মতলব উত্তরে পাঁচআনি উ’বিতে চলছে প্রধান শিক্ষকের রমরমা কোচিং বাণিজ্য!

স্টাফ রিপোর্টার : প্রধান শিক্ষকের নেতৃত্বে স্কুলের একাডেমিক ভবনেই চলছে রমরমা কোচিং বাণিজ্য। সরকারি নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে দীর্ঘদিন যাবৎ এই কোচিং বাণিজ্য চলছে মতলব উত্তরের পাঁচানি উচ্চ বিদ্যালয়ে।

জানা যায়, শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের লোভ দেখিয়ে প্রধান শিক্ষক মো. কামরুজ্জামান, সহকারি শিক্ষক মো. শাহাদাত মো. মাহবুব প্রায় ১০০ ছাত্র-ছাত্রীদের কোচিং করাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার, রবিবার ও সোমবার সকালে সরজমিনে গেলে একাডেমিক ভবনে একযোগে ১ম ও ২য় তলায় কোচিং করানো হচ্ছে এবং সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে ক্লাসে ছাত্র-ছাত্রী রেখে শিক্ষক শাহাদাত মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যায়।

কোচিংয়ের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, ক্লাসে তো আর সব পড়ানো হয়না আবার কোচিংয়ে না পরলে স্যারেরা পরীক্ষায় ভালো নম্বর দেয় না। তাই বাধ্য হয়েই জনপ্রতি ৫শত টাকা বেতন দিয়ে সকালে কোচিং করতে হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন অভিভাবকরা অসন্তুষ্টি ও ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখার দাবিতে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. কামরুজ্জামান শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের লোভ দেখিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ চালাচ্ছেন এই কোচিং বাণিজ্য। ভালো ফলাফলের আসায় ও স্যারদের চাপাচাপিতে বাধ্য হয়েই স্কুল সময়ের বাইরে কোচিংয়ে পাঠাতে হচ্ছে তাদের ছেলে-মেয়েদের।

উপজেলার সচেতন মহল জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধ নীতিমালা ‘২০১২’ এর ১৩ অনুচ্ছেদের ‘ঙ’ ধারায় সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষক কোচিং বাণিজ্যে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে ‘সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধি ‘১৯৮৫’ এর অধীনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে বলে উল্লেখ থাকলেও নীতিমালার তোয়াক্কা করছেন না ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সহকারি শিক্ষকরা। কোচিং করলে শিক্ষকরা প্রশ্ন দিয়ে দেন, ফলে সবাই বেশ নম্বর পায়।

“যারা প্রশ্ন পায় না, তারা তো এত নম্বর তুলতে পারে না। কিন্তু এই শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হচ্ছে না, যারা কোচিংয়ে প্রশ্ন পেয়ে ভালো করছে তাদেরই ক্ষতি হবে। “এ ক্ষতিটা অপূরণীয়। শিক্ষকরা স্কুলকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বানাতে গিয়ে এ অপরাধটা করে যাচ্ছেন ও অভিভাবকদেরও বাড়তি টাকা গুণতে হচ্ছে”

এ ব্যাপারে পাঁচানি উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি এসএম মহসিন এর সাথে কথা বলার জন্য একাদিক বার মুঠোফোনে ফোন দিলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়, যার কারনে বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক কামরুজ্জামান এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সাথে আলোচনা করেই কোচিং করানো হচ্ছে। সরকারি নির্দেশনা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি প্রশ্ন এরিয়ে যান।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ উল্লাহ’র সাথে মুঠো ফোনে সরকারি নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে পাঁচানি স্কুলের একাডেমিক ভবনে কোচিং বানিজ্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) জানিয়েছেন মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন কারিকুলামে বিশেষ ক্লাসের নামে শিক্ষার্থীদের কোচিং করানো বা কোচিংয়ে বাধ্য করানো হলে প্রতিষ্ঠানপ্রধান ব্যক্তিগতভাবে দায়ী থাকবেন।

সম্পর্কিত খবর