গাজী মোঃ ইমাম হাসানঃ পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যু রোধে চাঁদপুরে ৬ থেকে ১০ বছর বয়সী এক লাখ শিশুকে সাঁতার শেখানো হবে।
আগামী ১ আগস্ট থেকে মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তরের আইসিবিসি প্রকল্পের আওতায় এসব শিশুকে সাঁতার শেখানোর উদ্যোগ নিয়েছে চাঁদপুরের শিশু একাডেমি। এজন্য দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা অচল অরুণ নন্দী সুইমিংপুলটি সচল করা হচ্ছে।
গতকাল ২৫জুলাই (মঙ্গলবার) দুপুরে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে ‘বিশ্ব ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধ দিবস’র আলোচনা সভায় এসব তথ্য জানান চাঁদপুর জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা মো. কাউছার আহমেদ।
চাঁদপুর জেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, নিউইয়র্কের জনহিতকর সংস্থা ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিসের যৌথ আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বশির আহমেদ।
এসময় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) সুদীপ্ত রায়, সিভিল সার্জন ডা. মুহাম্মদ সাহাদাৎ হোসেন ও স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত নারী মুক্তিযোদ্ধা ডা. সৈয়দা বদরুন্নাহার চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে প্রতিবেদন পেশ করেন ডা. মো. জাহিদুজ্জামান।
এসময় এক পরিসংখ্যানে জানানো হয়, জেলায় গত ৬ মাসে প্রায় অর্ধশত শিশু পানিতে ডুবে মারা গেছে। এদের মধ্যে অধিকাংশই ৩ থেকে ১০ বছর বয়সী।
অনুষ্ঠানে বক্তারা জানান, এসব শিশু পরিবারের অবহেলায় বাড়ির কাছেই পুকুরে, ডোবায় অথবা বালতির পানিতে ডুবে মারা যায়। যাদের অভিভাবকদের অধিকাংশই প্রবাসী।
এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায় পানিতে ডুবে মৃত্যু রোধে জেলার প্রতিটি ইউনিয়নে সিভিল সার্জনের প্রশিক্ষিত ভলান্টিয়ার রাখার আহ্বান জানান। যাতে কোনো শিশু পানিতে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে প্রকৃত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যায়।
সভাপতির বক্তব্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বশির আহমেদ বলেন, ‘এখন বর্ষাকাল, সব জায়গায় পানিতে ডুবে দুর্ঘটনার সময়। এজন্য আমাদের মায়েরা যেন সন্তানের দিকে খেয়াল রাখেন। যাদের শিশু সন্তান আছে তারা যেন এ ব্যাপারে সতর্ক ও সচেতন থাকেন এবং সম্ভব হলে শিশুদের সাঁতার শেখান।’
জেলায় শিশুদের সাঁতার শেখানোর কাজে নিয়োজিত এনজিও সংস্থা সিআইপিআরের এরিয়া ম্যানেজার জহির উদ্দিন মো. হিন্দাল বলেন, ‘চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ ও চাঁদপুর সদর উপজেলায় গত জানুয়ারি থেকে চলতি জুলাই পর্যন্ত ২৫ জন শিশু পানিতে ডুবে মারা গেছে।
এ ছাড়া, ফরিদগঞ্জ, হাজীগঞ্জ, কচুয়া, শাহরাস্তি ও হাইমচরে আরও অনেক শিশুর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর আগে, ২০২২ সালে জেলায় ৪৯ জন, ২০২১ সালে ৫৩ জন, ২০২০ সালে ৪৩ জন ও ২০১৯ সালে ৪৯ শিশুর মৃত্যু হয়।’
এর আগে, দিবস উপলক্ষে একটি র্যালি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে থেকে বের হয়ে পুনরায় একই স্থানে এসে শেষ হয়। পরে দিবস উপলক্ষে আয়োজিত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা।