চাঁদপুর খবর রির্পোট: চাঁদপুর সদর উপজেলার ৪নং শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়াডের শাহতলীস্থ বাদীনী গৃহবধু (স্ত্রী) রাজিনা আক্তারে নিযাতনের ঘটনায় ১নং আসামী স্বামী প্রতারক মোঃ আক্তার হোসেন মিজিকে গ্রেফতারে গত ২৬ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে শহরের ঘোলঘরস্থ পারুল বেগমের বাসায় পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান চালায় ।
উক্ত ঘটনার তদন্তকারী কমকতা চাঁদপুর মডেল থানার এসআই আব্দুল কুদ্দুসের নেতৃত্বে এই অভিযান চালায় ।১নং আসামী স্বামী প্রতারক মোঃ আক্তার হোসেন মিজি ও তার বোন পারুল বেগমকে গ্রেফতারে অভিযান চালায় ।
অভিযানের টের পেয়ে মোঃ আক্তার হোসেন মিজি ও পারুল বেগম পালিয়ে গেছে । তবে পুলিশ যে কোন ভাবে ১নং আসামী স্বামী প্রতারক মোঃ আক্তার হোসেন মিজিকে গ্রেফতার করা হবে এবং সে বিদেশ পালিয়ে যেতে পারবে না । এমনই তথ্য দিয়েছেন তদন্তকারী কমকতা চাঁদপুর মডেল থানা এস আই কুদ্দুস ।
জানা গেছে,গত সপ্তাহে চাঁদপুর মডেল থানার কাযালয়ে বাদীনী গৃহবধু (স্ত্রী) রাজিনা আক্তার ও তার দুশিশু সন্তানসহ পরিবারের সদস্যরা দেখা করতে গেলে ঘটনার বিস্তারিত শুনে চাঁদপুর মডেল থানা ওসি শেখ মুহসীন পুনরায় কঠোর এই র্নিদেশ দেন ।
উক্ত ঘটনার তদন্তকারী কমকতা চাঁদপুর মডেল থানার এসআই আব্দুল কুদ্দুসকে মোবাইলে তিনি এ নিদেশ দেন । গৃহবধু (স্ত্রী) রাজিনা আক্তার তার দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে চাঁদপুর মডেল থানা ওসি শেখ মুহসীনের সাথে সাক্ষাত করে ঘটনাটি অবহিত করলে তিনি ১নং আসামী স্বামী প্রতারক মোঃ আক্তার হোসেন মিজিকে দ্রুত গ্রেফতারের নিদেশ দেন ।
গৃহবধু (স্ত্রী) রাজিনা আক্তার দৈনিক চাঁদপুর খবরকে জানান, আমি আমার শিশুসন্তানদের নিয়ে ওসি স্যারের সাথে দেখা করি এবং আমার উপর নিযাতনের কাহিনী জানাই । ওসি স্যার সাথে সাথে চাঁদপুর মডেল থানার এসআই আব্দুল কুদ্দুস স্যারকে প্রতারক স্বামী মোঃ আক্তার হোসেন মিজিকে দ্রুত গ্রেফতার করতে নিদেশনা দেন । তিনি বলেন,আমি আমার দু’শিশুসন্তান নিয়ে এখন বিচারের আশায় প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছি ।আমার দু’সন্তানের ভবিষত অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে । আমি সংসার করতে চাই ।
আমি বিষয়টি চাঁদপুরের পুলিশ সুপার স্যার ও ওসির স্যারের সুদৃষ্টি কামনা করছি । আশা করছি সু-বিচার পাবো ।
জানা গেছে,সম্প্রতি চাঁদপুর সদর উপজেলার ৪নং শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়াডের শাহতলীস্থ গৃহবধু রাজিনা আক্তার(৩৪)কে মারধর,নিযাতন ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
নিযাতিতা গৃহবধু রাজিয়ার পিতা পিতা-মৃত জামাল মিজি, মাতা-জুলেখা বেগম শাহতলী চাঁদপুর সদর বাদী হয়ে এই অভিযোগ দাখিল করেন ।
