মহামায়া বাজার ব্যবসায়ী ও ইজারাদারের সাথে ইউপি চেয়ারম্যানের বৈঠক

মাসুদ হোসেন : চাঁদপুর সদর উপজেলার মহামায়া বাজারে খাজনা আদায়সহ বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা শাহনাজ এর নির্দেশে ক্রেতা, বিক্রেতা ও ইজারাদারের মতবিরোধ নিরসনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহষ্পতিবার (২০ জুলাই) শাহমাহমুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কার্যালয়ে বাজারের বিভিন্ন ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও ক্রেতাদের সমন্বয়ে বাজারের বিভিন্ন পক্ষের পাল্টাপাল্টি চলমান অভিযোগ ও সমস্যা নিরসনে উক্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

দীর্ঘ আলোচনা সভায় বিশেষ করে মাছ ব্যবসায়ী-ইজারাদার ও ক্রেতাদের অভিযোগ ও প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। এছাড়া বাজারের গলি ও ফুটপাতসহ অন্যান্য সমস্যার কথাও ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে তুলে ধরেন।

বাজারের আশেপাশের ক্রেতারা অভিযোগ করে জানান, দীর্ঘ বহু বছর যাবত মহামায়া বাজারে মাছের আড়ৎ কিংবা মাছ ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারনে এলাকার মাছ চাষীরা বাজারে মাছ আনে না। এছাড়া কয়েক প্রকার মাছ শুধু নির্ধারিত ব্যবসায়ীরা বিক্রি করে আসছে। ফলে আমরা সাধারণ ক্রেতারা অতিরিক্ত বেশি দামে মাছ কিনতে হচ্ছে। অনেক সময় বাজারে কোন মাছই পাওয়া যায় না।

এমন অভিযোগের ভিত্তিতে মাছ ব্যবসায়ীরা জানান, আমরা এই বাজারের আড়ৎ থেকে অতিরিক্ত দামে বিভিন্ন প্রকার মাছ কিনতে হয়। এছাড়াও অতিরিক্ত খাজনা দিতে হয়। খরচের হার বেশি হয়ে যাওয়ায় ক্রেতারা বেশি দামে মাছ কিনতে চায় না। ফলে প্রতিনিয়তই আমাদের লোকসান গুনতে হয়। তাই আমরা সব সময় বিক্রি করতে পারি না। ফলে ক্রেতারা বাজারে এসে মাছ পায় না। আমরা বিভিন্ন স্থান থেকে মাছ ক্রয়ের সুযোগ পেলে ক্রেতারা ন্যায্যমূল্যে সকল প্রকার মাছ কেনার সুযোগ পাবে।

নিয়ম বহির্ভূত ও অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের অভিযোগে ইজারাদার আরিফুল ইসলাম তুষার জানান, আড়ৎদারের সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই। এছাড়া সরকারী নিয়মে আগের মতোই খাজনা আদায় করা হয়। তবে তিনি সকল মাছ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে উক্ত বাজার সহ সকল ক্রয়কৃত মাছের উপর ৩% হারে খাজনা দাবী করলে ব্যবসায়ীরা তা মানতে রাজী না হয়ে তারা বলেন, আমরা যে মাছগুলো অন্য বাজার থেকে আনবো তার জন্য স্থান বা চডি অনুসারে নির্ধারিত পরিমান খাজনা দিবো। আর মহামায়া বাজার থেকে যে মাছ ক্রয় করবো তার জন্য ইজারাদারের চাহিদা অনুসারে ৩% হারে খাজনা নিবো। যদিও ইজারাদার সকল মাছের উপর ৩% হারে খাজনা দাবী করে আসছেন।

এদিকে ক্রেতাদের দাবীর ভিত্তিতে ব্যবসায়ীরা এখন থেকে বিভিন্ন স্থান থেকে মাছ ক্রয় করে এনে মহামায়া বাজারে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেন। এক্ষেত্রে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশনা মোতাবেক মাছ বাজারে খাজনা আদায়ের বিবরন সম্মিলিত তালিকা লাগানো হবে।

জানা যায়, বাজারের ইজারাদার মোঃ আরিফুল ইসলাম তুষার মাছ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে খাজনা উত্তোলনে বাধা দেওয়ার অভিযোগ এনে চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন। উক্ত অভিযোগটি নিয়ে উভয় পক্ষের সাথে কথা বলার জন্য ইউপি চেয়ারম্যানকে নির্দেশ প্রদান করেন। তারই আলোকে ইউনিয়ন পরিষদে উক্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় বাজারের ক্রেতা- বিক্রেতারা ইজারাদার ও আড়ৎদারকে দায়ী সহ বিভিন্ন বিষয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ ও সমস্যা নিরসনে মতামত ব্যক্ত করেন।

ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মাসুদুর রহমান নান্টু পাটওয়ারীর সভাপতিত্বে ও ইউপি সচিব মোহাম্মদ কুদ্দুস আখন্দ রোকনের উপস্থাপনায় উক্ত আলোচনা সভায় অংশগ্রহন করেন শাহমাহমুদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ কামাল হাজী, সহ-সভাপতি জসিম উদ্দিন বেপারী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ সামছুজ্জামান পাটওয়ারী,

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ হানিফ মিজি, ব্যবসায়ী ফজলুল হক বেপারী, আলমগীর হোসেন বেপারী, সোহরাব হোসেন কুসুম, ইউপি সদস্য কবির হোসেন রনি, হাবিবুর রহমান, সদর উপজেলা সাবেক যুবলীগ নেতা আরিফুর রহমান সুজন,

ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি এমরান হোসেন, ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক মোঃ ফারুক হোসেন বেপারী, সাবেক যুবলীগ নেতা ফরহাদ হোসেন রানা, ফরহাদ হোসেন হাজীসহ বাজারের বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।

সম্পর্কিত খবর