চাঁদপুর খবর রির্পোট: আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও চাঁদপুর সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মো: নুরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান।
গতকাল ১৭জানুয়ারী (বুধবার) সদর উপজেলা চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে এক সাক্ষাৎকারে চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও চাঁদপুর সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মো: নুরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান বলেন, সামনে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হবে। বিগত দিনে আমি এবং আমার পরিবার রাজনৈতিভাবেই আওয়ামীলীগের সাথে জড়িত। আমি গত ১৯৬৯ থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতি শুরু করি।
১৯৭৬ থেকে আমার বাবার মৃত্যুর পর থেকে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি নির্বাচিত হই। ১৯৮৬সনে চাঁদপুর সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করি। এর পরে ১৯৯৬সন থেকে চাঁদপুর সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির দায়িত¦ এখনও পালন করে আসছি। এর ফাঁকে ফাঁকে আমি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলাম ২বার। উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ছিলাম এবং বর্তমানে চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এর দায়িত্ব পালন করে আসছি। আমার এ উপজেলা পরিষদের দায়িত্ব পালন চলাকালীন সময়ে ২টা বছর আমার করোনাকালীন কেটেছে।
এ সময়ে আমাদের এলাকার উন্নয়নে যথেষ্ট ব্যহত হয়েছে। আমি হয়ত মোটামোটি ৩বছর সময় পেয়েছি উপজেলা পরিষদের উন্নয়নের জন্য এবং আমার এ সময়ের ভিতরে উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন ইউনিয়নের সমস্যাগুলি আমরা অনেকগুলি সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানের চেষ্টা করেছি। মানুষের ছোট খাটো যে সমস্ত দাবী-দাওয়া ছিল সেগুলো পূরনের যথেষ্ট চেষ্টা করেছি।
তিনি বলেন, উপজেলা পরিষদে আমাদের চেয়ারম্যান এর বাসভবন থেকে উপজেলার সামনের যে সৌন্দর্য্য বর্ধন, সে সমস্ত কাজগুলি এখনও চলমান আছে। আমি উপজেলা পরিষদের মানুষের সেবা করার নিমিত্তে আগামী যে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হবে। যদি আমাকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা মনোনয়ন দেন তাহলে ইনশাল্লাহ আমি অবশ্যই মানুষের সেবা করার জন্য দায়িত¦ আবারও গ্রহন করতে রাজি আছি। আর আমার যে একটা সব সময় সমস্যা আপনারা জানেন যেটা আমার উপজেলা পরিষদের আইনগত সমস্যা বর্তমানে উপজেলা পরিষদের সাথে চাঁদপুর পৌরসভার ভোটার ১লক্ষ ২৬হাজারের বেশি ভোটার সম্পৃক্ত। এই ভোটাররা উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে ভোট দেয়, কিন্তু মেয়র কে উপজেলা পরিষদের মেম্বার রাখা হয়েছে। আমরা উপজেলা পরিষদের আইনে উপজেলা পরিষদ আমার ১৪ ইউনিয়নের মত এটাও একটা ইউনিট হিসেবে গন্য। কিন্তু দেখা যায় প্রচলিত আইনে বর্তমানে উপজেলা পরিষদের বরাদ্ধ গুলো আলাদা আসে।
পৌরসভার বরাদ্ধগুলো আলাদা থাকে এবং সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা এবং দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে সাহায্য সহযোগিতা প্রদান করা হয় সেটাতে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের কোন ভূমিকা থাকেনা। এ সমস্ত বয়স্কভাতা বিধবা ভাতা উপজেলা পরিষদের ১৪টি ইউনিয়নের উপজেলা চেয়ারম্যান কমিটির সভাপতি থাকেন। আবার পৌরসভার জেলা সদরে পৌর সমিতি এডিসি মহোদয়কে সভাপতি করে আরেকটা ভিন্ন কমিটি এবং শহর সমাজসেবা কর্মকর্তার মাধ্যমে পৌরসভার সমস্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়।