এদিকে অভিযোগ উঠেছে আসামী মোঃ আক্তার হোসেন মিজি ও পরিবারকে বাঁচাতে স্থানীয় উপাদী ইউনিয়নসহ আশ্বে-পাশ্বের বিভিন্ন ইউনিয়নের একাধিক জনপ্রতিনিধি ও রাজনীতিক নেতারা উঠে পেড়ে লেগেছে । আসামীর কাছ থেকে আথিক সুবিধা নিয়ে থানায় জোর তদবির করছে । ওই পক্ষ এখন আথিক সুবিধা পেয়ে আসামীর পক্ষে ওকালতিতে ব্যস্ত । প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করছে । সেই সাথে বাদীনীর বিরুদ্ধে নানা মিথ্যা বানোয়াট অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে ।
অারো অভিযোগ উঠেছে ,শাহমাহমুদপুর ইউনিয়ন পরিষদও বিবাদী পক্ষকে তথ্য দিয়ে নানা সহযোগিতা করছে । মামলা থেকে বাঁচতে ঘটনাটি ধাপাচাপা দিতে জোর তদবির চালিয়ে যাচ্ছে ।
যেখানে দু’শিশু সন্তানের জননী নিযাতিত গৃহবধূ রাজিয়ার ন্যায় বিচার পাওয়ার জন্য কাজ করবে,সেখানে তাকে নানা অপবাদ ও অপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে একাধিক পক্ষ । মিথ্যা অপবাদ দিয়ে নিযাতন করে তাকে ঘর ছাড়া করেছে প্রতিপক্ষ । বিদেশ থেকে তালাক দেওয়ার সুযোগ না থাকলেও তাও বলে বেড়াচ্ছে প্রতিপক্ষ । কারণ দূতাবাদের মাধ্যমে তালাক দিতে হয়,সেই নিয়মও তারা পালন করেনি প্রতিপক্ষ । এছাড়াও তালাকের কাগজ গ্রহন করেনি স্ত্রী রাজিনা ।
গৃহবধূ রাজিয়ার উপর দিনরাত শারিরীক ও মানষিক নিযাতন করছে আসামীপক্ষ ।
জানা গেছে,১৬সেপ্টেম্বর (শনিবার)প্রতারক বিদেশ প্রেরত স্বামী মোঃ আক্তার হোসেন মিজি (৪২), পিতা-মৃত সিরাজ মিজি, মাতা-খতেজা বেগম কে প্রধান আসামী করে ৬জনের বিরুদ্ধে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা করা হয়।
মামলায় অপরাপর আসামীরা হলেন -২। খতেজা বেগম (৬৫), স্বামী-মৃত সিরাজ মিজি, মাতা-অজুফা খাতুন, ৩। পারুল বেগম (৪৮), স্বামী- মিজান গাজী, পিতা-সিরাজ মিজি, মাতা-খতেজা বেগম, সর্ব সাং- বহরী, পোঃ আড়ং বাজার, থানা-মতলব দক্ষিন, জেলা-চাঁদপুর, বর্তমান- ভাই-বোন বিলাস, হোল্ডিং নং ০৮৯৫-০১, ষোলঘর, বিটি রোড, থানা ও জেলা-চাঁদপুর, ৪। মোঃ শাহজাহান (০৫৩), পিতা-অজ্ঞাত, মাতা-অজুফা খাতুন, সাং-মাষ্টার বাজার, থানা-মতলব দক্ষিন, জেলা-চাঁদপুর, ৫। মোঃ কামাল মিজি (৩০), পিতা-অজ্ঞাত, সাং-বহরী, পোঃ আড়ং বাজার, থানা-মতলব দক্ষিন, জেলা-চাঁদপুর, ৬। মোঃ জাকির মিজি (৩২), পিতা-মোঃ লোকমান মিজি, মাতা-ফজর বানু, সাং-বহরী, পোঃ আড়ং বাজার, থানা-মতলব দক্ষিন, জেলা-চাঁদপুর।
আরো অভিযোগ রয়েছে প্রতারক বিদেশ প্রেরত স্বামী মোঃ আক্তার হোসেন মিজি প্রথম স্ত্রীর অনুমতি না নিয়ে গোপনে তার চাচাতো বোনকে বিয়ে করেছে । যা ফৌজদারী আইনে আরেকটি অপরাধ ।
থানার দাখিলকৃত অভিযোগে গৃহবধু রাজিনা আক্তার উল্লেখ করেন বিবাদীরা নারী নির্যাতনকারী, যৌতুকলোভী এবং এলাকার খারাপ প্রকৃতির লোক হয়। ১নং বিবাদী আমার স্বামী, ২নং বিবাদী শাশুড়ী, ৩নং বিবাদী ননাস, ৪নং বিবাদী মামা শশুড় এবং ৫ ও ৬নং বিবাদী সর্ম্পকে বাড়ীর দেবর হয়। গত ১৫/০৯/২০১০ খ্রিঃ তারিখে ১নং বিবাদীর সহিত আমার বিবাহ হয়।
বিবাহের পরে বিবাদী আমাকে নিজ বসত বাড়ীতে উঠাইয়া নিয়া পরস্পর স্বামী-স্ত্রী হিসাবে দাম্পত্য জীবন অতিবাহিত করাবস্থায় ১নং বিবাদীর ঔরসে এবং আমার গর্ভে একজন পুত্রসন্তান এবং একজন কন্যা সন্তান জন্মগ্রহন করে।
