
সাইফুল ইসলাম সিফাত : চাঁদপুর পৌরসভার নলকূপ থেকে সরবরাহ করা পানিতে ময়লা, কাদা এমনকি ধাতব কণার উপস্থিতি পাওয়া যাচ্ছে। খান সড়ক ও আশপাশের এলাকাগুলোর বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন ।
এই পানি পান তো দূরের কথা, হাত ধোয়ারও উপযুক্ত নয়। অথচ এই ‘নোংরা পানি’ই প্রতিদিন পৌরবাসীদের ঘরে পৌঁছে দিচ্ছে পৌরসভা। এ ব্যাপারে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক ও পৌর প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে নাগরিক সমাজ ।
বাসিন্দারা বলছেন, দিনের পর দিন এ অবস্থার মধ্যেই থাকতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। শিশু থেকে বৃদ্ধরা সবাই পানিবাহিত নানা অসুখে আক্রান্ত হচ্ছেন। অনেকেই ডাক্তারের কাছে যেতে বাধ্য হচ্ছেন চর্মরোগ, পেটের অসুখ কিংবা ডায়রিয়ার কারণে।
একজন ক্ষুব্ধ বাসিন্দা বলেন, “আমরা কি ট্যাক্স দিই বিষ খাওয়ার জন্য?”
স্থানীয় বাসিন্দা নূরে শেফা জানান, প্রতিদিনই ট্যাপের পানি ঘোলা ও দুর্গন্ধযুক্ত অবস্থায় আসে। অনেক সময় পানিতে ধাতব পদার্থের মতো কিছু দেখতে পাওয়া যায়। তিনি বলেন, “ফিটকারি দিয়ে পরিষ্কার করেও স্বচ্ছ করা যায় না। এই পানি ব্যবহার করলে চর্মরোগ, ডায়রিয়া এমনকি জন্ডিস হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে।”
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরেই এ সমস্যা চলছে। বিষয়টি বারবার পৌরসভাকে জানানো হলেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ছবিতে দেখা যায়, এক পাত্রে রাখা সাপ্লাইয়ের পানির নিচে স্পষ্টভাবে ময়লা ও কঠিন পদার্থ জমে আছে। এতে শহরবাসীর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌরসভার এক কর্মচারী জানান, “জলাশয় ও পাইপলাইনের পুরোনো অবস্থা এবং ফিল্টারিংয়ের অভাবের কারণে এই সমস্যা হতে পারে।” তবে এ বিষয়ে কোনো প্রকাশ্য ব্যাখ্যা দিতে রাজি হননি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয়রা বলছেন, পৌরসভা যেন নীরব দর্শকের ভূমিকায়। কেউ প্রতিবাদ করলে আশ্বাস ছাড়া আর কিছু মেলে না। এই পরিস্থিতিকে ‘চরম অবহেলা’ আখ্যা দিয়ে তারা অবিলম্বে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ ও সমাধানের দাবি জানিয়েছেন।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পানি ব্যবহারে জন্ডিস, টাইফয়েড, ডায়রিয়া, এমনকি হেপাটাইটিসের আশঙ্কা থেকে যায়। দীর্ঘমেয়াদে এর প্রভাব হতে পারে মারাত্মক।
অবহেলার জবাব নেই, চাঁদপুরে অপরিশোধিত পানি সরবরাহ, বারবার ফোন করেও পৌর প্রশাসক মো. গোলাম জাকারিয়ার বক্তব্য মেলেনি। চাঁদপুরবাসীর প্রশ্ন তাহলে আমরা কী খাব? পৌরসভার কি দায়িত্ব নেই?