যে নাগরিকরা আমাকে ভোট দেয়, সে ভোটারদের কোন রকমের উপকার বা তাদেরকে কোন সাহায্য-সহযোগিতা করার আমার কোন সুযোগ নাই। কাজেই এ রকম একটা ঝামেলার ভিতরে পৌরসভাতে হয় অবাধে কাজ করার সুযোগ দেওয়া, তাদের মানুষের সেবা করার সুযোগ রাখা। অবশ্যই উচিত নির্বাচনের আগে আর নতুবা পৌর পরিষদকে আলাদা করে ১৪টি ইউনিয়নকে নিয়ে একটি উপজেলা পরিষদ গঠন হলে, আমার মনে হয় আমরা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা ভবিষ্যতে প্রশ্নের সম্মুখীন হই না। যেহেতু একটা লোক ভোট দিল, সে আইসা আমার কাছে কোন সাহায্য সহযোগিতা চাইলে, আমি আইনের বাধ্যবাধকতায় তার কোন উপকার করার সুযোগ নাই। আমি মনে করি আগামী উপজেলা পরিষদ নির্বাচন জেলা সদরে পৌরসভাকে যেভাবে সম্পৃক্ত রাখা হয়েছে। কোন কর্তৃত্ব ছাড়া পরিষদের চেয়ারম্যানের এই আইনের অবসান করে নির্বাচন দিলে ভালো হয়। এটা আমি নির্বাচিত হই বা আমার জায়গায় অন্য কেউ নির্বাচিত হউক।
সবাই জন্যই এ সমস্যাটা বিদ্যমান থাকবে। সরকারে কাছে আমার অনুরোধ থাকবে। আমাদের যাতে স্বচ্ছতা একটা জবাবদিহিতা থাকে, সে ব্যাপারে সরকার নির্বাচনের আগে সদয় দৃষ্টি রাখবেন। আর যেহেতু আমি একটা দল করি দলের দায়িত্বে আছি। আমি আমার মনোনয়ন চাইবো। মাননীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি আমাকে আবারও নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন দেন তাহলে আমি অবশ্যই নির্বাচন করব। আর যদি আমার বাইরে কোন সিদ্ধান্ত দেন, আর যদি দলীয় নির্দেশনা এমনই থাকে দলের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করা, সেখানে এ বৎসরের মত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উন্মুক্ত করে না দেওয়া হয়, তাহলে দলীয় নমিনেশন না পেলে যেহেতু দলের শৃঙ্খলে আমি আবদ্ধ, জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমি আস্থাশীল। কাজেই দল নমিনেশন না দিলে সেখানে আমার নির্বাচন করার কোন সুযোগ থাকবে না। আমি হয়ত আশা করি আমার অতীতের কার্যকলাপ, পারিবারিক ঐতিহ্য আমরা দীর্ঘদিন মানব সেবায় নিয়োজিত ছিলাম এবং এখনও আছি। আমি মনো করি জননেত্রী শেখ হাসিনা অবশ্যই আমার বিগত দিনের কর্মকান্ডের স্বীকৃতি তিনি অবশ্যই দিবেন।
নির্বাচন সম্পর্কে নাজিম দেওয়ান আরো বলেন, দলীয় মনোনয়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। সেই সাথে এলাকার মানুষের আঙ্খাকা। তারা কি চায় সেটার উপর অনেকটা নির্ভর করে। আমি প্রথমত চাইবো দলীয় মনোনয়ন পাওয়া, এর পরে যদি কোন কারনে দলীয় মনোনয়ন না পাই। সেটা পরবর্তী পর্যায়ে নির্ভর করে চাঁদপুর সদর উপজেলার মানুষের আঙ্খাকা কি, তারা আমাকে কতটুকু চায়, সেটার উপর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এখনই আগাম সে কথা বলা আমি মনে করি ঠিক হবে না।
নাজিম দেওয়ান বলেন-উপজেলা পরিষদের যে বরাদ্ধ এগুলো ক্ষুদ্র। আমাদের বৃহৎ প্রকল্প করার সুযোগটা খুব কম। আমাদের সাংসদ মন্ত্রী মহোদয় ডা: দীপু মনি উনার মাধ্যমে চাঁদপুরে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। আমরা এখন শুধু গ্রামীন রাস্তা-ঘাট, আমাদের অভ্যন্তরীন ছোট-খাটো যে সকল সমস্যা এগুলো আমরা অনেকটাই সমাধান করেছি। এরপরেও উন্নয়নের কোন শেষ নাই, মানুষের চাহিদা আছে, আমরা মানুষের চাহিদা মাফিক, আমাদের যে কাজগুলো এখনও বাকি আছে। আমি মনে করি যেহেতু আমি তাদের সাথে একাবারেই সরাসরি সম্পৃক্ত। তাদের তৃনমূলের ভোটেই আমি নির্বাচিত। তাদের সমস্যাগুলি আমার কাছে চিহ্নিত। আমি যদি পুনরায় নির্বাচিত হতে পারি। সবার সমস্যা আমার পক্ষে সমাধান করা সম্ভব হয়না ইতোপূর্বে।
আবারও যদি নির্বাচিত হতে পারি তাহলে ইনশাআল্লাহ আমার অসামাপ্ত কাজগুলি সমাপ্ত করে এ এলাকাকে এ চাঁদপুর সদর উপজেলাকে একটি মডেল উপজেলা এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভীষন গ্রাম হবে শহর। আমরা ইতিমধ্যে সে লক্ষে ৮০ভাগ পৌছে গেছি। আমি মনে করি যদি পুনরায় নির্বাচিত হতে পারি, তাহলে অবশ্যই সে লক্ষ শতভাগ পূরণ করতে পারবো।