স্টাফ রিপোর্টার : হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব আষাঢ়ের জগন্নাথদেবের উল্টো রথ যাত্রা গতকাল ২৭ জুন মঙ্গলবার অনুষ্ঠীত হয়েছে।
এ উপলক্ষ্যে চাঁদপুর শহরের শ্রী শ্রী কালিবাড়ি মন্দির প্রাঙ্গন থেকে জগন্নাথদেবের উল্টো রথের শোভাযাত্রা বিকাল সাড়ে ৪ টায় বের করা হয়।
উল্টোরথ যাত্রার উদ্ধোধন করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি।
এসময় তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলার যে স্বপ্ন দেখে ছিলেন সেই স্বপ্ন পূরনে প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা কাজ করে যাচ্ছেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ হবে অসাম্প্রদায়িক রাস্ট্র।
এখানে থাকবে না ধর্মান্ধতা, থাকবেনা কোনো হানাহানি। আমরা বিশ্বাস করি ধর্ম যার যার উৎসব সবার। ধর্ম যার যার রাস্ট্রটা সবার। সকল ধর্মের মানুষ মিলে এ বাংলাদেশ গড়ে তুলবো।সকল ধর্মের মানুষ বুকের তাজা রক্ত দিয়ে স্বাধীন করেছে।এ দেশ অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক দেশ। যার যার ধর্মের মানুষ তার ধর্ম স্বাধীনভাবে, শান্তিতে ও নির্বিঘ্নে পালন করবে। তারা তাদের ধর্ম প্রচার করবে। সেই স্বাধীনতা যেন অক্ষুন্ন থাকে। আমাদের সব সময় সদিচ্ছা থাকতে হবে।
আমরা চাই না আর কখনো আমাদের মাঝে ধর্মান্ধতা আসুক, যারা ধর্মের নামে এক ধর্মের মানুষ আরেক ধর্মের মানুষের রূপে অত্যাচার নির্যাতন চালায়। কোন ধর্মেই বলেনি মানুষের উপর অত্যাচার করো। সকল ধর্মেই শান্তির কথা বলা হয়েছে। মানুষে মানুষের সমৃদ্ধির কথা বলে। আমরা যেন যার যার ধর্মের মূল মন্ত্র ও মর্ম বাণী সবার মাঝে বিলিয়ে দিতে পারি। এ প্রত্যাশা করে আজকে জগন্নাথদেবের উল্টো রথ যাত্রার উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
উদ্ধোধন শেষে নতুর বাজার ও পুরান বাজারের প্রধান প্রধান সড়ক পরিভ্রমণ করে পুরান বাজার জগন্নাথ মন্দিরে গিয়ে শেষ হয়। এর পূর্বে সকাল ১০ টায় কালিবাড়ি মন্দিরে বিশ্ব শান্তি ও মঙ্গল কামনায় অগ্নিহোত্রযজ্ঞ অনুষ্ঠিত হয়।এনপর ভজন কির্তন পরিবেশন করা হয়।
দুপুর ১ টা থেকে বিকাল ৩ টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয় ভাগবত পাঠ। এবছর ভাগবত পাঠ করেন বিন্দাবনধামের দয়ানন্দ বনমহারাজ। সব শেষে বিকাল ৩ টায় ভক্তদেরনমাঝে প্রসাদ বিতরন করা হয়। বিকাল সাড়ে ৪ টার মধ্যে পূজার সকল কার্যক্রম সমাপ্ত করে উল্টোরথ টানা হয়।
গত ২০ জুন মঙ্গলবার প্রথম রথ টেনে পুরান বাজার জগন্নাথ মন্দির থেকে কালিবাড়ি মন্দিরে আনা হয়েছিল।
হিন্দু সম্প্রদায়ের রীতিনীতি অনুযায়ী জগন্নাথ, বলরাম ও শুভদ্রাকে উল্টোরথের মাধ্যমে মামার বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়েছে। জগন্নাথ মন্দিরের রথ যাত্রার সপ্তাহ ব্যাপী অনুষ্ঠানের সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন মন্দির পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ডাঃ সহদেব দেবনাথ ও মন্দিরের অধ্যক্ষ বিশাল গোবিন্দ দাসাধীকারি।
বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে সনাতন ধর্মের হাজারো নর- নারী, তরুণ – তরুণী ভক্ত অংশগ্রহণ করে। তারা রথ টেন নতুন বাজার থেকে পুরান বাজার এলাকার স্ব স্ব মন্দিরে নিয়ে য়ায়।
ইসকনের রথটি নতুন বাজার গোপাল জিউর আখড়া থেকে টেনে পুরান বাজার ঘোষ পাড়া ইসকন মন্দিরে নেয়া হয়।
এ সময় উপস্হিত ছিলেন চাঁদপুর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সুভাষ চন্দ্র রায়, সাধারন সম্পাদক তমাল কুমার ঘোষ, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র অ্যাডঃ জিল্লুর রহমান জুয়েল, জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খিস্ট্রান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডঃ রনজিত রায় চৌধুরী, জেলা জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সাবেক সভাপতি গোপাল সাহা,
সদর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক লক্ষণ চন্দ্র সূত্রধ,জেলা জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক সরকার, পৌর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুমন সরকার জয়।