স্টাফ রিপোর্টার : বয়স ১৩ থেকে ১৬ বছর হবে। এরাই কখনো কিশোর সন্ত্রাসী, কখনো কিশোর গ্যাং নামে পরিচিত। কথায় কথায় তারা অস্ত্রের মহড়া দেয়। সাথী বন্ধুদের সাথে একেবারে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে প্রথমে ঝগড়া, তারপর মারামারি। মারামারিতে সেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে নির্দয়ভাবে আঘাত করে থাকে। এই হলো কিশোর সন্ত্রাসীদের কর্মকাণ্ড।
চাঁদপুর শহরে এখন কিশোর সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্য সীমাহীন বেড়েছে। তাদের এমন দৌরাত্ম্যে ভীত-সন্ত্রস্ত থাকে মানুষ। তাদের অস্ত্রের মহড়া এবং মারামারির দৃশ্য মানুষ অসহায়ের মতো শুধু চেয়ে চেয়ে দেখে থাকে। তবে সাহস করে কেউ প্রতিরোধে এগিয়ে গেলে তখন তারা সব পালিয়ে যায়।
যেমনটি ঘটনা ঘটেছে গতকাল সন্ধ্যায় চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সামনে। প্রেসক্লাব সভাপতি তার সাহসী ভূমিকায় এক কিশোর সন্ত্রাসীর হাত থেকে একটি দেশীয় ধারালো অস্ত্র ছিনিয়ে রাখতে সক্ষম হলেও তাদের আটক করতে পারেন নি। সভাপতির ধাওয়ায় সব পালিয়েছে। তখন সভাপতি একা হওয়ায় তাদের আটক করতে পারেন নি।
চাঁদপুর শহরে কিশোর সন্ত্রাসীদের বিচরণ এবং মারামারির অন্যতম স্পট হচ্ছে প্রেসক্লাব এলাকা। দুপুর ১২টার পর থেকেই এ এলাকায় তাদের আনাগোণা শুরু হয়। দুপুরের পর থেকে বাড়তে থাকে। বিকেল-সন্ধ্যায় গ্রুপে গ্রুপে আসতে থাকে। প্রেসক্লাব ঘাট এলাকা, প্রেসক্লাবের পেছনেসহ আশপাশে তারা জটলা বেঁধে থাকে। কারো পূর্ব বিরোধের জের, কেউ উপস্থিত কোনো বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি। এরপর শুরু হয় মারামারি। তখন ব্যবহার হয় দেশীয় ধারালো অস্ত্র। বিকেলে ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে অবকাশ যাপনে ঘুরতে আসা মানুষজন তখন ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি এএইচএম আহসান উল্লাহ প্রেসক্লাবে মাগরিবের নামাজ আদায় করে নিচে নামেন। তখন তিনি দেখেন পৌর পাঠাগারের সামনে থেকে প্রেসক্লাবের প্রধান গেইট পর্যন্ত ২০-২৫ জন কিশোর ছেলের জটলা এবং চিৎকার-চেঁচামেচি। আহসান উল্লাহ তখন প্রেসক্লাবের গেইটের দিকে এগিয়ে যান।
কিছুক্ষণ পর তিনি দেখেন ১৩/১৪ বছরের এক কিশোর রিকশা থেকে নামলো। তার হাতে দেশীয় ধারালো অস্ত্র। এটির সাইজ হবে প্রায় এক হাত। তখন প্রেসক্লাব সভাপতি ‘এই তোরা কারা’ বলে ধমক দিয়ে এগিয়ে গিয়ে ওই কিশোরের হাত থেকে অস্ত্রটি ছিনিয়ে নেন।
আর তখন সেই কিশোর ছেলেটিসহ অন্যরা দ্রুত পালিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডঃ চৌধুরী ইয়াসিন ইকরাম প্রেসক্লাবের সামনে দিয়ে মোটরসাইকেলে যেতে দেখলে আহসান উল্লাহ তাকে থামান। এরপর সভাপতি ও সাংগঠনিক সম্পাদক সদর মডেল থানায় গিয়ে অস্ত্রটি ওসি আব্দুর রশিদের কাছে জমা দিয়ে আসেন।
চাঁদপুর প্রেসক্লাব এলাকায় কিশোর সন্ত্রাসীদের অবাধ বিচরণের বিষয়টি বহুবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরে আনা হয়। কিন্তু কোনো কাজে আসে নি। এ বিষয়ে প্রশাসনের কঠোর নজরদারির জন্য পুলিশ সুপারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দসহ শহরবাসী।