বিশেষ প্রতিনিধি : চাঁদপুরে ১শ’কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মান হতে যাওয়া আধুনিক নৌবন্দর নির্মান স্থানে থাকা ৭৪জন ব্যবসায়ীকে ক্ষতিপূরন হিসেবে ৯০ লাখ ২৯ হাজার ৯১৯ টাকার চেক প্রদান করা হয়। এ আধুনক নদী বন্দর নিমানে ব্যায় ধরা হয়েছে প্রায় ১শ’কোটি টাকা।
প্রায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে চাঁদপুরে ৩শ ফুট দৈর্ঘ্যরে আধুনিক নৌ বন্দর নির্মাণ করা হবে। বর্তমানে ঢাকা-চাঁদপুর নৌ-রুট ব্যবস্থাপনা অনেক ভালো। খুব অল্পসময়ের মধ্যেই আসা-যাওয়া করা যায়। এই নৌপথের যাত্রা অনেক নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী। নিরাপদ ও বিলাস বহুল নৌযান থাকার কারণে এই অঞ্চলের যাত্রীরাও এই রুটে বেশী চলাচল করতে পারছে। চাঁদপুরে এ আধুনিক নৌবন্দর নির্মানে ভারতীয় দুটি এবং বাংলাদেশের একটিসহ মোট ৩টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে কাজ করে আগামী দুই বছরের মধ্যে এ কাজটি শেষ করার কথা বললেন কর্তৃপক্ষ।
বুধবার (১৪ জুন) দুপুরের পর শহরের বাগাদী রোডে বাংলাদেশ আভ্যন্তরীন নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ এষ্টেট এলাকার রেষ্ট হাউজে ক্ষতিগ্রস্থদের ব্যবসায়ীদের হাতে এসব চেক তুলেদেন প্রধান অতিথি যুগ্ম সচিব ও বিআইডাব্লিউটিএর সদস্য (প্রকৌশল) ড. এ. কে. এম আজাদুর রহমান।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, উন্নয়নের জন্য আমাদেরকে পরিবর্তন হতে হবে। সরকারের কাজে সকলকে সহযোগিতা করতে হবে। আজকে যারা ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ী আপনারাও এই উন্নয়নের অংশীদার। আপনাদেরকে উচ্ছেদ নয়, প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখেছেন। আমরা সকলে হলাম সেই স্বপ্নের সোনার বাংলার একজন সহযোগিতার করা কর্মী। বিআইডব্লিউটিএর কাজ হলো নরসুন্দরের মতো। মানে যেখানে নদীতে চর পড়েছে, সৌন্দর্য নষ্ট হয়েছে তা ফিরিয়ে আনা।
তিনি বলেন, দেশের যে কোন বড় ধরনের উন্নয়ন কাজে প্রথমে যারা সম্পদ, অর্থ ও বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেন, তারা স্মরনীয় হয়ে থাকেন। পরবর্তী প্রজন্মের জন্য এটি উদাহরণ হয়ে থাকে। চাঁদপুর নামে জনপদ কেন পরিচিত। তা হচ্ছে চাঁদপুরের নদী ও ইলিশ। চাঁদপুরের নদীগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। আশা করছি আপনারা সকলে নিজস্ব জায়গা থেকে সরকারের উন্নয়ন কাজে সহযোগিতা করবেন।
কর্তৃপক্ষ জানান, দেশে এখন সদরঘাটের পরে যাত্রী সংখ্যা বিবেচনা করে চাঁদপুর একটি গুরুত্বপূর্ণ নৌ-বন্দর। দীর্ঘদিন যাবত এ বন্দরের কোন উন্নয়ন হয়নি। বর্তমান সরকার এ বন্দরের উন্নয়ন করতে যথেষ্ট উৎসাহী। চাঁদপুরবাসীর দিকে তাকিয়েই এ সরকার ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের উদ্যোগে একটি আধুনিক নৌ বন্দর নির্মান করবে। আশাকরা যাচ্ছে, অতি শিগগিরই নৌ বন্দর নির্মাণের কাজ শুরু করবো।
অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ও আধুনিক নৌবন্দর নির্মাণ কাজের প্রকল্প পরিচালক মোঃ আইয়ুব আলীর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ওসমান গনি পাটোয়ারী, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) এ.এস.এম মোসা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইয়াসির আরাফাত।
উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন, চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শানজিদা শাহনাজ, চাঁদপুর প্রেসক্লাব সভাপতি এ এইচ এম আহসান উল্লাহ, চাঁদপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র ফরিদা ইলিয়াছ, কাউন্সিলর মোঃ সফিকুল ইসলামসহ সুধীজন। বিশ্ব ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন “বাংলাদেশ আঞ্চলিক নৌ-পরিবহন প্রকল্প-১” শীর্ষক প্রকল্পের অধীনে চাঁদপুরে আধুনিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল নির্মাণ কাজ খুব শিগরিই শুরু হবে। সেই লক্ষে নির্মাণ কাজটি শুরু করার পূর্বে ৭৪ জন ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীকে এই অর্থ দেয়া হলো।
নৌবন্দর নির্মাণ কাজের প্রকল্প পরিচালক আইয়ুব আলী জানান, ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীরা চেক প্রাপ্তির এক সপ্তাহের মধ্যে বর্তমান স্থান ত্যাগ করতে হবে। তার সে স্থানে আমাদের নিয়মতান্ত্রিক ভাবে যথাযত নিয়মে কাজ শুরু হরা হবে। এদিকে বিশ্বব্যাংক চাঁদপুর নৌ বন্দর নির্মাণের জন্য প্রায় একশ’ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে। দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এ জুন মাস থেকে এর নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে। এই জন্য ভারতীয় দুটি এবং বাংলাদেশের আরো একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে কাজ শুরু করে আগামী দুই বছরের মধ্যে কাজ শেষ করার চিন্তা রয়েছে।