চাঁদপুর খবর রিপোর্ট : চাঁদপুর সদর উপজেলার আশিকাটি ইউনিয়নের রালদিয়া গ্রামের হত্যার চেষ্টা ও অঙ্গহানীর ঘটনায় খান বাড়ির মোসা: শাহানারা বেগম (৫০) বাদী হয়ে ৩জন আসামী করে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় মামলা করেছেন।
গতকাল ৮জুলাই (শনিবার) মোসা: শাহানারা বেগম, স্বামী-আব্দুর রহমান খান, সাং- রালদিয়া, খান বাড়ী, থানা-চাঁদপুর সদর, জেলা-চাঁদপুর বাদী হয়ে চাঁদপুর মডেল থানায় ১৪৩/৪৪৭/৩২৩/৩২৪/৩২৬/৩০৭/৩৫৪/ ৩৭৯/৫০৬(২) ধারায় পেনাল কোডে মামলা দায়ের করা হয়। যার মামলা নং-১১।
মামালার আসামীরা হলো ১। মাদক আসক্ত মোঃ নিরব খান(২৮), পিতা- মোঃ শাহ আলম খান, ২। অলি উল্লাহ খান (৬৫), পিতা- মৃত ইব্রাহীম খান ৩। মোঃ শাহ আলম খান (৬০), পিতা- মৃত ইব্রাহীম খান, সর্বসাং-রালদিয়া, খান বাড়ী, থানা ও জেলা-চাঁদপুরসহ অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন।
গত ৭জুলাই দুপুর অনুমানিক ১টায় আশিকাটি ইউনিয়নের রালদিয়া গ্রামে এ হামলার ঘটনা ঘটায়। দেশীয় অস্ত্র ও রামদা দিয়ে কুপিয়ে প্রধান আসামী মাদক আসক্ত জেল থেকে প্রেরত সন্ত্রাসী নিরব খানের নেতৃত্বে এই ঘটনা ঘটেছে ।
চাঁদপুর সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে,শারিরীক অবস্থার অবনতি ঘটায় গুরুত্বর আহত সুমি আক্তারকে ঢাকায় রেফার করা হয়েছে ।
জানা গেছে,এ ঘটনাটি চাঁদপুরের অতিক্তি পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায় ও সদর সার্কেল(অতিক্তি পুলিশ সুপার) ইয়াসীন আরাফাতকে জানানো হয়েছে । পুলিশ গুরুত্বের সাথে ঘটনাটি তদন্ত করছে ।
মামলা তদন্ত কর্মকর্তা চাঁদপুর সদর মডেল থানার এসআই সেলিম উল্ল্যাহ প্রাথমিক ভাবে ঘটনার সত্যতা পান। গত ৭জুলাই রাতে মামলার ১নং আসামী নিরব খানকে গ্রেফতার করতে চাঁদপুর সদর থানা পুলিশ অভিযান চালান।
এ ব্যাপারে চাঁদপুর সদর মডেল থানার ওসি শেখ মুহসীন আলম গতকাল দৈনিক চাঁদপুর খবরকে জানান,এ ঘটনায় গতকাল চাঁদপুর মডেল থানায় এজহার করা হয়েছে । আসামীদের গ্রেফতারের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে ।
এ ব্যাপারে চাঁদপুর সদর মডেল থানার এসআই সেলিম উল্ল্যাহ গতকাল দৈনিক চাঁদপুর খবরকে জানান,গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি । ঘটনার সত্যতা পেয়েছি । ৭জুলাই রাতে মামলার ১নং আসামী নিরব খানকে গ্রেফতার করতে চাঁদপুর সদর থানা পুলিশ অভিযান চালাই ।
মামলায় বাদী উল্লেখ করেন- আমার ভাইয়ের মেয়ের সাথে ১নং বিবাদীর বিবাহ হয়। ১নং বিবাদী আমার ভাইয়ের মেয়েকে অত্যাচার করায় আমার ভাইয়ের মেয়ে আমাদের বাড়ীতে চলে আসে এবং ১নং বিবাদীর বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে যৌতুক আইনে মামলা দায়ের করে। উক্ত মামলায় ১নং বিবাদী জেল খাটে। উক্ত বিষয় নিয়া বর্নিত বিবাদীগন আমাকেসহ আমাদের পরিবারের সদস্যদের মারধর ও ক্ষতি সাধন করার বিভিন্ন পায়তারা করে।
উল্লেখিত ঘটনার তারিখ ও সময়ে বাড়ীর অন্যান্য লোকজন জুম্মার নামাজ পড়ার জন্য মসজিদে যাওয়ার সুযোগে বর্নিত বিবাদীগন বেআইনী জনতা একত্রিত হয়ে ঘটনাস্থলে অনধিকার প্রবেশ করিয়া আমাকেসহ সাক্ষীদের অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে। একপর্যায়ে বর্ণিত সকল বিবাদীগন আমাকেসহ সাক্ষীদের এলোপাতাড়ী মারধর করিয়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলা ফুলা জখম করে।
জানা গেছে, ১নং বিবাদীর হাতে থাকা ধারালো দা দিয়া ১নং সাক্ষী আমার স্বামীকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার মাথার মাঝখানে কোপ মারিয়া মাথায় কাটা রক্তাক্ত জখম করে। আমার স্বামীকে রক্ষা করার জন্য আমার মেয়ে ২নং সাক্ষী এগিয়ে আসলে ১নং বিবাদী তাকে হত্যা করার জন্য ধারালো দা দিয়া মাথায় কোপ মারিতে গেলে আমার মেয়ে ১নং সাক্ষী উক্ত কোপ বাম হাত দিয়া ফিরানোর সময় বাম হাতের তালুতে লাগিয়া কাটা রক্তাক্ত গুরুত্বর জখম হয় এবং একই হাতে জর্জীর নিচে ১নং বিবাদী পুনরায় কোপ মারিয়া কাটা রক্তাক্ত গুরুত্বর জখম করে তার হাতের মাংসসহ চামড়া উঠিয়া যায় । আমার মেয়ে মাটিতে পড়ে গেলে ১নং বিবাদী তার পরিধেয় কাপড় টানা হেচড়া শ্লীলতাহানী করতঃ শ্বাস রোধ করিয়া হত্যার চেষ্টা করে।
৩নং সাক্ষী আমার ছেলে এগিয়ে গেলে ২ ও ৩নং বিবাদীদ্বয় তাকে গাছের লাঠি দিয়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে বারি মারিয়া নীলা ফুলা জখম করে। ১নং বিবাদী ২নং সাক্ষীর গলায় থাকা আট আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন মূল্য অনুমান ৪০,০০০ টাকা জোর পূর্বক নিয়ে যায়। আমাদের ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে বর্নিত বিবাদীগনসহ অজ্ঞাতনামা বিবাদীরা প্রকাশ্যে খুন জখমের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরবর্তীতে আমি বাড়ীর লোকজনের সহায়তায় ১ ও ২নং সাক্ষীদ্বয়কে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করি।