মতলব দক্ষিন স্ব্যাস্থ্য কমপ্লেক্সে তীব্র শয্যা সংকট, ব্যাহত চিকিৎসা সেবা

মতলব প্রতিনিধি : মতলব দক্ষিণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তীব্র শয্যার সংকট চলছে। হাসপাতালের ওয়ার্ডগুলোও নির্ধারিত শয্যার চেয়ে অনেক বেশি রোগী প্রতিদিন ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। ওয়ার্ডের মেঝেতেও চলছে রোগীদের চিকিৎসা ও সেবা। এতে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কার্যালয় সূত্র জানায়, ৫০ শয্যা বিশিষ্ট এ স্ব্যাস্থ কমপ্লেক্সে প্রতিদিন গড়ে ৫০ থেকে ৬০ জন রোগীর স্থান সংকুলান সেখানে সম্ভব।

কিন্তু গত ১ আগস্ট থেকে গতকাল সোমবার (২১ আগস্ট) পর্যন্ত ২১ দিনে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে সেখানে ভর্তি হয়েছে ১ হাজার ৬২৪ জন রোগী। এর মধ্যে ডেঙ্গু জ¦রে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৩৫। হাসপাতালটির ৫০ শয্যার বিপরীতে ওই ২১ দিনে প্রতিদিন গড়ে ভর্তি হয়েছে ৭৭ জনের বেশি।

রোগীভর্তির এ সংখ্যা শয্যাসংখ্যার দেড়গুণের বেশি। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ভর্তি হয়েছে ৮ জন। সবচেয়ে বেশি রোগী ভর্তি হয়েছে গত মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট)। ওই দিন ভর্তি হয় ১০০ রোগী।

গতকাল সোমবার ও আজ মঙ্গলবার দুপুরে ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওয়ার্ডগুলোতে দেখা যায়, সেখানকার সবগুলো ওয়ার্ডই রোগীতে ঠাসা। নারী ও শিশু ওয়ার্ডে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। শয্যাসংকটের কারণে মেঝেতেও ঠাঁই হয়েছে বেশ কিছু রোগীর। প্রতিটি ওয়ার্ডে ধারণক্ষমতার অনেক বেশি রোগী রয়েছে। রোগী ও রোগীর স্বজনদের আনাগোনা ও হইচই শব্দে সেখানকার স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘিœত হচ্ছে। মেঝে থাকা রোগীদের নানা ভাবে ভোগান্তি হচ্ছে। অতিরিক্ত রোগী থাকায় একজনের খাবার ভাগ করে দুই-তিনজনকে খেতে দেওয়া হচ্ছে। রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা।

উপজেলার পিয়ারীখোলা এলাকার আমেনা বেগম বলেন,শ্বাসকষ্ট নিয়ে তাঁর এক মাস বয়সী যমজ শিশু মো. হাসান ও মো. হোসেনকে গত ১৬ আগস্ট এখানে ভর্তি করিয়েছেন। শয্যা না পাওয়ায় তাঁদের মেঝেতে রাখা হয়েছে। গত ৬ দিন ধরে তাদের নিয়ে মেঝেতেই আছেন। তিনি অভিযোগ করেন, মেঝেতে থাকায় রাতে পোকামাকড়ের কামড়ের ভয় কাজ করে। মেঝের ছোট্ট জায়গায় গিজগিজ করে বেশ কয়েকজন রোগী ও তাদের স্বজনদের থাকতে হচ্ছে। বিদ্যুৎ না থাকলে গরমে কষ্ট হচ্ছে। আরও নানা সমস্যাও হচ্ছে। এখানে আসার পর তাঁর শিশুদের গ্যাস (নেব্যুলাইজার) ও ওষুধ দেওয়া হয়েছে। অবস্থা উন্নতির দিকে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শাহ মো. মুহিবুল্লাহ সৌরভ বলেন, তাঁর হাসপাতালে শয্যাসংখ্যা ৫০। পুরোনো আরও কয়েকটি শয্যা মেরামত করে রোগীদের রেখেছেন। চাপ বেড়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে কিছু রোগীকে মেঝেতে রাখা হয়েছে। তবে তাঁদের যথাযথ চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালটির শয্যাসংকটের কথা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে লিখিতভাবে জানিয়েছেন।

সম্পর্কিত খবর