চাঁদপুরে স্ত্রীদের হত্যার দায়ে পৃথক মামলায় স্বামীদের যাবজ্জীবন

বিশেষ প্রতিনিধি : পৃথক মামলায় চাঁদপুর সদর উপজেলার ইব্রাহীমপুর ইউনিয়নের রামদাসদী গ্রামে কিস্তির টাকা পরিশোধকে কেন্দ্র করে স্ত্রী সালমা বেগম (২২) গলাটিপে শ^াসরোধ করে হত্যার দায়ে স্বামী বায়েজীদ খান বাবুল (২৮)কে এবং হাজীগঞ্জ উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামে যৌতুকের টাকা দাবীকে কেন্দ্র করে স্ত্রী সাহিদা বেগম মুক্তা (৩৬) কে ধারালো ছুরি দিয়ে গলাকেটে হত্যার দায়ে স্বামী হাসান সর্দার (৩৮) কে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা জারিমানা এবং অনাদায়ে আরো ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়েছে আদালত।

মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) দুপুরে পর্যায়ক্রমে পৃথক দুই মামলার রায় দেন চাঁদপুরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. মহসিনুল হক।

সদর উপজেলার ইব্রাহীমপুর রামদাসদী গ্রামের সালমা হত্যা মামলার বিববরণ থেকে জানাগেছে, ২০১৭ সালের ১১ জানুয়ারী মধ্য রাতে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের মধ্যে ঋনের কিস্তির টাকা পরিশোধ করাকে কেন্দ্র করে বাক বিতন্ডার এক পর্যায়ে শ^াসরোধ করে স্ত্রীকে হত্যা করে।

এই ঘটনায় সালমার পিতা আব্দুল লতিফ মিজি বাদী হয়ে ওই দিনই চাঁদপুর সদর মডেল থানায় বাবুলকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

ওই ঘটনায় পুলিশ বাবুলকে গ্রেফতার করে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন চাঁদপুর সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন মিয়া তদন্ত শেষে ওই বছর ৫ জুন আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। মামলাটি প্রায় ৬ বছরের অধিক সময় চলমান অবস্থায় আদালত ১৩ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহন করে।

অপরদিকে হাজীগঞ্জ উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামে সাহিদা বেগম মুক্তা হত্যার মামলার বিবরণ থেকে জানাগেছে, ২০১৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর রাতে পূর্বের পারিবারি কলোহ এবং যৌতুকের টাকা দাবীকে কেন্দ্র করে স্বামী হাসান সর্দার স্ত্রী মুক্তাকে ছুরি দিয়ে গলাকেটে হত্যা করে পুকুরে নিয়ে ফেলে রাখে। পরদিন সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে চাঁদপুর মর্গে পাঠায়।

এই ঘটনায় মুক্তার ভাই মো. সোহাগ মজুমদার (৩৫) বাদী হয়ে পরিদন অর্থাৎ ২২ সেপ্টেম্বর হাজীগঞ্জ থানায় হাসান সর্দারকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় হাসান গ্রেফতার হয়।

এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন হাজীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহীদ হোসেন তদন্ত শেষে ওই বছর ২৩ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। মামলাটি চলমান অবস্থায় আদালত ১৯ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহন করেন।

উভয় মামলায় রাষ্ট্র পক্ষের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটির (এপিপি) মোক্তার আহমেদ অভি জানান, মামলাগুলো দীর্ঘ ৬ বছরের অধিক সময় চলাকালীন অবস্থায় স্বাক্ষ্য গ্রহন ও নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে আসামীদের অপরাধ প্রমানিত হয়। যার ফলে আসামীদের উপস্থিতিতে বিচারক এই রায় দেন।

আসামীদের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন এডভোকেট গোলাম মর্তুজা ও লিগ্যাল এইডের আইনজীবী শফিকুল ইসলাম ভুঁইয়া।

সম্পর্কিত খবর