ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ চাঁদপুর সরকারি কলেজে বুধবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুর ১২:০০টায় বাংলা বিভাগের আয়োজনে কলেজ কনফারেন্স কক্ষে “সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর ‘লালসালু’ উপন্যাস: নির্দিষ্ট সমাজকাঠামোর এক শাশ্বত জীবনবোধ” শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
বিভাগীয় প্রধান অমর চন্দ্র দাসের সভাপ্রধানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রভাষক ফাতেমা আক্তার। বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শরীফ মাহমুদ চিশতীর সঞ্চালনায় সেমিনারে মুখ্য আলোচক ছিলেন বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোঃ সাইদুজ্জামান।
প্রবন্ধের উপর আরো আলোচনা করেন শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মেহেদী হাসান, উপাধ্যক্ষ প্রফেসর শেখ মোঃ খলিলুর রহমান এবং অধ্যক্ষ প্রফেসর অসিত বরণ দাশ। সকল বক্তাই বর্তমান সমাজ-ব্যবস্থায় লালসালু উপন্যাসের অপরিহার্যতা তুলে ধরেন।
ফাতেমা আক্তার তার প্রবন্ধে দেখিয়েছেন ‘লালসালু’ উপন্যাসে কীভাবে ভণ্ড ধর্মব্যবসায়ী মজিদ প্রতারণার মাধ্যমে মহব্বতনগর গ্রামে নিজের অবস্থান সুদৃঢ় করে। নিরস্তিত্ব ও উদ্বাস্তু মজিদকে এজন্যে যে নেতিবাচক সত্তা অবলম্বন করতে হয়, তা তিনি চমৎকারভাবে উপস্থাপন করেন।
মুখ্য আলোচক মোঃ সাইদুজ্জামান বলেন, ‘শিকড়হীন, উন্মুলিত মজিদ শেকড়ের সন্ধানে সংগ্রাম করেছে প্রতিনিয়ত। শক্তি ও বুদ্ধি থাকা সত্ত্বেও দু’বেলা ভালোভাবে খেয়ে বাঁচবার চেষ্টায় যখন ব্যর্থ হয়েছে; তখনই আত্মনির্মিত পন্থা প্রতারণার আশ্রয় নেয় সে। এতে সফলতার মুখ দেখেছে, আবার পতন এবং তা থেকে উত্তরণের চেষ্টা। ধর্মকে পুঁজি করে মজিদ যে জাল বিস্তার করেছে তা কেবল মহব্বতনগর গ্রামেরই নয়, সমগ্র বাংলাদেশের চিত্র।
বর্তমান সময়ে মজিদের চেয়েও ভয়ংকর এবং স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি আমাদের সমাজে বিরাজমান- যারা মিথ্যা বুলি আওড়িয়ে সহজ-সরল মানুষদের নিয়ে প্রতিনিয়ত প্রতারণার জাল সৃষ্টি করছে।’
সেমিনার শেষে সভাপতি মহোদয় সকলকে এই প্রাণবন্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য ধন্যবাদ জানান এবং বাঙালির ঐতিহ্য পিঠাপুলি দিয়ে আপ্যায়ন করান।