এস.এম ইকবাল, ফরিদগঞ্জ: চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে দ্বিতীয় শ্রেণির শিশু বলাৎকারের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এলাকায় নিন্দার ঝড় উঠেছে।
দুষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেছেন শিশুর পরিবার ও এলাকাবাসী। খবর শুনে পুলিশ অভিযুক্তের বাড়ি গিয়ে খোঁজ খবর নিয়েছে। এলাকার একটি চক্র ঘটনা ধামাচাপা দিতে ফন্দি আঁটছেন বলে সূত্র দাবী করেছে।
এ রিপোর্ট লেখার সময় (গতকাল রাত আট ঘটিকা) পর্যন্ত থানায় মামলা দায়ের হয়নি। ফরিদগঞ্জ পৌর এলাকার পশ্চিম বড়ালী দারুসসুন্নাত মডেল মাদরাসায় বলাৎকারের ঘটনা ঘটেছে মঙ্গলবার বিকাল আনুমানিক সাড়ে পাঁচ ঘটিকায়।
পুলিশ, ঘটনার শিকার শিশু ও তার বাবা জানিয়েছে, বলাৎকারের শিকার শিশু (৮) মাদরাসার দ্বিতীয় শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। মাদরাসার হাফেজি শিক্ষক ইমাম হোসেন (২৯) এর কাছে তারা কয়েকজন প্রাইভেট পড়ে। প্রাইভেট পড়ানো হয় প্রতিষ্ঠানের একটি শ্রেণিকক্ষে। মঙ্গলবার পড়া শেষে ঘটনার শিকার শিশুকে রেখে অন্যদের আগে ছুটি দেয়া হয়।
এরপর, দরজা আটকিয়ে শিশুর সাথে যাবতীয় অনৈতিক কাজ ও বলাৎকার করা হয়। ঘটনার পর শিশুকে নানা কথা বলে বাড়ি যেত বলেন অভিযুক্ত ইমাম হোসেন। শিশু বাড়ি গেলে তাকে বিষন্ন দেখেন তার মা। জিজ্ঞেস করলে মা’র কাছে ঘটনা খুলে বলে। শিশু জানায় এর আগেও দুইদিন তার সঙ্গে একই কাজ করা হয়েছে। এ সব ঘটনা কাউকে না জানানোর জন্য শাসানো হয়েছে। প্রশ্ন করলে শিশু বলে আজ খুব কষ্ট পাইছি, তাই জানাইছি। শিশুর বাবা ও মা বলেন, এ জঘন্য অপরাধের বিচার চাই।
শিশুর মামা ও বাবা জানিয়েছেন, থানায় উপস্থিত হয়ে তারা ওই ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ করেছেন। এর প্রেক্ষিতে রাত আনুমানিক সাড়ে ১০ ঘটিকায় এস.আই. আনোয়ার হোসেন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে অভিযুক্তের চরহোগলা গ্রামের বাড়িতে গেছেন। সেখানে অভিযুক্তের বাবা মাওলানা আবদুল জাব্বার এর সঙ্গে কথা বলেছেন। ওই সময় ঘটনার শিকার শিশু, তার বাবা ও মামাসহ আশেপাশের গ্রাম ও বাড়ির অন্তত ২০ জন্য ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যপারে মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা হেলাল উদ্দিন বলেছেন, ঘটনাটি আমি জেনেছি। জেনে মাদরাসায় গিয়ে অন্যঅন্য শিক্ষকেদের সঙ্গে কথা বলেছি ও অভিযুক্ত হাফেজ ইমাম হোসেনকে তাৎক্ষণিক বরখাস্ত করেছি।
এদিকে, বসত বাড়িতে খোঁজ নিয়ে অভিযুক্ত হাফেজ ইমাম হোসেনকে পাওয়া যায়নি। এলাকাবাসী জানিয়েছেন, গতকাল সারাদিন তাকে এলাকায় দেখা যায়নি। তার বাবা মাওলানা আবদুল জাব্বার বলেছেন, ঘটনা শুনে আমি তাকে আমার ফার্মেসীতে জুতা পেটা করেছি। ওই সময় হাফেজ ইমাম হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করেছে কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেছেন, না, করেনি।
জানতে চাইলে এস.আই. আনোয়ার হোসেন বলেছেন, ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেছে। ভিকটিমের পরিবার লিখিত অভিযোগ করেনি। মৌখিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে অফিসার ইনচার্জের নির্দেশে প্রাথমিক তদন্ত করা হয়েছে।
থানার পরিদর্শক (তদন্ত) প্রদীপ মন্ডল বলেছেন, প্রাথমিক তদন্ত শেষে ভিকটিমকে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। ভিকটিমের অভিভাবক অভিযোগ নিয়ে আসতেছেন। আসার পর মামলা দায়ের হবে।