স্টাফ রিপোর্টার : সাগরে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর চলতি মৌসুমে এই প্রথম ইলিশের আমদানি বেড়েছে। দেশের অন্যতম মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে চাঁদপুর মাছঘাটে একদিনের ব্যবধানে ইলিশের সরবরাহ বেড়েছে দ্বিগুন।
গতকাল ঘাটের আড়তগুলোতে ইলিশ আমদানি হয় ১৫০মণ। বৃহস্পতিবার (৩ আগষ্ট) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আমদানি হয়েছে প্রায় ৩০০মণ। দামও তুলনামূলক কিছুটা কমেছে।
সকাল সাড়ে ১০টায় মাছঘাটে গিয়ে দেখাগেছে ইলিশ বেচাকেনায় সরগরম হয়ে উঠেছে আড়ৎগুলো। পাইকারী বিক্রেতা, খুচরা ক্রেতা ও শ্রমিকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। দক্ষিণাঞ্চলের নোয়াখালি, হাতিয়া ও ভোলা অঞ্চল থেকে ট্রলার ও সড়ক পথে ট্রাকে করে ইলিশ আসছে ঘাটে।
বেশ কিছু সময় ঘাটে অবস্থান করে দেখাগেছে, মাছঘাট সংলগ্ন ডাকাতিয়া নদী দিয়ে আসা ট্রলারগুলো থেকে শ্রমিকরা ইলিশ আড়তে এনে স্তুপ করছে। এরপর হাকডাক দিয়ে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ। আবার কিছু ইলিশ রপ্তানি করার জন্য বাক্স ভর্তি করছেন শ্রমিকরা। আবার খুচরা কেনার জন্য স্থানীয় ক্রেতারা ভীড় জমাচ্ছেন।
মেসার্স কালু ভুইয়া মৎস্য আড়তের ম্যানেজার মো. ফারুক জানান, আজকের বাজারে ২৫০ গ্রামের অর্থাৎ ৪টায় কেজি ইলিশ প্রতিমণ পাইকারী বিক্রি হচ্ছে ১৮-২০ হাজার টাকা। ৫০০গ্রাম ওজনের প্রতিমণ ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২৮-৩০ হাজার টাকা। ১ কেজি ওজনের ইলিশ প্রতিমণ ৪৮-৫০ হাজার টাকা। আর দেড় কেজি থেকে দুই কেজি ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ১ হাজার ৭শ’ থেকে ২ হাজার ২শ’ টাকা। তবে বড় সাইজের ইলিশের সংখ্যা কম।
তিনি আরো জানান, গত এক সপ্তাহে ইলিশের আমদানি কম ছিল। তবে সাগরে নিম্নচাপ থাকার কারণে দক্ষিণাঞ্চলের জেলেরা মাছ আহরণ থেকে বিরত থেকেছেন। যার ফলে মঙ্গল ও বুধবারে আহরণকৃত সব ইলিশ আজকে মাছঘাটে বিক্রির জন্য নিয়ে আসছেন ব্যবসায়ীরা।
চাঁদপুর মৎস্য ও বনিক সমবায় সমিতি লিমিটেড এর সাধারন সম্পাদক হাজী মো. সবে বরাত সরকার জানান, নদীতে পানি বৃদ্ধি ও বৃষ্টি হওয়ার কারণে জেলেরা আগের চাইতে ইলিশ কিছুটা বেশি পাচ্ছেন। বুধবার ঘাটে ইলিশ আমদানি হয়েছে ১৫০ মণ। আজকে আমদানি হয়েছে প্রায় ৩০০মণ। স্থানীয় পদ্মা-মেঘনার ইলিশ গতকাল আমদানি হয়েছে ১৫মণ। আজকে আমদানি হয়েছে প্রায় ৩০মণ। আশা করছি নদীতে পানি ও বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে ইলিশের আমদানি আরো বাড়বে।
চাঁদপুরের জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মো. তানজিমুল ইসলাম জানান, গত ১০ দিন আগেও ইলিশের সরবরাহ খুবই কম ছিল। দামও ছিল চড়া। গত দুইদিন ইলিশের আমদানি বাড়ার সাথে সাথে দামও কমেছে। আমরা মাছঘাটের ব্যবসায়ীদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। বৃষ্টি ও নদীতে পানির স্রোত বৃদ্ধি হওয়ার কারণে জেলেদের জালে ইলিশ ধরা পড়তে শুরু করছে।