চাঁদপুর খবর রির্পোট: চাঁদপুর সদর উপজেলার ৪নং শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়াডের শাহতলীস্থ গৃহবধু রাজিনা আক্তার(৩৪)কে মারধর,নিযাতন ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
নিযাতিতা গৃহবধু রাজিয়ার পিতা পিতা-মৃত জামাল মিজি, মাতা-জুলেখা বেগম শাহতলী চাঁদপুর সদর বাদী হয়ে এই অভিযোগ দাখিল করেন ।
চাঁদপুর মডেল থানা সূত্রে জানা গেছে উক্ত ঘটনার ১নং আসামী রাজিয়ার স্বামী প্রতারক বিদেশ প্রেরত মোঃ আক্তার হোসেন মিজিকে খুঁজছে পুলিশ । এ যাবত একাধিক জায়গায় অভিযান চালায় পুলিশ । তাকে ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে । গ্রেফতার থেকে বাঁচতে আসামী মোঃ আক্তার হোসেন মিজি পালিয়ে বেড়াচ্ছে। পুলিশ তার মোবাইল (আসামী আক্তার মিজি মোবাইল নং ০১৬০৬২০৭৬৯১)টেকিং করছে। যে কোন মুহুতে তাকে গ্রেফতার করা হতে পারে । এমনই তথ্য দিয়েছেন তদন্তকারী কমকতা চাঁদপুর মডেল থানার এসআই আব্দুল কুদ্দুস ।
এদিকে অভিযোগ উঠেছে আসামী মোঃ আক্তার হোসেন মিজি ও পরিবারকে বাঁচাতে স্থানীয় উপাদী ইউনিয়নসহ আশ্বে-পাশ্বের বিভিন্ন ইউনিয়নের একাধিক জনপ্রতিনিধি ও রাজনীতিক নেতারা উঠে পেড়ে লেগেছে । আসামীর কাছ থেকে আথিক সুবিধা নিয়ে থানায় জোর তদবির করছে । ওই পক্ষ এখন আথিক সুবিধা পেয়ে আসামীর পক্ষে ওকালতিতে ব্যস্ত । প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করছে । সেই সাথে বাদীনীর বিরুদ্ধে নানা মিথ্যা বানোয়াট অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে ।
যেখানে দু’শিশু সন্তানের জননী নিযাতিত গৃহবধূ রাজিয়ার ন্যায় বিচার পাওয়ার জন্য কাজ করবে,সেখানে তাকে নানা অপবাদ ও অপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে একাধিক পক্ষ । মিথ্যা অপবাদ দিয়ে নিযাতন করে তাকে ঘর ছাড়া করেছে প্রতিপক্ষ । বিদেশ থেকে তালাক দেওয়ার সুযোগ না থাকলেও তাও বলে বেড়াচ্ছে প্রতিপক্ষ । কারণ দূতাবাদের মাধ্যমে তালাক দিতে হয়,সেই নিয়মও তারা পালন করেনি প্রতিপক্ষ ।
গৃহবধূ রাজিয়ার উপর দিনরাত শারিরীক ও মানষিক নিযাতন করছে আসামীপক্ষ ।
জানা গেছে,১৬সেপ্টেম্বর (শনিবার)প্রতারক বিদেশ প্রেরত স্বামী মোঃ আক্তার হোসেন মিজি (৪২), পিতা-মৃত সিরাজ মিজি, মাতা-খতেজা বেগম কে প্রধান আসামী করে ৬জনের বিরুদ্ধে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা করা হয়।
মামলায় অপরাপর আসামীরা হলেন -২। খতেজা বেগম (৬৫), স্বামী-মৃত সিরাজ মিজি, মাতা-অজুফা খাতুন, ৩। পারুল বেগম (৪৮), স্বামী- মিজান গাজী, পিতা-সিরাজ মিজি, মাতা-খতেজা বেগম, সর্ব সাং- বহরী, পোঃ আড়ং বাজার, থানা-মতলব দক্ষিন, জেলা-চাঁদপুর, বর্তমান- ভাই-বোন বিলাস, হোল্ডিং নং ০৮৯৫-০১, ষোলঘর, বিটি রোড, থানা ও জেলা-চাঁদপুর, ৪। মোঃ শাহজাহান (০৫৩), পিতা-অজ্ঞাত, মাতা-অজুফা খাতুন, সাং-মাষ্টার বাজার, থানা-মতলব দক্ষিন, জেলা-চাঁদপুর, ৫। মোঃ কামাল মিজি (৩০), পিতা-অজ্ঞাত, সাং-বহরী, পোঃ আড়ং বাজার, থানা-মতলব দক্ষিন, জেলা-চাঁদপুর, ৬। মোঃ জাকির মিজি (৩২), পিতা-মোঃ লোকমান মিজি, মাতা-ফজর বানু, সাং-বহরী, পোঃ আড়ং বাজার, থানা-মতলব দক্ষিন, জেলা-চাঁদপুর।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার এসআই ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুদ্দুস ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন।বাদী(ভিকটিম)ও স্বাক্ষীগন জবানবন্দী দিয়েছেন । বাদীর অভিযোগ সঠিক বলে স্বীকার করেন ।
আরো অভিযোগ রয়েছে প্রতারক বিদেশ প্রেরত স্বামী মোঃ আক্তার হোসেন মিজি প্রথম স্ত্রীকে না জানিয়ে গোপনে আরেকটি বিয়ে করেছে । যা ফৌজদারী আইনে আরেকটি অপরাধ ।
