শাহমাহমুদপুর ইউডিসি ও জোহরা বালিকা স্কুলে রাতের আঁধারে চুরি

মাসুদ হোসেন : চাঁদপুর সদর উপজেলার ৪নং শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের দুই প্রতিষ্ঠানে রাতের আঁধারে চুরি হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

জানা যায়, বুধবার (৯ আগস্ট) দিবাগত রাত পৌনে ৩টার দিকে শাহমাহমুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের ডিজিটাল সেন্টার (তথ্য সেবা কেন্দ্র) এর পেছন দিয়ে জানালার থাই গ্লাসের তালা ভেঙ্গে গ্রিল কেটে ভিতরে প্রবেশ করে নগদ অর্থ নিয়ে চলে যায় চোর।

চুরির ঘটনায় চাঁদপুর সদর মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন উদ্যোক্তা ইলিয়াস মিঠু। তথ্য কেন্দ্রের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায় অজ্ঞাতনামা একজন চোর চাদর মুখে দিয়ে তথ্য সেবা কক্ষে ঢুকে স্টিলের আলমারির তালা ভেঙ্গে নগদ আনুমানিক ৬০ হাজার টাকা নিয়ে যায়।

এ বিষয়ে ইউপি সচিব মোহাম্মদ কুদ্দুছ আখন্দ রোকন জানান, বুধবার দিবাগত রাতের আঁধারে অজ্ঞাতনামা একজন ব্যক্তি উদ্যোক্তা কক্ষে ঢুকে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তছনছ করে রেখে নগদ টাকা নিয়ে চলে যায়। পরদিন বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায় এসে চুরি হওয়ার ঘটনা দেখতে পান সবাই। পরে ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা ইলিয়াস মিঠু বাদী হয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তবে এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।

এদিকে একই রাতে কৃষ্ণপুর জোহরা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দুইটি অফিস কক্ষে জানালার গ্রিল ভেঙে নগদ ৫ হাজার টাকা চুরি হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। স্টিলের আলমারি ভেঙে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তছনছ করে রেখে যায় চোর চক্র। এ ঘটনায় খবর পেয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ ও বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি বিদ্যালয়ে এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

বিদ্যালয়ে গিয়ে জানা যায়, প্রতিদিনের ন্যায় বুধবার বিকেলে বিদ্যালয় ছুটি হওয়ার পর শিক্ষকরা নিজ নিজ বাসস্থানে চলে যায়। নৈশ প্রহরী মোঃ নানু মিয়া এদিন রাত ১২ টা পর্যন্ত পুরাতন ভবনের আশেপাশে পাহারারত ছিলেন।

১২টার পর তিনি নতুন ভবনের দো’ তলায় গিয়ে কিছু সময় অবস্থান করে ঘুমিয়ে পড়েন। পরদিন সকালে অর্থাৎ বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৭টার সময় তিনি বিদ্যালয়ে এসে সহকারী শিক্ষকদের অফিস কক্ষ খুলে চোর ঢুকার বিষয়টি দেখতে পান। ঐ কক্ষের একটি স্টিলের আলমারির তালা কোন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে জোরপূর্বক খোলা হয়েছে। এসময় চোর আলমারির ভিতরে থাকা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তছনছ করে ফেলে রাখে।

পরে তিনি বিষয়টি প্রধান শিক্ষক মোঃ সাইফুল ইসলামকে অবগত করলে তিনি বিদ্যালয়ে এসে তার কক্ষ খুলে দেখেন ২টি স্টিলের আলমারি একইভাবে খুলে কিছু নগদ টাকা নিয়ে যায়। চোর চক্র প্রধান শিক্ষকের কক্ষের জানালার একটি গ্রিল ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে। পরে প্রধান শিক্ষক চাঁদপুর সদর মডেল থানায় এবং বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটিকে অবগত করেন। খবর পেয়ে মডেল থানার এএসআই সঞ্জয় সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং দায়িত্বরত নৈশ প্রহরীকে ভালোভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য বলেন। প্রয়োজনে পুলিশ তাকে জিজ্ঞেসাবাদ করবে।

এদিকে এমন চুরির আলামত দেখে জনমনে কৌতুহল সৃষ্টি হয়েছে। একদিকে একটি মাত্র গ্রীল ভাঙ্গা দেখা যাচ্ছে, যেখান দিয়ে শুধু মাত্র একটি ছোট শিশু ঢুকা সম্ভব। কিন্তু দরজায় তালা অক্ষত। এছাড়া স্টিলের আলমারির তালা দেশীয় কোন অস্র দিয়ে জোর করে খুলছে এমনটাই দেখা যাচ্ছে। তাহলে চোর ঢুকার বিষয়টি কেমন যেনো অমিল মনে হচ্ছে এমনটা বলাবলি করছে প্রত্যক্ষদর্শরা।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, বুধবার দিবাগত রাতের যেকোন সময়ে কে বা কাহারা বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে ঢুকে দুইটি স্টিলের আলমারির তালা ভেঙ্গে নগদ ৫ হাজার টাকা নিয়ে যায়। এছাড়াও বিদ্যালয়ের জরুরি ফাইলপত্র তছনছ করে রেখে যায়। খবর পেয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে নৈশ প্রহরী নানু মিয়াকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এতেও যদি কাজ না হয় তাহলে থানায় নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে নৈশ প্রহরী নানু মিয়াকে শোকজ করা হয়েছে।

সম্পর্কিত খবর