যাহাদের নাম যথাক্রমে মোঃ মারুফ (০৮) ও মোসাঃ আনা (১২)। ১নং বিবাদী পেশায় একজন প্রবাসি। বিগত প্রায় ০৫ বছর পূর্বে ১নং বিবাদী বাংলাদেশ হইতে বাহরাইনে যায়। ১নং বিবাদী বাংলাদেশ হইতে বিদেশে যাওয়ার পরে আমাকে ও আমার সন্তানদেরকে আমার পিত্রালয়ে রাখিয়া যায় এবং আমাদের কোন ভরন পোষন বহন না করিয়া আমাদেরকে খাওয়া পরনে কষ্ট দিতে থাকে। ১নং বিবাদীকে আমাদের ভরন পোষন প্রদানের জন্য বলিলে বিবাদীকে যৌতুক বাবদ আমার পিত্রালয় হতে নগদ পাঁচ লক্ষ টাকা নিয়া দেওয়ার জন্য আমাকে বলিত। ১নং বিবাদীর কথামত অন্যান্য বিবাদীরা প্রায় সময় আমার পিত্রালয়ে গিয়া আমাকে যৌতুকের টাকার জন্য নির্যাতন করিত। অনুমান ১৫ দিন পূর্বে ১নং বিবাদী বাংলাদেশে আসে।
১নং বিবাদী বাংলাদেশে আসার পরে আমার সহিত ঠিকমত সংসারবাসা না করিয়া ২-৬নং বিবাদীদের ইন্দনে ও উস্কানীতে আমাকে যৌতুকের জন্য নির্যাতন করা আরম্ভ করে। উক্ত অবস্থায় গত ১৪/০৯/২০২৩ তারিখ বিকাল অনুমান ০৫.০০ ঘটিকার সময় ১নং বিবাদী তাহার সঙ্গীয় ২-৬নং বিবাদীদেরকে সঙ্গে নিয়া আমার পিত্রালয়ে যায়।
এতে আরো উল্লেখ করা হয় বিবাদীরা আমার পিত্রালয়ে যাওয়ার পরে সকল বিবাদীরা আমাকে আমার পিত্রালয় হইতে যৌতুক ববাদ নগদ দশ লক্ষ টাকা ১নং বিবাদীকে দেওয়ার জন্য বলে। আমি কোনরুপ যৌতুক দিতে পারিব না বলিয়া যৌতুকের প্রতিবাদ করিলে ২-৬নং বিবাদীদের প্রত্যক্ষ ইন্দনে ও উস্কানিতে ১নং বিবাদী যৌতুকের টাকার জন্য আমাকে এলোপাথাড়ীভাবে মারধর করা আরম্ভ করে। বিবাদী আমাকে কাঠের আদল দিয়া এলোপাথাড়ীভাবে বাইরাইয়া আমার হাতে, বুকে-পিঠে, মাথায় সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফুলা জখম করে।
একপর্যায়ে বিবাদী তাহার হাতে থাকা কাঠের আদল ফেলে দিয়া তাহার দুই হাত দিয়া আমার গলা চাপিয়া ধরিয়া আমাকে শ্বাসরুদ্ধ করিয়া হত্যার চেষ্টা করে। ২-৬নং বিবাদীরা আমাকে এলোপাথাড়ীভাবে কিল-ঘুষি মারে। সাক্ষীরা সহ আশপাশ লোকজন আসিয়া আমাকে রক্ষা করে। আমি যৌতুকের টাকা না দিলে ১নং বিবাদী আমাকে আর আমার পিত্রালয় হতে উঠাইয়া নিবে না বলিয়া সকল বিবাদী চলিয়া যায়।
থানায় মামলার সাথে হাসপাতালের চিকিৎসার কাগজপত্র সংযুক্ত করা হয় ।
উল্লেখ্য এ ছাড়াও শাহতলী নিবাসী ২সন্তানের জননী গৃহবধু রাজিনা আক্তার (৩৪) বাদী হয়ে চাঁদপুর সদর আদালতে যৌতুক আইনে অপর একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গৃহবধু রাজিনা আক্তার পিতা হলেন পিতা-মৃত জামাল মিজি মাতা-জুলেখা বেগম শাহতলী চাঁদপুর সদর ।
১৭সেপ্টেম্বর (রবিবার) চাঁদপুর সদর আদালতে যৌতুক নিরোধ আইনের ৩ (তিন) ধারায় এ মামলা করা হয়। আদালত যৌতুক নিরোধ আইনের ৩ ধারায় মামলাটি আমলে নিয়ে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে নিদেশ দেন ।
এতে আসামীরা হলেন তার স্বামী মোঃ আক্তার হোসেন মিজি (৪২), কে প্রধান আসামী করে বেশকজনকে আসামী করা হয়। উক্ত মামলায় ঘটনাস্থলে তদন্তে যান এসআই লোকমান । ঘটনাস্থলে যৌতুক মামলায় স্বাক্ষীপ্রমান এবং ঘটনার সত্যতা পান ।