূর্বক উত্যক্ত করার অপরাধে বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি মরহুম এম এম নুরুল হকসহ ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্তক্রমে তাকে চাকুরি থেকে বহিষ্কার করা হয়। সেই শত্রুতার জের ধরে শেখ হাসিনা সরকার পদত্যাগের পরদিন সকালেই এ হামলা চালায় ঐ অভিযুক্ত শিক্ষক।
অভিযুক্ত শিক্ষক সাইদ উজ্জাজমান বর্তমানে নিজেকে বিএনপি সমর্থিত বলে দাবী করে এ হামলা চালায় একজন প্রধান শিক্ষকের ওপর। অথচ তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি ঘুরে দেখা যায় তিনি চাঁদপুর-৩ আসনের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি সহ শেখ হাসিনা ও চাঁদপুর পৌর মেয়র এ্যাড. জিল্লুর রহমান জুয়েল সহ বিভিন্ন আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের সাথে ছবি তোলা। তিনি একই উপজেলার শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের কেতুয়া এলাকার পাটওয়ারী বাড়ির বাসিন্দা। তার বড় ভাইয়েরা কেউ কেউ বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক সাখাওয়াত হোসেন পাটওয়ারী মোবাইল ফোনে কান্নাকন্ঠে বলেন বিদ্যালয়ের সামনে আমার উপর সে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে যে হামলা চালিয়েছে ,তাতে আমি খুবই লজ্জিত ও মর্মাহত। আমি গলায় ফাঁস দিয়ে মরা মরা ছাড়া আমরা আর কোন উপায় নাই। আমি কাউকে আর আমার মুখ দেখাতে চাই বরে ফোনটা কেটে দেন। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে পরে মিমাংসার চেষ্টা করে । কিন্তু আমার মানসম্মান সব গেছে । আমি সুবিচার চাই । নিরাপত্তা চাই ।
এই বিষয়ে নিয়ে বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও বর্তমান শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা অভিযুক্ত শিক্ষক সাঈদ উজ্জামানের কঠিন শাস্তি চেয়ে ফেসবুকে বিভিন্ন স্ট্যাটাস দেন।
অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা সাইদ উজ্জামান পাটওয়ারীর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।