চাঁদপুরে ২৪ ঘন্টায় ১০৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড : শহরের বিভিন্ন এলাকায় হাঁটু পানি

শওকত আলী: চাঁদপুর শহরের প্রধান প্রধান সড়কের কয়েকটি স্থানে,শহরের প্রান কেন্দ্রে, শহরের অধিকাংশ এলাকা,শহরতলীর বিভিন্ন এলাকা দীর্ঘ কয়েক দিনের মূষলধারে চলমান বৃষ্টিপাতের ফলে তলিয়ে গিয়ে সাধারন মানুষের চলাচলে মারাত্বক বিগ্ন সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে মানুষের দূর্ভোগ সৃষ্টি হয়ে তারা দিনাতিপাত করছে মারাত্বক কষ্ট শিকার করে। এ ছাড়া যানবাহন চলাচলেও মারাত্বক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। পৌর কর্তৃপক্ষ এ আটকা পড়া পানি নিস্কাশনের কোন রুপ ব্যবস্থা গ্রহন করতে দেখা যাচ্ছেনা।

এদিকে সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে গত বুধবার দুপুর থেকেই চাঁদপুরে শুরু হয়েছে মুষলধারে বৃষ্টি। এরপর থেকে থেমে বৃষ্টি অব্যাহত। বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) সকাল ৯টা থেকে শুক্রবার (২ আগস্ট) বিকেণ ৫টা পর্যন্ত জেলায় বৃষ্টি হয়েছে ১০৯ মিলিমিটার।

শুক্রবার (২ আগস্ট) বিকেল ৬টায় এসব তথ্য জানান চাঁদপুর আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক শাহ মুহাম্মদ শোয়েব এসব তথ্য জানান।
এ টানা বৃষ্টিতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকেছে। আবার পৌর এলাকার ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় মসজিদ-মাদ্রাসাসহ অর্ধশতাধিক বাসাবাড়িতেও পানি ঢুকেছে বলে জানা গেছে। এতে করে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন শহরবাসী।

এদিকে টানা দুই দিনের ভারি বৃষ্টির কারণে চাঁদপুর শহরের বেশ কয়েকটি সড়ক পানিতে তলিয়েগেছে। বিশেষ করে আবাসিক এলাকার সড়কগুলোর অবস্থা বেহাল। স্থানীয় বাসিন্দাদের অসচেতনতার কারণে ড্রেনের মধ্যে ময়লা আবর্জনা জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।

শহরের নাজির পাড়া, মাদ্রাসা রোড, পালপাড়া, নিউ ট্রাক রোড, রহমতপুর আবাসিক এলাকায় টানা বৃষ্টিপাতে সড়কে পানি জমে আছে। বৃষ্টি কমলে পানি কিছুটা হ্রাস পায়। আবার বৃষ্টি হলে একই অবস্থা।

আজ সকাল ১০টা থেকে ১১টার পরে নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্যের দোকানগুলো খুলেছে। প্রয়োজন ছাড়া লোকজন বাসা থেকে বের হয়নি। বৃষ্টির কারণে দিন মজুর ও শ্রমিকদেরও কাজ বন্ধ হয়ে আছে।

শহরের পুরাণ বাজারের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবারে অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে। তবে বৃষ্টির কারণে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের অনেক দোকান দেরিতে খুলেছে। যারা নির্মাণ শ্রমিক তারাও কাজে যেতে পারেনি।

শহরের মাদ্রাসা রোডের বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে আমাদের সড়কে পানি। এখন পর্যন্ত একই অবস্থা। একটু পানি কমলেও বৃষ্টিতে আবারও একই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। মসজিদ ও বাসা বাড়িতেও পানি উঠেগেছে। পানি গড়িয়ে নামলেও কমছে না। বর্ষা মৌসুমের কারণে আবার নদীতেও এখন পানি ভরপুর।

শহরের রহমতপুর আবাসিক এলাকাল বাসিন্দা ফরিদ আহমেদ বাবু বলেন, টানা বৃষ্টিতে আমাদের এলাকার সড়ক ডুবে যায়। তবে সকালে কিছুটা পানি কমেছে।

সদর উপজেলার রামপুর এলাকার বাসিন্দা ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমাদের এলাকায় সড়কে পানি উঠেনি। কারণ ডাকাতিয়া নদী পাশে থাকায় পানি নেমে যায়। তবে বৃষ্টির কারণে লোকজন ঘর থেকে বের হতে পারছে না।

চাঁদপুর আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক শাহ মুহাম্মদ শোয়েব বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা হতে রাত ৯টা পর্যন্ত চাঁদপুরে ৪৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। সন্ধ্যার পরে বৃষ্টিপাত কিছুটা কম হলেও মধ্যরাত থেকে আবার বেড়েছে। বিশেষ করে আজ শুক্রবার ভোর থেকে বৃষ্টির পরিমাণ বেড়ে যায় এবং এ পর্যায়ে বিকেণ ৫টা পর্যন্ত জেলায় বৃষ্টি হয়েছে ১০৯ মিলিমিটার। এখন পর্যন্ত বৃষ্টি অব্যাহত গতিতে চলছে।

চাঁদপুর লঞ্চঘাটের দায়িত্বরত ট্র্যাফিক পরির্দশক (টিআই) মো. শাহ্ আলম জানান, টানা বৃষ্টি হচ্ছে। তবে চাঁদপুর-ঢাকা নৌ পথের সব ধরণের লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক চলছে ।

সম্পর্কিত খবর