স্টাফ রিপোর্টার: চাঁদপুর সদর উপজেলায় এক তরুণীর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, যা এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। গতকাল শনিবার (১৫ জুন ২০২৫) বিকেল ৩টার দিকে চাঁদপুর সদর উপজেলার পিঙরা বাজার সংলগ্ন তালুকদার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত তরুণীর নাম সীমা আক্তার (১৮)। তিনি একই এলাকার দেলু তালুকদারের পুত্র প্রবাসী শাহাদাতের স্ত্রী এবং আজিমের কন্যা। এক কন্যা সন্তানের জননী ছিলেন এই যুবতী। মৃত সীমার বাবার বাড়ি মতলব দক্ষিণ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিকেলে সীমার মৃত্যুর পর বিষয়টি গোপন রাখার চেষ্টা চলছিল। সন্ধ্যায় ঘটনা জানাজানি হলে পরিবার ও এলাকার কিছু গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে লাশ দাফনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল—থানা পুলিশকে না জানিয়ে। বিষয়টি সাংবাদিকদের কাছে গোপন সূত্রে পৌঁছালে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাঁরা পুরো বিষয়টি নিশ্চিত হন।
সীমার ভাই শরীফ সাংবাদিকদের জানান, দুই বছর আগে আমার বোনের বিয়ে হয়। সে সময় থেকেই নানা বিষয়ে ওকে নির্যাতন করা হতো। ৬/৭ মাস আগে বিদেশে যাওয়ার কথা বলে ১ লাখ টাকা নেওয়া হয়। কয়েক দিন আগে তার পা কেটে যায়, ৯টি সেলাই পড়ে। কিন্তু আমরা তা জানিনা। সব মিলিয়ে আমরা বুঝতে পারছি, সীমার মৃত্যু স্বাভাবিক নয়।
সীমার বড় বোন বলেন, আমরা নিজের চোখে কিছু দেখিনি। স্বামী-শ্বশুরবাড়ির লোকজন বলছে, সীমা স্ট্রোক করেছে। আমরা স্ট্রোকের কথা শুনে এসে দেখি লাশ খাটের উপর শুয়ে রাখা হয়েছে। তবে আমাদের সন্দেহ, এটি আত্মহত্যা নয়—পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
পরিবারের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সীমার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চলছিল। সেই নির্যাতনেরই পরিণতি হতে পারে এই মৃত্যু।
পরবর্তীতে এলাকাবাসী ও পরিবার মিলে পারিবারিকভাবে লাশ দাফনের প্রস্তুতি নিচ্ছিল, কিন্তু গণমাধ্যমকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে দাফনের চেষ্টাটি থেমে যায়। পরে রাত আনুমানিক ৩টার দিকে চাঁদপুর সদর মডেল থানার পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় এবং ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়।
এ বিষয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ বাহার মিয়া বলেন, আমরা মৃতদেহ উদ্ধার করে পোস্ট মর্টেমের জন্য পাঠিয়েছি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সীমার মৃত্যু ঘিরে এলাকায় নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। এটি আত্মহত্যা না পরিকল্পিত হত্যা—তার স্পষ্ট জবাব মিলবে পোস্ট মর্টেম রিপোর্টে।
