স্টাফ রিপোর্টার : শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ভয়াবহ একটি অগ্নিকাণ্ড হয়েছে, ‘এটির যথাযথ একটি তদন্ত কমিটি হবে। তারা বের করবে এটি দুর্ঘটনা নাকি পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে। তবে কেউ কেউ সরকারকে দোষারপ করছে, তারা তো সবসময়ই করে আসছে। এরকম একটি অগ্নিকাণ্ড হলে ক্ষতি কার? এই ধরণের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডকে সামাল দেওয়া, তারপর এসব মানুষগুলোকে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা, পুরো দায়-দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে। কাজেই সরকারের তরফ থেকে এমন কিছু হওয়া, যারা চিন্তা করেন তারা কী ধরণের বিকৃত মানসিকার মানুষ আমি বুঝি না! ঘটনার নেপথ্য খুঁজে বের করতে তদন্ত কাজ চলছে। তা ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পাশে এই সরকার আছে এবং আগামী দিনেও থাকবে।’
৫ এপ্রিল বুধবার বিকেলে চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ী ও দোকান মালিকদের প্রতি সমেবদনা জানিয়ে দীপু মনি বলেন, এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে তারা ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বিশেষ করে ঈদকে সামনে রেখে অনেকেই ধার-কর্য করে মালামাল তুলেছিলেন।
এটি একটি বিপর্যয় তাদের জন্য। আমি আশা করি আমরা এবার যখন ঈদ করবো, ঈদে আমরা যে যা খরচ করবো, আমরা যদি আমাদের সামর্থ অনুযায়ী একটুখানি আমাদের ভাইদের পাশে দাঁড়াতে পারি এবং উদ্যোগ নেই, তাহলে আমি মনে করি সেটা খুব ভালো হবে। আশা করি আমরা সবাই সেটা করবো।
মন্ত্রী বলেন, আপনারা দেখবেন আওয়ামী লীগ সরকারের ইতিহাস। যারা স্বল্প আয়ের মানুষ এবং যারা ছোট ব্যবসা করেন, তাদের পাশে কোন সরকার দাঁড়িয়েছে? এই দেশের ঋণখেলাপির জন্ম দিয়েছে জিয়াউর রহমান ও তার দল বিএনপি। এই দেশে যত হাওয়া ও খোয়া ভবন বানিয়েছে বিএনপি। আর আওয়ামী লীগ কী করেছে, গৃহহীন মানুষদেরকে ঘর করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ আগুন দেয় না, আওয়ামী লীগ আগুন নিভিয়ে মানুষকে সুস্থতায় ফিরিয়ে আনে।
তিনি আরও বলেন, আগুনসন্ত্রাসী কারা? আগুন সন্ত্রাসী হচ্ছে বিএনপি-জামায়াত। কাজেই এই আগুনের পেছনে যদি কোনো মানুষের হাতকে খুঁজতে যান, তাহলে সবার আগে যাওয়া উচিৎ যারা অগ্নিসন্ত্রাসী। যারা অগ্নিসন্ত্রাসী ঠেকিয়ে দেশের মানুষের জানমাল রক্ষা করে, তারা আওয়ামী লীগের দিকে কখনো অঙ্গুলি নির্দেশ করা যেতে পারে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একক ভর্তি পরীক্ষা সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আগামী বছর থেকে একক সমন্বিত একটি পরীক্ষা নেওয়া। যেগুলো বিশ্বের বহু উন্নত দেশে হয়। যেটি হয়তো বছরে একাধিকবার হবে। যেখানে সকল ধারার শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করতে পারবে। এতে অনেকগুলো বিষয় অন্তর্ভুক্ত হবে। এটির জন্য একটি জাতীয়ভাবে র্যাংকিং তালিকা তৈরি হবে। সে তালিকা অনুযায়ী তাদের ভর্তির ব্যবস্থা হবে।
দীপু মনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে আমাদের মেডিকেল কলেজে একই পদ্ধতিতে হয়ে আসছে। এটি একেবারে কোনো নতুন পদ্ধতি তা নয়। সেখানে যেমন সকল প্রাইভেট ও সরকারি মেডিকেল কলেজগুলো আসে। এখানে সকল বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আসবে। তাই এটার কী পদ্ধতি হবে, কী নাম হবে এবং সব খুঁটিনাটি বিষয় ঠিক করবার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন খুব সহসাই একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি করে দেবে। তারা সব নির্ধারণ করে আলাপ-আলোচনা, দেশের বাহিরে কীভাবে হয়, সেগুলো সব দেখে নির্ধারণ করে দেবেন এবং তারপর এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা জজকোর্টের পিপি রনজিত রায় চৌধুরী, সদর সার্কেলে পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইয়াসির আরাফাত সজীব, পরিষদ চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান, ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম রোমান, ভাইস চেয়ারম্যান আইউব আলী বেপারী, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আবিদা সুলতানা প্রমুখ।
বিকেলে শিক্ষামন্ত্রী চাঁদপুর হাসান আলী স্কুল মাঠে ছাত্রলীগের আয়োজনে দুস্থ ও অসহায়দের মাঝে ইফতারসামগ্রী বিতরণ করেন। এতে চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েলসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।