থানার দাখিলকৃত অভিযোগে গৃহবধু রাজিনা আক্তার উল্লেখ করেন বিবাদীরা নারী নির্যাতনকারী, যৌতুকলোভী এবং এলাকার খারাপ প্রকৃতির লোক হয়। ১নং বিবাদী আমার স্বামী, ২নং বিবাদী শাশুড়ী, ৩নং বিবাদী ননাস, ৪নং বিবাদী মামা শশুড় এবং ৫ ও ৬নং বিবাদী সর্ম্পকে বাড়ীর দেবর হয়। গত ১৫/০৯/২০১০ খ্রিঃ তারিখে ১নং বিবাদীর সহিত আমার বিবাহ হয়। বিবাহের পরে বিবাদী আমাকে নিজ বসত বাড়ীতে উঠাইয়া নিয়া পরস্পর স্বামী-স্ত্রী হিসাবে দাম্পত্য জীবন অতিবাহিত করাবস্থায় ১নং বিবাদীর ঔরসে এবং আমার গর্ভে একজন পুত্রসন্তান এবং একজন কন্যা সন্তান জন্মগ্রহন করে। যাহাদের নাম যথাক্রমে মোঃ মারুফ (০৮) ও মোসাঃ আনা (১২)। ১নং বিবাদী পেশায় একজন প্রবাসি। বিগত প্রায় ০৫ বছর পূর্বে ১নং বিবাদী বাংলাদেশ হইতে বাহরাইনে যায়।
১নং বিবাদী বাংলাদেশ হইতে বিদেশে যাওয়ার পরে আমাকে ও আমার সন্তানদেরকে আমার পিত্রালয়ে রাখিয়া যায় এবং আমাদের কোন ভরন পোষন বহন না করিয়া আমাদেরকে খাওয়া পরনে কষ্ট দিতে থাকে। ১নং বিবাদীকে আমাদের ভরন পোষন প্রদানের জন্য বলিলে বিবাদীকে যৌতুক বাবদ আমার পিত্রালয় হতে নগদ পাঁচ লক্ষ টাকা নিয়া দেওয়ার জন্য আমাকে বলিত। ১নং বিবাদীর কথামত অন্যান্য বিবাদীরা প্রায় সময় আমার পিত্রালয়ে গিয়া আমাকে যৌতুকের টাকার জন্য নির্যাতন করিত।
অনুমান ১৫ দিন পূর্বে ১নং বিবাদী বাংলাদেশে আসে। ১নং বিবাদী বাংলাদেশে আসার পরে আমার সহিত ঠিকমত সংসারবাসা না করিয়া ২-৬নং বিবাদীদের ইন্দনে ও উস্কানীতে আমাকে যৌতুকের জন্য নির্যাতন করা আরম্ভ করে। উক্ত অবস্থায় গত ১৪/০৯/২০২৩ তারিখ বিকাল অনুমান ০৫.০০ ঘটিকার সময় ১নং বিবাদী তাহার সঙ্গীয় ২-৬নং বিবাদীদেরকে সঙ্গে নিয়া আমার পিত্রালয়ে যায়।
এতে আরো উল্লেখ করা হয় বিবাদীরা আমার পিত্রালয়ে যাওয়ার পরে সকল বিবাদীরা আমাকে আমার পিত্রালয় হইতে যৌতুক ববাদ নগদ দশ লক্ষ টাকা ১নং বিবাদীকে দেওয়ার জন্য বলে। আমি কোনরুপ যৌতুক দিতে পারিব না বলিয়া যৌতুকের প্রতিবাদ করিলে ২-৬নং বিবাদীদের প্রত্যক্ষ ইন্দনে ও উস্কানিতে ১নং বিবাদী যৌতুকের টাকার জন্য আমাকে এলোপাথাড়ীভাবে মারধর করা আরম্ভ করে। বিবাদী আমাকে কাঠের আদল দিয়া এলোপাথাড়ীভাবে বাইরাইয়া আমার হাতে, বুকে-পিঠে, মাথায় সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফুলা জখম করে।
একপর্যায়ে বিবাদী তাহার হাতে থাকা কাঠের আদল ফেলে দিয়া তাহার দুই হাত দিয়া আমার গলা চাপিয়া ধরিয়া আমাকে শ্বাসরুদ্ধ করিয়া হত্যার চেষ্টা করে। ২-৬নং বিবাদীরা আমাকে এলোপাথাড়ীভাবে কিল-ঘুষি মারে। সাক্ষীরা সহ আশপাশ লোকজন আসিয়া আমাকে রক্ষা করে। আমি যৌতুকের টাকা না দিলে ১নং বিবাদী আমাকে আর আমার পিত্রালয় হতে উঠাইয়া নিবে না বলিয়া সকল বিবাদী চলিয়া যায়।
থানায় মামলার সাথে হাসপাতালের চিকিৎসার কাগজপত্র সংযুক্ত করা হয় ।
উল্লেখ্য এ ছাড়াও শাহতলী নিবাসী ২সন্তানের জননী গৃহবধু রাজিনা আক্তার (৩৪) বাদী হয়ে চাঁদপুর সদর আদালতে যৌতুক আইনে অপর একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গৃহবধু রাজিনা আক্তার পিতা হলেন পিতা-মৃত জামাল মিজি মাতা-জুলেখা বেগম শাহতলী চাঁদপুর সদর ।
১৭সেপ্টেম্বর (রবিবার) চাঁদপুর সদর আদালতে যৌতুক নিরোধ আইনের ৩ (তিন) ধারায় এ মামলা করা হয়।
আদালত যৌতুক নিরোধ আইনের ৩ (তিন) ধারায় মামলাটি আমলে নিয়ে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে নিদেশ দেন ।
এতে আসামীরা হলেন তার স্বামী মোঃ আক্তার হোসেন মিজি (৪২), কে প্রধান আসামী করে বেশকজনকে আসামী করা হয়।