মতলবে শিক্ষাব্যবস্থার বেহাল দশা : উদ্বিগ্ন সচেতন মহল

ফারুক হোসেনঃ চাঁদপুর মতলব উত্তরে এসএসসি পরীক্ষায় ২০২২ সালের ফলাফল অনুযায়ী ২০২৩ সালের জিপিএ-৫ সহ বিভিন্ন গ্রেড এবং পাশের হার কমছে। শিক্ষাখাতে সরকারের ব্যাপক উন্নয়ন হলেও শিক্ষা ব্যবস্থার এমন বেহাল অবস্থায় উদ্বিগ্ন সচেতন মহল। এর প্রধান কারণ হিসেবে তারা দেখছেন, মোবাইল ও মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ছে শিক্ষার্থীরা।

২০২২-২০২৩ সালে এসএসসি ফলাফল বিবরণে জানা, এ উপজেলা থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল ৩৯টি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪ হাজার ১৮৭ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে পাশ করেছে ৩ হাজার ৪০৯ জন, জিপিএ-৫ পেয়েছে ২১৩ জন, পাশের হার ৮১.৪১।

কিন্তু ২০২২ সালে এসএসসি পরিক্ষার্থী ছিলো ৪ হাজার ২৭৭ জন। এর মধ্যে পাশ করেছে ৩ হাজার ২৭৮ জন, ২৮৯ জন জিপিএ-৫, পাশের হার ৯৩.৬৭। সে হিসেবে এবার ১২.২৬ পাশের হার কমছে। গত বছরের চেয়ে তুলনামূলকভাবে এ বছর পরীক্ষার্থীদের গড় অনুযায়ী বিভিন্ন গ্রেড অনেক কমছে।

সরজমিনে দেখা যায়, এ উপজেলায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নতুন একাডেমী ভবন, আসবাবপত্র, আকর্ষনীয় সুন্দর ডিজাইনের রং, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা করা, খেলাট মাঠ, শহিদ মিনারসহ শিক্ষাখাতের ব্যাপক উন্নয়ন ও শিক্ষার মনোরম পরিবেশ সৃষ্টি করেছে বর্তমান সরকার। সময় উপযোগী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উন্নতি করা হলেও শিক্ষার মান উন্নয়ন নিয়ে সুধীমহল উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, সরকারের ব্যাপক উন্নয়নের পরেও শিক্ষা ব্যবস্থার এমন বেহাল অবস্থায়। তারা এর প্রধান কারণ হিসেবে দেখছেন, করোনাকালীন সময় থেকে অনলাইনে ক্লাসের জন্য শিক্ষার্থীদের হাতে মোবাইল ও মাদকে আসক্ত। ওই সময় অনলাইনে ক্লাসের বাইরে বিভিন্ন গেইম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ঝুঁকে পড়ে শিক্ষার্থীরা।

আর এভাবেই মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। শুধু আসক্তই নয়, মোবাইল যোগাযোগের মাধ্যমে তারা গভীর সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছে। অপর দিকে মাদকের বিস্তার প্রভাবে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে শিক্ষার্থীরাও। জনসচেনতার অভাব, অভিভাবক-শিক্ষককের দায়িত্বহীনতাসহ নানা কারণেও লেখাপড়া বিমুখ হয়ে উঠছে শিক্ষার্থীরা।

সম্প্রতি মতলব উত্তরে শিক্ষার্থীদের মাঝে ৩’শ টি আই ট্যাব বিতরণ করেছে সরকার। এবার এসএসসি ফলাফল খারাপ হওয়ায় সেই আই ট্যাব নিয়েও দুশ্চিন্তায় অভিভাবকসহ স্থানীয়রা।

উপজেলা প্রশাসন বিভিন্ন সভা সমাবেশে গণসচেতনামূলক বলা হচ্ছে শিক্ষার্থীদের প্রথম শিক্ষক হচ্ছে বাবা-মা। বাবা-মার দায়িত্ব ও কর্তব্য হচ্ছে ছেলে-মেয়েরা কোথায় যায়? কি করে? কার সঙ্গে মিশে? সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে কিনা? এবং ঠিকমতো লেখাপড়া করে কিনা? সেদিকেও খোঁজ-খবর রাখার জন্য বলা হচ্ছে।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার জানান, উঠতি বয়সের ছেলে-মেয়েরা মোবাইল দেখতে দেখতে আসক্ত হয়ে পড়ছে। আবার মাদকাসক্তদের সঙ্গে মিশে শিক্ষার্থীরাও মাদকেও আসক্ত হচ্ছে। এক্ষেত্রে প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ১১ দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের সচেতনতামূলক অভিযান অব্যাহত থাকবে।

সম্পর্কিত খবর