
এস.এম ইকবাল, ফরিদগঞ্জ : চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে এক চিহ্নিত মাদককারবারির ছুরিকাঘাতে মো. মোস্তফা (২৭) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি উপজেলার পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়নের শাশিয়ালী গ্রামের বাসিন্দা ও মৃত দিদার হোসেনের ছেলে। মোস্তফা একজন সিএনজি অটোরিকশা চালক ছিলেন এবং এক সন্তানের জনক।
বুধবার (১৯ জুন) রাত ২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। এর আগে ১৬ জুন ফরিদগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন নিহত মোস্তফার ভাই মো. আলাউদ্দিন।
স্থানীয় সূত্র ও পরিবারের বরাতে জানা গেছে, গত ১২ জুন (বৃহস্পতিবার) রাতে চিহ্নিত মাদককারবারি সোহেল ও তার সহযোগীরা মোস্তফাকে নিজ বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে তাঁকে মারধর ও ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করে। প্রথমে তাঁকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়, পরে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেলে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
নিহতের ভাই মো. আলাউদ্দিন বলেন, “ঘটনার রাতে রাত ১০টা ৩০ মিনিটে সোহেল গংরা আমাদের ঘর থেকে ভাইকে ডেকে নেয়। পরে তাঁকে মারধর ও পিঠে ছুরিকাঘাত করে, যেটি কিডনিতে লেগেছিল। আমরা তাঁকে স্থানীয়দের সহায়তায় হাসপাতালে নিয়ে যাই। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকায় তাঁর মৃত্যু হয়। আমরা ভাইয়ের হত্যার বিচার চাই।”
জানা গেছে, মোস্তফা ও অভিযুক্ত সোহেল একই এলাকার বাসিন্দা। সোহেলের ভাই ফয়সাল স্থানীয় এক ব্যবসায়ী মো. জাহাঙ্গীরের কাছ থেকে ৪ হাজার ৬০০ টাকা নিয়েছিলেন কিছু পণ্য কেনার জন্য। কিন্তু সেই টাকা আত্মসাৎ করেন ফয়সাল। ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর মোস্তফার স্বজন হওয়ায়, ফয়সালের কাছে ওই টাকা চাইলে বিরোধ শুরু হয়। এই বিরোধ থেকেই পরবর্তীতে রক্তক্ষয়ী ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সোহেল গংরা এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। একাধিকবার তারা মাদকসহ গ্রেপ্তারও হয়েছে। অনেকে মনে করেন, মোস্তফা মাদকের বিরোধিতা করায় পরিকল্পিতভাবে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নুরুল আলম বলেন, “নিহতের ভাই আলাউদ্দিনের অভিযোগের ভিত্তিতে চারজনকে আসামি করে মামলা রুজু করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। একজন এখনও পলাতক রয়েছে। ভিকটিম মারা যাওয়ায় মামলাটি এখন হত্যা মামলায় রূপান্তর করা হচ্ছে।”