স্টাফ রিপোর্টার: রমজানে যাত্রী চলাচল কম করা, যাত্রী ভাড়ার তুলনায় নিম্নমানের সেবা সার্ভিস প্রদান, কেবিন ভাড়া বেশি নির্ধারণ করাসহ নানা সংকটে যাত্রী কমে গেছে। তাই সিডিউল মোতাবেক সব লঞ্চ চলাচল করছে না।
এর ফলে চাঁদপুর-ঢাকা নৌরুটে লঞ্চের নির্ধারিত সময়ের সিডিউল অনেকটা ভেঙে পড়েছে।
বর্তমানে যাত্রী সংকটে প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে লঞ্চ চলাচল। মালিকদের অব্যাহত লোকসান গুনতে হচ্ছে বলে বড় বড় লঞ্চগুলোর চলাচল প্রায় বন্ধ রেখেছে লঞ্চ মালিক কর্তৃপক্ষ; এমনটি জানান বিভিন্ন লঞ্চের বেশ কয়েকজন স্টাফ।
সোনারতরী, ঈগল-৩, রহমত, রায়হান-১, আবে জমজম-৭, রফরফ, রফরফ-২, বোগদাদীয়া-৭, অ্যাডভেঞ্চার ৫ ও ময়ূর-৭-এর মতো লঞ্চগুলোর চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। সকাল ৮টায় ঈগল-৭ মঙ্গলবার থেকে বন্ধ হয়ে গেছে। সন্ধ্যার ইমাম হাসান দুটি লঞ্চের মধ্যে চলছে একটি।
বর্তমানে যাত্রী কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন চাঁদপুর লঞ্চ টার্মিনাল সংশ্লিষ্ট অটোবাইক, সিএনজিচালক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং ঘাটে দিনমজুরের কাজ করা মানুষ। লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখায় অনেক লঞ্চের স্টাফরাও এখন বেকার জীবন কাটাচ্ছেন। চাঁদপুর লঞ্চঘাটের একাধিক ঘাট সুপারভাইজার জানান, লঞ্চ চালিয়ে জ্বালানি তেলের খরচ উঠছে না। তাই ঢাকা-চাঁদপুর রুটের অর্ধেক লঞ্চই এখন চলছে না।
আবে জমজম লঞ্চ ও হাইস্পিড গ্রুপ কোম্পানির মালিক পক্ষের প্রতিনিধি বিপ্লব সরকার জানান, আসলে মানুষ এখন যাতায়াত কম করছেন। এ অবস্থা শুধু নৌপথেই নয়। সড়ক পথে চাঁদপুরসহ রায়পুর লক্ষ্মীপুর সড়কেও যাত্রী কমে গেছে।
বিআইডব্লিউটিএ চাঁদপুর লঞ্চঘাটের পরিবহণ পরিদর্শক মো. শাহ আলম জানান, সিডিউল মোতাবেক এ রুটে ২৫টি লঞ্চ চলাচল করত। রোজার শুরু থেকে যাত্রী খুবই কম হচ্ছে। তাই লোকসানের কারণে বড় বড় লঞ্চগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, যাত্রীর চাপ না থাকায় এখন ছোট আকারে ১১-১২টি লঞ্চ চলাচল করলেও ঈদের এক সপ্তাহ আগে থেকে সব লঞ্চই চলবে।
চাঁদপুর লঞ্চঘাটে গিয়ে দেখা যায়- আগের মতো লঞ্চে যাত্রী উঠানোর হাঁকডাক নেই। নেই ঘাটে যাত্রীদের আনাগোনা।
রফরফ লঞ্চের চাঁদপুর ঘাট ম্যানেজার মো. ইউসুফ আলী বলেন, চাঁদপুর থেকে ঢাকা যেতে আমাদের লাস্ট ট্রিপে ৬০ জন ডেক যাত্রী হয়েছে। আর কেবিন ভাড়া হয়েছে ২-৩টি। এতে বর্তমানে প্রতিবার ঢাকা আসা যাওয়ায় লঞ্চ মালিকের মোটা অংকের লোকসান দিতে হয়। তাই এ রুটে তাদের দুইটি লঞ্চ বন্ধ রাখা হয়েছে।
একই অবস্থা চলাচলরত কয়েকটি লঞ্চের ক্যান্টিন মালিকদেরও। যাত্রী সংকটে তাদের ক্যান্টিনে বিক্রি অনেক কমে গেছে। মোটা অংকের টাকা ভাড়া ও অ্যাডভান্স দিয়ে ক্যান্টিন নিয়ে অনেকে প্রতিদিন লোকসান গুনছেন বলে জানান ক্যান্টিন মালিকরা।