সাইদ হোসেন অপু চৌধুরী : নারীরা দেশের সম্পদ, এটি সর্বজনস্বীকৃত, কিন্তু বেশির ভাগ শিক্ষিত নারীরা যখন চাকরি নামে সোনার হরিণের পেছনে ছুটতে গিয়ে একটা সময় নিজেকে বেকার তালিকায় নাম লেখায়, তখন তারা সম্পদে রূপান্তর না হয়ে দেশের ও সংসারে বোঝা হয়ে দাঁড়ায়।
এই সঙ্কটময় সময় অকুতোভয় এক নারী চাকরির পেছনে না ছুটে চাকরি দেয়ার পণ করে বসেন। তিনি তানিয়া ইশতিয়াক খান একজন সফল উদ্যোক্তা।
এ রকম উদ্যমী নারীদের নিজ অর্থায়ানে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন তানিয়া ইশতিয়াক খান ও তার সংগঠন “বিজয়ী” নারী উন্নয়ন সংস্থা । ২০২০ সাল থেকে শত শত নারীদের বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি করছেন উদ্যোক্তা। যারা প্রতি মাসে হাজার হাজার টাকা উপার্জন করছেন। বেকারত্বে বাঁধা ডিঙিয়ে তারা আজ সফল। কাজ করছেন বিভিন্ন অর্থনৈতিক উন্নয়নে।
১৯৯৪ সালে এক মুসলিম সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তানিয়া ইশতিয়াক খান। ইংরেজি লিটারেচারে অনার্স ও মার্স্টাস করেন। ব্যক্তি জীবনে তানিয়া ইশতিয়াক খান দুই কন্যা সন্তানের জননী। তার স্বামী তরুন সমাজসেবক ও কলম সৈনিক সাংবাদিক আশিক খান ও ননাশ নিলুফার করিম এর অনুপ্রেরনায় নারী উন্নয়নে কাজ করে সফলতার পথে তানিয়া ইশতিয়াক খান। কর্মজীবনে লেখা পড়ার পাশাপাশি চাঁদপুরের কালেক্টরেট স্কুলে শিক্ষকতা করেন এবং ইউসিবিএল ব্যাংকে চাকুরী করেন। করোনা কালীন সময়ে চাকুরি ছেড়ে ঘরে বসে উদ্যোক্তা লাইফের যাত্রা শুরু করে খান’স ধাবা নামাক রেস্তোরাঁর মাধ্যমে।
নারী উদ্যোক্তা সৃস্টি ও উদ্যোক্তাদের সার্বিক সহায়তা, আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী, নিজ পরিচয়ে পরিচিত হওয়া ও নারী ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে চাঁদপুর জেলার পুরান বাজারে অবস্থিত খান’স ধাবায় ২৬শে ফেব্রুয়ারী ২০২০ ইং সালে চাঁদপুরের নারীদেরকে নিয়ে একটি নারী উদ্যোক্তা সংগঠন” বিজয়ী” প্রতিষ্ঠা করেন।
দীর্ঘ দুই বছর ফ্রি প্রশিক্ষনসহ নানা রকম সামাজিক কার্যক্রম করে নভেম্বর ২০২২ ইং সালে বাংলাদেশ মহিলা অধিদফতর থেকে “বিজয়ী” – নারী উন্নয়ন সংস্থা নামে(রেজিষ্ট্রেশন নং- জেমবিককা/চাঁদ/ ১৫৩)) নিবন্ধন পায় এবং ২০২৩ সালে চাঁদপুর জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর উপ-পরিচালকের কার্যালয় থেকে যুউঅ/চাঁদ/২০২৩-০৩ নিবন্ধন সনদ পায় যা “বিজয়ী” যুব নারী উন্নয়ন সংস্থা” নামে। নারী সক্ষমতা অর্জনের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে বিজয়ী।
২০ টি ফ্রি প্রশিক্ষনের মাধ্যমে গত বছর ৫০০+ নারীকে হাতে কলমে প্রশিক্ষন প্রদান করে নতুন নারী উদ্যোক্তা তৈরি করেছে। ২০২৩ সালে বিজয়ীর টাগেট ৭ শতাধিক নারীকে হাতে-কলমে প্রশিক্ষন করানো। সেই লক্ষ্যে ১৩ টি হাতে কলমে ফ্রি ৩০০+ শিক্ষার্থী ও নারীকে প্রশিক্ষন প্রদান করানো হয়।
এক সাক্ষাৎকারে বিজয়ী এর ফাউন্ডার তানিয়া ইশতিয়াক খান বলেন বিজয়ী সংগঠন এখন শত শত নারীদের উপার্জন করার পথও তৈরি করে দিচ্ছেন। অনেকেই চাকরির পিছনে ঘুরে ঘুরে চাকরি পাচ্ছে না। পাশ করে ঘরে বসে আছেন অনেকেই। কিন্তু বেকারত্বের তালিকায় নাম লিখে বসে আছে। ভাবছেন কি করবেন কি করা যায় তরুণদের জন্য অবশ্যই পরামর্শ থাকবে উদ্যোক্তা হওয়ার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর “স্মার্ট বাংলাদেশ” গড়তে হলে উদ্যোক্তা হতে হবে।
নারীদের সাবলম্বী হতে হবে। চাকরির ভরসায় না থেকে উদ্যোক্তা হোন সফলতা আসবেই। শুরুটা আমারও সুন্দর ছিল না কিন্তু মেধা, মনন ও পরিশ্রম দিয়ে আমি আজ উদ্যোক্তা হিসেবে অবস্থান গড়ে তুলেছি আমি এখন সফল, আলহামদুলিল্লাহ । আপনারাও চাকরির পিছনে না ঘুরে উদ্যোক্তা তৈরি হোন সফলতা আসবেই। একজন নারী সংগঠক ও সংগঠন হিসেবে ভাল কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ অর্জন সমূহ যা আমাকে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে।
বিজয়ী এর ফাউন্ডার তানিয়া ইশতিয়াক খান চাঁদপুরে নারীদের জন্য বাস্তবে ব্যাপক কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি দক্ষতা দিয় কর্মকাণ্ডকে যেমনি সচল রেখেছেন তেমনি আন্তরিকতা দিয়ে সহকর্মীদের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছেন। কাজের প্রতি নিষ্ঠা ও দায়িত্ববোধের কারণে তিনি সকলের নিকট প্রশংসিত।