স্টাফ রিপোর্টার : যুবকের কথা রং নাম্বারে পরিচয় সেই থেকেই গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। কথোপকথনের এক পর্যায়ে বাড়ির ঠিকানা আদান প্রদান। একই গ্রামের বাসিন্দা তারা। মেয়ের আগে বিয়েও হয়েছে তবে স্বামীর সংসার ভেঙ্গে তার সাথে নতুন করে ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখিয়ে হাতিয়ে নিয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকা।
এখন বিয়ে করতে নারাজ। তাকে বিয়ে করবে না ফিরিয়ে দিবে দুই লাখ টাকা সালিশি বৈঠকে ভাঙা হয় এমনটাই। টাকা দিতে দেরি তাগাদা দিতে গেলেই শশুর, শাশুড়ী ও দেবরসহ গাছের সাথে বেঁধে জখম করা হয় তাকে। হামলাকারী দেলোয়ার, ফোরকান, সাজুদাসহ ৫/৬ জন যুবক। ৯৯৯ কল পেয়ে যুবককে উদ্ধার করে পুলিশ।
তবে অভিযুক্তরা বলছে, ওই নারীর সাথে কোনো সম্পর্ক নেই। অহেতুক বাড়ির সামনে এসে গালমন্দ করে এবং ওই নারীর সামনে বিবস্ত্র হয়ে দাঁড়ালে ওই ছেলেকে তাড়া করলে হাটু গেড়ে পড়ে জখম হয়। তুলে এনে গাছের সাথে বেঁধে রাখে। কোনো মারধরের ঘটনা ঘটেনি।
গত রোববার রাতে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলা ৬নং বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের কোন্দ্রা মিজি বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।
মোল্লা বাড়ির আসলাম মোল্লার ছেলে মাসুদ প্রবাসে থাকা অবস্থায় একই গ্রামের মিজি বাড়ির ইয়াছিনের স্ত্রী রেখা আক্তারের সাথে প্রেমের সম্পর্ক হয়। ইয়াসিনের সংসার ভেঙে মাসুদের সাথে নতুন করে সংসার করবে বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ মাসুদের। দেশে এসে বিয়ের কথা বললে রেখা রাজি হয়নি। এই বিষয় নিয়ে শালিসি বৈঠকে দুই লাখ টাকা দিবে বলে রেখা। সেই টাকা চাইতে গেলেই রেখা আক্তার তার শশুর, শাশুড়ী ও দেবর’সহ মাসুদকে গাছে বেঁধে মারধর করে বলে অভিযোগ করেন।
যুবক মাসুদ বলেন, প্রবাসে থাকা অবস্থায় বিয়ের কথা বার্তা ঠিক ছিল, সেই সুবাদে কাতার থেকে এ মহিলাকে আমি বিভিন্ন সময় কয়েক লক্ষ পাঠাই। দেশে আসার পর টাকা হাতিয়ে নিয়ে বিয়ে প্রত্যাক্ষান করে। বিষয়টি সমাধানের জন্য গত ৬ মাস পূর্বে আমাকে ২ লক্ষ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু টাকা না দিয়ে তারা আমাকে পথে আটক করে অতর্কিত এ হামলা চালায়।
বড় বোন লায়লা বেগস বলেন, মাসুদ বিদেশ যায় ২০১৪ সালে আর ২০১৮ সালে দেশে আসে। বিয়ের জন্য দেশে আসলে বিয়ে না বসে তার পূর্বের স্বামীর সাথে সংসার করবে বলে জানায়। তখন সেই স্বামী ইয়াছিন বিদেশ ছিল। মূলত পরকীয়া সম্পর্ক থেকে এ ঘটনার সৃষ্টি।
প্রত্যক্ষদোষী রাসেল বলেন, আমি গিয়ে দেখি তারা মাসুদকে মারধর করতেছে। পরে দোকান্দার জসিম ও ঝুটন, বাবলুসহ আমরা এগিয়ে গিয়ে তাদের হাত থেকে মাসুদকে রক্ষা করার চেষ্টা করেছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রেখা আক্তার বলেন, মাসুদের সাথে তার কোনো সম্পর্ক নেই। অহেতুক বাড়ির সামনে এসে গালমন্দ করলে বিরক্ত হয়ে রোববার রাতে জবাব দিলে রেখার সামনে এসে বিবস্ত্র হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। পরে রেখা আক্তার তার শশুর, শাশুড়ী ও দেবর মাসুদকে তাড়া করলে হাটুগেড়ে পড়ে জখম হয় মাসুদ। পরে তাকে তুলে এনে গাছের সাথে বেঁধে রাখেন রেখা আক্তার। তবে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেন রেখা।
রেখা আক্তারের ছেলে ইমান হাসান জানান, মাসুদ মাঝে মধ্যে তাদের ঘরে এসে বিরক্ত করে। একদিন ফ্রিজের উপর মোবাইল রেখে তার মায়ের সাথে ধস্তাধস্তির ভিডিও করে সেটা দিয়ে ব্লেক মেইল করে মাসুদ তার বাবার কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়।
দুই পক্ষের এইসব বিষয় নিয়ে থানা পুলিশের মাধ্যমেও বৈঠক হয়েছে বলে জানান এলাকাবাসী।
রোববারের ঘটনায় দু’পক্ষই থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দায়ের করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা যায়।