প্রেস বিজ্ঞপ্তি : নিজ”ডিজিটাল প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন, জেন্ডার বৈষম্য করবে নিরসন” এই প্রতিপাদ্যকে উপজীব্য করে জেলা প্রশাসন, জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর ও জাতীয় মহিলা সংস্থার আয়োজনে সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), চাঁদপুরের সহযোগিতায় গতকাল ৮মার্চ ২০২৩ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে র্যালি ও র্যালি পরবর্তী আলোচনা সভা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।
চাঁদপুর জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক নাছিমা আক্তারের সঞ্চালনায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইমতিয়াজ হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান বলেন, নারীদের প্রতি বৈষম্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এটি একটি বৈশি^ক চ্যালেঞ্জও।
সরকার আজ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে নারীদের পদায়ন করেছে। নাটোর জেলায় প্রত্যেকটা উপজেলার ইউএনও নারী। এতেই বুঝা যাচ্ছে নারীরা প্রতিনিয়ত এগিয়ে যাচ্ছে। নারীদের উন্নয়নে সরকারের ৮ম বার্ষিকী পরিকল্পনায়ও ৪টি নীতির কথা বলা আছে।
তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র নারীদের অধিকার আদায়ের কথা বললে চলবে না। কাজও করতে হবে। আমাদের মায়েরা ও বোনেরা যেন সমাজে সমানভাবে নিরাপদে চলাফেরা করতে পারে এজন্য আমাদেরকে পরিবেশ তৈরি করতে হবে। তিনি আরও বলেন, নারীদের উন্নয়নের জন্য নারীদেরও কিছু দায়িত্ব আছে। এই দায়িত্বসমূহ আমাদেরকে সুচারুভাবে পালন করতে হবে। আমাদের উন্নয়ন হয়েছে কিন্তু মানসিকতার পরিবর্তন এখনো হয়নি। তাই নারী উন্নয়নে আমাদেরকে মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে। নারীদের পাশাপাশি পরুষদেরও নারীদের উন্নয়নে কাজ করতে হবে এবং এগিয়ে আসতে হবে। তিনি র্যালি ও আলোচনা সভায় উপস্থিত হওয়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পুলিশ সুপার মোঃ মিলন মাহমুদ বিপিএম (বার) বলেন, নারীরা আজ সমাজে নিজেদেরকে ভালো অবস্থানে নিয়ে যেতে পেরেছে। বিভিন্ন নিয়োগেও নারীদের কোটা রয়েছে এবং তা বাস্তবায়িতও হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, নারীদের বঞ্চনা ও সমস্যাগুলো রাতারাতি কমে যাবে না। এটার জন্য আমাদেরকে উদ্যোগ নিতে হবে। তিনি বলেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীদের জন্য সুযোগ তৈরি হয়েছে। চাঁদপুর পুলিশে বারোশত পুলিশের মধ্যে বর্তমান দেরশত নারী পুলিশ রয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমরা নারীদের সহায়তার জন্য আলাদা ডেস্ক করেছি যাতে নারীরা হয়রানীর শিকার না হয়। তিনি বলেন, নারীদের প্রতি অসম্মান, হয়রানী ও নির্যাতন প্রতিরোধে বিশেষ ‘হটলাইন’ সার্ভিস চালু আছে।
স্বাগত বক্তব্যে সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), চাঁদপুরের সভাপতি ডাঃ পীযুষ কান্তি বড়ুয়া বলেন, প্রথমে কৃষি উদ্ভাবক হিসেবে নারীদেও প্রাধান্য দিতেই হবে। পোষাক শিল্প থেকে শুরু করে দেশের যেকোন উন্নয়নে নারীদের ভূমিকা অনেক। সংবিধানেও নারী পুরুষের সমান অধিকারের কথা বলা হয়েছে।
এসডিজির যে সতেরটি লক্ষ্য রয়েছে তাতেও নারী পুরুষের সমতার কথা বলা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন যদি সঠিকভাবে চালিয়ে নেওয়া যায় তাহলে নারীদের জন্য আরও বেশি শোভন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মানে নারীদের ভূমিকা রয়েছে। সনাক ও টিআইবি নারী উন্নয়নে যেসকল কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে তিনি তা তুলে ধরেন। এছাড়াও তিনি দিবস উপলক্ষে সনাক-টিআইবি’র ধারণাপত্র তুলে ধরেন এবং বেশ কিছু সুপারিশ উপস্থাপন ধরেন।
র্যালি ও আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোসাম্মৎ রাশেদা আক্তার, চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সানজিদা শাহনাজ, জাতীয় মহিলা সংস্থা, চাঁদপুর-এর চেয়ারম্যান মাসুদা নুর খান।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারীবৃন্দ, চাঁদপুরের বিভিন্ন এনজিও প্রতিনিধিবৃন্দ, বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীবৃন্দ, সনাক-চাঁদপুরের সদস্যবৃন্দ এবং অ্যাকটিভ সিটিজেন গ্রুপ ও ইয়েস গ্রুপের সদস্যবৃন্দ।