ফরিদগঞ্জে কবিরাজকে পিটিয়েছে রোগীর স্বামী

এস. এম ইকবাল/মামুন হোসাইন ফরিদগঞ্জ: কাতার প্রবাসী স্বামী রুবেল ভূঁইয়া (৩২)। দেশে এসেছেন ২০ দিন পূর্বে।

বসত ঘর নির্মান নিয়ে স্ত্রীর সাথে স্বামীর অভিমান। দেশে আসার পর থেকে রুবেল থাকছেন আলাদা বিচানায়। কি কারনে আলাদা থাকছেন রুবেল! সন্দেহ করে স্বামীর আলাদা থাকার কারন জানার জন্য স্ত্রী স্বরনাপন্ন হয় কবিরাজের কাছে। কবিরাজ জানায়, আপনার স্বামীর শারীরিক অক্ষম তাই আলাদা থাকছে। নিরাকারের জন্য কবিরাজ দেন কবিরাজি চিকিৎসা।

এতেই বাজে বিপত্তি। রুবেল ঘটনাটি শুনে কবিরাজের কাজে জানতে আসেন। এক পর্যায়ে কবিরাজের সাথে তার বসত ঘরে (ভাড়া বাসায়) রুবেলের সাথে কবিরাজের কথা কাটাকাটি হয়। রুবেল কাঠের টুকরো দিয়ে কবিরাজকে বেদঢ়ক মারধর এবং রক্তাক্ত জখম করে।

৫ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার ফরিদগঞ্জ বাজারে এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। হামলার ঘটনায় হামলাকারী রুবেলকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে জনতা। ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপজেলা জুড়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

জানাযায়, কবিরাজ মাহাবুবুর রহমান (৬০), ভোলা জেলার বোরহান উদ্দিন উপজেলার দক্ষিণ ভাটামারা গ্রামের মৃত কারী মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে। তিনি ফরিদগঞ্জ মজিদিয়া কামিল মাদ্রাসার শিক্ষক হিসেবে চাকরীরত ছিলেন। গত মাস খানেক পূর্বে তিনি চাকুরী থেকে অবসর গ্রহণ করেন তিনি। চাকুরী করার পাশাপাশি মাদ্রাসার পাশে ভান্ডারী মহল এলাকায় একটি ভাড়া বাসাতে থেকে দীর্ঘদিন যাবৎ মানুষকে কবিরাজি চিকিৎসা দিয়ে আসছেন।

প্রতিদিনের ন্যায় ৫ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার রাতে অন্য এক রোগীকে চিকিৎসা দিচ্ছিলেন তিনি। রোগী সেজে আসেন রুবেল হোসেন। এসময় তর্ক-বিতর্কের জেরে রুবেল হোসেন কবিরাজের ওপর কাটের টুকরো দিয়ে হামলা করে। চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা এসে কবিরাজকে আহতবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। এ সময় জনতা অভিযুক্ত রুবেল হোসেনকে আটকে রেখে পুলিশে সোপর্দ করে।

অভিযুক্ত রুবেল উপজেলার গোবিন্দপুর (দ.) ইউনিয়নের পশ্চিম লাড়ুয়া গ্রামের মনু ভূঁইয়ার ছেলে। ব্যক্তি জীবনে তিনি ২ সন্তানের জনক কাতার প্রবাসী তিনি।

আহত কবিরাজ মাওলানা মাহবুবুর রহমান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ বিষয়ে কবিরাজের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বাসায় রোগী দেখতে ছিলাম। এমন সময় ওই যুবক এসে আমাকে বাহিরে গিয়ে একটি রোগী দেখার আমন্ত্রণ করলে আমি বারণ করি। এতে তিনি ক্ষীপ্ত হয়ে আমার ওপর হামলা করে, ওই যুবক আমার পরিচিত নয়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওই যুবকের নাম ঠিকানা আমার ডায়েরীতে লেখা আছে।

অভিযুক্ত রুবেল বলেন, আমি কাতার থেকে গত ১৪ ডিসেম্বর দেশে আসি। দেশে আসার পর দেখি আমার স্ত্রী আমার নির্দেশনা মোতাবেক বাড়ির কাজটি করেন নি। এতে তার উপর অভিমান করে আলাদা বিচানায় ঘুমিয়েছি। আমি শারীরিক অসুস্থ হলে আমার দু’সন্তান আসলো কিভাবে। কি লজ্জা জনক বিষয়। কবিরাজ কিভাবে জানলো আমি শারীরিক ভাবে অক্ষম, মূলত টাকার নেশায় কবিরাজরা চিকিৎসার নামে এই সব ভন্ডামী করে।

এদিকে হামলার শিকার কবিরাজ মাওলানা মাহবুবুর রহমান মজিদিয়া আলিয়া কামিল মাদ্রাসার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক হওয়ায় ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড.একেএম মাহবুবুর রহমানসহ নবীন-প্রবীর শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উক্ত ঘটনাকে সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে আখ্যায়িত করে বিচারের দাবী জানিয়েছেন।

বিষয়টি নিয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল মান্নান বলেন, এ ঘটনায় রুবেল নামে এক যুবক পুলিশি হেফাজতে রয়েছে। অভিযোগের আলোকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

সম্পর্কিত খবর