
সাইদ হোসেন অপু চৌধুরী : মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে চাঁদপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে চাঁদপুর সদর উপজেলার তালিকাভুক্ত ৩৫০ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে।
বুধবার (২৬ মার্চ) সকালে চাঁদপুর ক্লাবে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন।
তিনি বক্তব্যে বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান ও আত্মত্যাগের কথা আমরা পরবর্তী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে চাই। বীর মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। আমাদের সব সাফল্যের দাবিদার বীর মুক্তিযোদ্ধারা। তারা যদি রক্ত দিয়ে দেশ স্বাধীন না করতেন তবে এর কিছুই সম্ভব হতো না। তৃতীয় শ্রেণির নাগরিক হয়ে আমাদের বসবাস করতে হতো। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ, দায়িত্ববোধ এবং কৃতজ্ঞতাবোধ থেকেই আমরা প্রতিবছর এ সংবর্ধনার আয়োজন করে থাকি।’
ডিসি বলেন, মুক্তিযোুদ্ধারা বাংলার গর্বিত সন্তান। যাঁদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা দিবস পেয়েছি। আর এ গর্বিতদের জন্যে কিছু করতে পারলে আমাদের কাছেও অনেক ভালো লাগে। চাঁদপুরের যে ক’জন মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পেতো তার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। এখন অনেক মুক্তিযোদ্ধা নিয়মিত ভাতা পাচ্ছেন। আমরা বিভিন্ন সময় দু’জন করে মুক্তিযোুদ্ধা স্বাবলম্বী হওয়ার জন্যে আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে আসছি।’
তিনি আরো বলেন, অনেক মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান রয়েছেন তারাই মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানেন না। এমন কি তার বাবা কোথায় যুদ্ধ করেছে তাও তারা বলতে পারবে না। সে সব পরিবারের উদ্দেশ্যে বলছি আপনারা পরিবারকে রক্ষা করুন। কারণ নিজের পরিবারকে রক্ষা না করে অন্যকে কখনো ভালো পরামর্শ দেয়া যায় না। ’
অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য দেন পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ আব্দুর রকিব পিপিএম।
অনুভূতি ব্যক্ত করেন বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ মাষ্টার, আবুল কালাম চিশতী, সিরাজুল ইসলাম বরকন্দাজ, শাহ জাহান গাজী, মুজিবুর রহমান, ড. কাজী হাশেম প্রমূখ।
অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোস্তাফিজুর রহমান, চাঁদপুর পৌরসভার প্রশাসক মোঃ গোলাম জাকারিয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ সৈয়দা বদরুন্নাহার চৌধুরীসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতা, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান যৌথ সঞ্চালনায় ছিলেন চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাখাওয়াত জামিল সৈকত ও চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সাংবাদিক বিএম হান্নান।
শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত করেন চাঁদপুর কালেক্টরেট মসজিদের খতিব মোশারফ হোসেন এবং গীতা পাঠ করেন মতলব উত্তর উপজেলার কলাকান্দি ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শ্যামল চন্দ্র দাস।
আলোচনা শেষে মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের হাতে সম্মাননা পুরস্কার তুলে দেন প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ।