স্টাফ রিপোর্টার : চাঁদপুর-চট্টগ্রামের মধ্যে চলাচলকারী আন্ত:নগর মেঘনা এক্সপ্রেস ট্রেনটিতে যান্ত্রীক ক্রটির মারাত্ম কারনে ইঞ্জিন মাত্রারিক্ত হিট হওয়ায় গরম পানি ছিটকে পড়ে চালক সাঈদ মোহাম্মদ তাহেরের পুরো শরীর জ্বলসে গেছে। এ সময় চালক মারাত্মকভাবে আহত হওয়ায় তাকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দিয়ে জরুরী ভাবে কুমিল্লা রেফার্ড করা হয়।
বুধবার(১২জুলাই) রাতে চালক তাহেরের অবস্থার অবনতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে প্রেরন করা হয়েছে। বিষয়টি রেলওয়ে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।
এ ঘটনায় চট্রগ্রাম রেলওয়ের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি তদন্ত করার জন্য ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। এ কমিটি আগামী ৩ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করার নির্দেশ রয়েছে বলে চট্রগ্রাম বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
এ ঘটনায় ট্রেনে থাকা সহস্বাধিক যাত্রীনিয়ে ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ায় নারী,পুরুষ ও শিশুরা ট্রেনের মধ্যে মারাত্বক দূর্ভোগ পৌহাতে হয়।
ঘটনাটি মঙ্গলবার (১১ জুলাই) সকালে ঘটলেও রেলওয়ের দায়িত্বরত কর্মকর্তা ষ্টেশন মাস্টার শোহেবুল শিকদার মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সংবাদ কর্মীদের বিষয়টি গুরুত্বসহকারে জানিয়েছেন এবং আহত চালকের জ্বলসে যাওয়া ছবিও দিয়ে সহায়তা করেন।
ট্রেনটি প্রতিদিনের মত সকাল ৫টায় চাঁদপুর থেকে ছেড়ে বেলা ৯টায় চট্রগ্রাম পৌছার নিদ্বারিত সময় হলেও ট্রেনটি ৩ ঘন্টা বিলম্বে চাঁদপুর থেকে সকাল ৮টায় ছেড়ে চট্রগ্রাম গিয়ে পৌছে দুপুর সাড়ে ১২ টায়।
ইঞ্জিন বিকল হয়ে যাত্রীরা দূর্ভোগে পড়ায় উত্তেজিত কিছু যাত্রী তাৎক্ষনিক ট্রেনের সামনে এসে বিক্ষোভ করে প্রতিবাদে ফেটে পড়ে এবং তারা ট্রেনের ভিতরে ব্যাপক ভাংচুর চালায় এবং ব্যাপক ভাংচুর করে মারাত্বক ক্ষতিসাধন করেছে।
পরে রেলওয়ে থানার পুলিশ খবর পেয়ে রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মুরাদ উল্লাহ বাহারের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তাৎক্ষনিক লাঠি চার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে পরিস্থিতি শান্ত করতে সক্ষম হয়।
চাঁদপুরে মেঘনা এক্রপ্রেস ট্রেনটির ইঞ্জিন বিকল হওয়ার কারনে নতুন ইঞ্জিন নাম্বার এলএম-২৯১৬,কে লাকসাম থেকে আসার পর নির্ধারিত সময়ের প্রায় ৩ ঘন্টা বিলম্বে আন্ত:নগর মেঘনা এক্রপ্রেস ট্রেনটি চাঁদপুর থেকে চট্রগ্রামের উদের্শে ছেড়ে যায়।
চাঁদপুর ষ্টেশনের বিভিন্ন সূত্র,ট্রেনের যাত্রী ও ষ্টেশন মাস্টার শোহেবুল শিকদার সাথে যোগাযোগ করে জানা গেছে, আন্ত:নগর মেঘনা এক্রপ্রেস ট্রেনটি প্রতিদিনের মত চট্রগ্রামের উর্দেশে ছেড়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
ট্রেনটি ছাড়ার পূর্বেই চাঁদপুর স্টেশনে ট্রেনটি দাড়ানো অবস্থায় ইঞ্জিন নাম্বার এল এম-২৯২৪, মাত্রারিক্ত হিট হয়ে পড়ে। এতে করে চালক বুঝতে পেরে ট্রেনটি গন্তব্যের উদ্দের্শে যাত্রা না করে চাঁদপুর স্টেশনে অবস্থান করে। এ সময় ট্রেনের প্রধান লোকো মাস্টার (চালক) কামাল হোসেন ও সহকারী লোেেকা মোটিভ (সহকারী চালক) সাঈদ মোহাম্মদ তাহের ইঞ্জিনটিকে রক্ষা কল্পে বাহির থেকে পানি এনে ইঞ্জিনে মারতে থাকেন।
এ সময় ইঞ্জিনের প্রচন্ড গরম পানি ছিটকে এসে সহকারী লোকো মোটিভ (সহকারী চালক) সাঈদ মোহাম্মদ তাহেরের শরীরে গিয়ে পড়ে তার সমস্ত শরীর মারাত্বক ভাবে জ্বলসে গিয়ে সে গুরুত্বর ভাবে আহত হয়। পরে প্রধান চালক কামাল হোসেন,রেলওয়ের বিভিন্ন বিভাগের কর্মচারীরা ও এলাকাবাসীর সহায়তায় ট্রেনের ইঞ্জিনে পানি মারতে মারতে ইঞ্জিন ঠান্ডা হলেও ইঞ্জিনটি বিকল হয়ে পড়ে।
পরে চাঁদপুর স্টেশন মাস্টার শোহেবুল শিকদার জানান,তিনি চট্রগ্রাম বিভাগীয় ট্রাফিক বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করে তাদের নিদের্শে লাকসাম থেকে একটি নতুন ইঞ্জিন এনে প্রায় ৩ঘন্টা বিলম্বে আন্ত:নগর মেঘনা এক্রপ্রেস ট্রেনটি চাঁদপুর থেকে চট্রগ্রামে গন্তব্যের উদ্দের্শে চাঁদপুর ত্যাগ করে। এ সময বিকল ইঞ্জিনটিও ট্রেনের পিছনে আটকে লাকসাম নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ট্রেন যাত্রীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও ব্যাপক আতংকো বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে স্টেশন মাস্টার শোহেবুল শিকদার জানান, যান্ত্রীক ক্রটির কারনে ট্রেনটির ইঞ্জিন মাত্রারিক্ত হিট হওয়ায় গরম পানি ছিটকে এসে চালক সাঈদ মোহাম্মদ তাহেরের সমস্ত শরীর জ্বলসে যায়। তাকে প্রথমে চাঁদপুর সরকারী জেনারেল হাসপাতালে ও পরে কুমিল্লায় প্রেরন করা হয়। ট্রেনের ইঞ্জিনটি বিকল হওয়ায় প্রায় ৩ ঘন্টা বিলম্বে মেঘনা ট্রেনটি চাঁদপুর ত্যাগ করে চট্রগ্রাম যায়। যাত্রীদের কোন ক্ষতি হয়নি। তারা দূর্ভোগে পড়েছে। ট্রেনে টিকেট করা প্রায় ৮শতাধিক যাত্রী ও অতিরিক্তসহ সহস্বাধিক যাত্রী ছিল।