শাহমাহমুদপুরে স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ

মাসুদ হোসেন : চাঁদপুর সদর উপজেলার ৪নং শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নে নেশাগ্রস্থ স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।

নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড লোধেরগাঁও মিজি বাড়ির ওচমান মিজির ছোট মেয়ে রুমা আক্তার।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ৩ বছর আগে চাঁদপুর সদর উপজেলার ৪নং শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড বিমলেরগাঁও বৈদ্য বাড়ির আবুল কালাম বৈদ্যর পুত্র মোহাম্মদ মানিক এর সাথে একই ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড লোধেরগাঁও মিজি বাড়ির ওচমান মিজির ছোট মেয়ে রুমা আক্তারের সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়।

তাদের সংসার জীবনে দুই বছরের এক পুত্রসন্তান রয়েছে। মোহাম্মদ মানিক বৈদ্য বর্তমানে টঙ্গী উত্তরখান বড় বাগ এলাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসছেন। স্ত্রী রুমা আক্তার জানান, তার স্বামী ঐ এলাকার বিভিন্ন দুষ্ট প্রকৃতির লোকের সঙ্গে মিশে নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। তিনি বিয়ের পর বিভিন্ন সময় টাকা দাবি করে তাকে নির্যাতন করে। নির্যাতন থেকে বাঁচতে পর্যায়ক্রমে বাবার বাড়ি থেকে স্বামীকে কিছু টাকা এনে দেন স্ত্রী রুমা আক্তার।

গত ৩ জানুয়ারি রাতে তাদের সন্তানকে প্যান্ট পড়ানোকে কেন্দ্র করে ব্যাপকভাবে শারীরিক নির্যাতন করে রক্তাক্ত জখম করেন। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী একটি পল্লী চিকিৎসকের কাছে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাসায় আনেন।

পরদিন বুধবার (৪ জানুয়ারি) স্বামী মানিকের মোটরসাইকেল দিয়ে চাঁদপুর সদরের মহামায়া বাজারে এনে পৌঁছে দেন। আর তাদের সন্তান তার দাদা-দাদীর কাছেই রেখে আসেন। পরে রুমা আক্তারের পরিবারের লোকজন মেয়ের শারীরিক অবস্থা খারাপ দেখে ২৫০ শয্যা চাঁদপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা নেন। রুমা আক্তার আরো বলেন, তার স্বামী মানিক প্রায় সময়ই তাকে মারধর করেন। এর আগেও কয়েকবার শালিসি বৈঠক হয়েছে তার বিরুদ্ধে। তারপরও তিনি এমন কর্মকাণ্ড করেই যাচ্ছেন।

উক্ত ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মোহাম্মদ মানিক জানান, আমার স্ত্রী আমার সাথে সবসময়ই মুখে মুখে তর্ক করতো। সে একবার তার মায়ের কথা মত একটি অবুঝ শিশুকে রেখে তার মায়ের সাথে চলে যায়। তার মা ও তার কথাবার্তা খুবই উশৃংখল।

সেদিন রাতে সে আমার সাথে অশালীন ভাষায় কথাবার্তা বলে আমাকে ক্ষিপ্ত করলে রাগের মাথায় তাকে কিছুটা মারধর করি। পরে আমার মা ও ভাই তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আনেন। এবং পরদিন তার বাবার এলাকায় তাকে পৌঁছে দেই। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার বাচ্চা তার কাছে নিরাপদ নয়, তাই আমার সন্তানকে আমার কাছেই রেখে দিয়েছি। তবে আমি তিক্ত হয়েই এমনটা করেছি।

নির্যাতনের শিকার রুমা আক্তারের মা জানান, বিভিন্ন সময় যৌতুক নিয়েও ক্ষান্ত হয়নি মেয়ের জামাই মানিক। মঙ্গলবার রাতে আমার মেয়েকে মারধরের ব্যাপক আঘাতে মাথা ফেটে যায়। পরে সেলায় করা হয়েছে। এমন অবস্থায় আমার মেয়ে তার শিশুসন্তানকে নিয়ে কোথায় দাঁড়াবে। এর আগেও কয়েকবার তাকে নিয়ে বিচার বসানো হয়েছে।

এ বিষয়ে শাহমাহমুদপুরের ৯নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য কবির হোসেন রনি বলেন, তিন বছরের সাংসারিক জীবনে তাদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কয়েকবার শালিসি বৈঠক করা হয়েছে। তবে গত বুধবার মানিক তার স্ত্রীকে নিয়ে আমার বাড়িতে আসলে তার স্ত্রীকে বাবার বাড়িতে পৌঁছে দিতে বলি। তবে এ বিষয়ে সুষ্ঠু সমাধানের স্বার্থে উভয় পক্ষ বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার। যেভাবে ভালো হয় সেভাবেই করুক।

সম্পর্কিত খবর