মতলবে যুবলীগ নেতা হত্যা মামলায় কাজী মিজানসহ ৭জন কারাগারে

চাঁদপুর খবর রির্পোট: চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় বাহাদুরপুর গ্রামে স্থানীয় যুবলীগ নেতা মোবারক হোসেন ওরফে বাবু (৪৮) নিহত হওয়ার ঘটনায় আটক মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা কাজী মিজানুর রহমানসহ আটক ৭আসামীকে গত রবিবার বিকেলে চাঁদপুর জেলা কারাগারে পাঠিয়েছে চাঁদপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ।

আটক অপরাপর আসামীরা হলেন বাহাদুরপুর গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মী মুসা গাজী, জুয়েল কবিরাজ, সাবিয়া বেগম, আনোয়ার শেখ, মোশারফ মিজি ও সাকিলা বেগম।

জানা গেছে, রোববার বেলা ২টার দিকে মোহনপুর গ্রামের বাড়ি থেকে চাঁদপুর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল তাঁকে গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হলো।

গ্রেপ্তার কাজী মিজানুর রহমান আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপকমিটির সদস্য এবং সম্প্রতি অনুষ্ঠিত মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদের উপনির্বাচনের নির্বাচিত চেয়ারম্যান।

নিহত মোবারক হোসেনের ভাই আমির হোসেন ওরফে কালু বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে মতলব উত্তর থানায় হত্যা মামলা করেন।

মতলব উত্তর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সানোয়ার হোসেন বলেন, মোহনপুরের বাড়ি থেকে চাঁদপুর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল হত্যা মামলার প্রধান আসামি কাজী মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে। পরে চাঁদপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতের মাধ্যমে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।

জানা গেছে,আধিপত্য বিস্তার ও ইউনিয়ন পরিষদের উপনির্বাচনে দ্বন্দ্বের জেরে গত শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি ও সংঘর্ষ হয়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান মোবারক হোসেন। তিনি উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের যুবলীগের সদস্য। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন নিহত মোবারকের ছেলে ইমরান বেপারী ও আওয়ামী লীগ কর্মী জহির কবিরাজ।

পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদের উপনির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবদুল হাই প্রধান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) মোহনপুর পর্যটনকেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী মিজানুর রহমান। ওই নির্বাচনে কাজী মিজানুর রহমান চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তাঁর পক্ষে সেখানে নির্বাচনের সার্বিক বিষয়ে দেখভাল করেন বাহাদুরপুর এলাকার স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা আবদুর রাজ্জাক ও তাঁর লোকজন।

আবদুল হাইয়ের নির্বাচনের সার্বিক তদারকি করেন স্থানীয় যুবলীগের নেতা বাহাদুরপুর এলাকার আমির হোসেন ওরফে কালু। নির্বাচনের পর থেকে এ দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছে। গতকাল বিকেলে বাহাদুরপুর এলাকায় নিজেদের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আবদুর রাজ্জাক এবং আমির হোসেন ও ইউপি সদস্য আলমগীর হোসেনের লোকজনের মধ্যে লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।

এ সময় গুলিতে গুলিবিদ্ধ হন মোবারক হোসেন এবং তাঁর ছেলে ইমরান ব্যাপারী (১৮) ও আওয়ামী লীগের কর্মী জহির কবিরাজ। গুলিবিদ্ধ মোবারক হোসেনকে ও তাঁর ছেলে ইমরানকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বিকেল পাঁচটায় মোবারক হোসেন মারা যান। গুরুতর আহত ইমরান ও জহির কবিরাজকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সম্পর্কিত খবর