চাঁদপুরে ধর্ষণের ঘটনায় যুবকের যাবজ্জীবন

স্টাফ রিপোটার : চাঁদপুর শহরের বিটি রোড এলাকায় অষ্টম শ্রেণীতে পড়ুয়া স্কুল ছাত্রীকে সড়ক থেকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে কোমল পানীয়র সাথে নেশা জাতীয় দ্রব্য পান করিয়ে ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় মোঃ রিপন প্রধানিয়া (৩৫) নামে যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরো ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

গতকাল ২৯ মে সোমবার বিকেলে চাঁদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জান্নাতুল ফেরদাউস চৌধুরী এই রায় দেন।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ছাড়াও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের পৃথক ধারায় (৭ ধারায়) আসামীকে অপহরণের অপরাধে আরো ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরো তিনমাসের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। রায় ঘোষণার সময় আসামী রিপন প্রধানীয়া উপস্থিত ছিলেন।
কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী রিপন প্রধানিয়া সদর উপজেলার আশিকাটি ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের প্রধানিয়া বাড়ির মৃত নোয়াব আলী প্রধানিয়ার ছেলে। তার বর্তমানে ঠিকানা হচ্ছে শহরের বিটি রোড।

মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, আসামী রিপন প্রধানিয়া বিদ্যালয়ে আসা যাওয়ার পথে সবসময় স্কুল ছাত্রীকে প্রেম নিবেদন ও কুপ্রস্তাব দিতো। বিষয়টি ওই ছাত্রী তারা বাবাকে জানায়। তার বাবা রিপনকে এই ধরণের কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকার জন্যে অনুরোধ করেন। এতে সে আরো ক্ষিপ্ত হয়। ২০২০ সালের ২৬ মে বেলা আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে ওই স্কুল ছাত্রী নিজ এলাকা থেকে বের হয়ে একটি দোকানে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয় করতে যায়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সেখানে পূর্ব থেকে উৎপেতে থাকা রিপন ও তার সহযোগীরা স্কুল ছাত্রীকে একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশায় জোরপূর্বক তুলে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে কোমল পানীয়র সাথে নেশা জাতীয় দ্রব্য পান করিয়ে ধর্ষণ করে।

স্কুল ছাত্রীর বাবা জানান, তিনি মেয়েকে তুলে নেয়া হয়েছে জানতে পেরে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেন। পরবর্তীতে তিনি ওইদিন রাতেই চাঁদপুর সদর মডেল থানায় বিষয়টি অবহিত করেন এবং থানায় রিপন প্রধানিয়াকে আসামী করে মামলা করেন। পুলিশ অভিযান চালিয়ে আসামী রিপন প্রধানিয়াকে গ্রেফতার এবং স্কুল পড়ুয়া ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করেন।

মামলাটি তদন্ত করেন তৎকালীন চাঁদপুর সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) পলাশ বড়ুয়া। তিনি মামলাটি তদন্ত শেষে ওই বছর ৩০ আগস্ট আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।

মামলার সরকার পক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এডভোকেট সাইয়েদুল ইসলাম বাবু জানান, মামলাটি গত ৩ বছর চলাকালীন সময়ে ৯জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। স্বাক্ষ্য প্রমান ও মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা করে আদালতে আসামীর উপস্থিতিতে বিচরাক এই রায় দেন।

মামলার সরকার পক্ষের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) ছিলেন খোরশেদ আলম এবং আসামী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন এবিএম সানা উল্লাহ।

সম্পর্কিত খবর