
মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম: গতকাল হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন পবিত্র রমজানের দ্বিতীয় জুমার নামাজের পর মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে রমজানের তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবনী সম্পর্কে তো আপনাদের জানা আছে। তিনি কত প্রতিকূলতার মধ্য দিয়েও মসজিদে এসে নামাজ আদায় করতেন। তৎকালীন একজন বৃদ্ধ বুড়ি মা ছিলেন। তিনি প্রতিনিয়ত মোহাম্মদের পথে প্রতিরোধ করার লক্ষ্যে কাটা বিচি রাখতেন।
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওই কাঁটাগুলো সরিয়ে মসজিদে আসা-যাওয়া করতেন। তিনি এতই বিনয়ী ছিলেন যে। একদিন প্রতিমধ্যে কাঁটা বিছানো না দেখে খোঁজ নিলেন ওই বুড়ির। তখন খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন যে তিনি অসুস্থ। পরে ওই বুড়ির বাড়িতে গিয়ে শয্যার পাশে বসে সুস্থতার জন্য মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নিকট দোয়া প্রার্থনা করেন। একপর্যায়ে ওই বুড়িমা জিজ্ঞেস করলেন কে তুমি বাবা। তখন তিনি বললেন, যার জন্য আপনি প্রতিনিয়ত পথে কাঁটা বিছিয়ে দেন, আমি সেই মোহাম্মদ। পরে তিনি তার ভুল বুঝতে পেরে ইসলাম গ্রহণ করেন।
অথচ আমাদের পথে কেউ কাটা দিলে আমরা বিনয়ী না হয়ে। তার উপরে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য মনোভাব সৃষ্টি করতাম। তাই বলবো আমরা সবাই ধৈর্যশীল হই। ধৈর্যশিলের পাশে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আছেন। আমাদের নবীজি এতই বিনয়ী ছিলেন যে।সেটা ভাষায় বলে বোঝানো যাবে না। আমরা ওনার পথপ্রদর্শক হয়ে জীবন অতিক্রম করতে চাই। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে সঠিক পথ প্রদর্শন হিসেবে কবুল করে নেন আমিন। হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব জেলার মাইল ফলক। সবাই উনাকে অনুসরণ ও অনুকরণ করবেন। তিনি জেলার ইমামদের প্রধান।
হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের ভিতরে এবং বাহিরে কানায় কানায় ভরে চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কে মুসল্লিরা নামাজ আদায় করার জন্য স্থান বেছে নেন। সড়কে বসার পূর্বে মসজিদের ভেতর, বাহির, চাঁদসহ মার্কেটের অলিগলি এবং নামাজ উপযোগী স্থানে মুসল্লীরা নামাজের জন্য দাঁড়িয়ে যান।
এসময় চাঁদপুর জেলা পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব পিপিএম, হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইবনে আল জায়েদ হোসেন, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: মহিউদ্দিন ফারুক, হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের ভারপ্রাপ্ত মোতয়াল্লি প্রিন্স শাকিল আহমেদ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকবৃন্দ, প্রায় অদ্য লক্ষ্য ধর্মপ্রাণ মুসল্লীগণসহ প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব মুফতি মাওলানা আব্দুর রউফ। দেশ ও জাতির কল্যাণে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করেন। মোনাজাতে আল্লাহুম্মা আমীন, আমীন ধবনীতে মুখরিত হয়ে ওঠে গোটা মসজিদ এলাকা। আল্লাহকে রাজি খুশি করতে ইমামের অশ্রু ঝরা মোনাজাত। চোখের পানি ধরে রাখতে পারলেন না প্রায় অদ্য লক্ষ মুসল্লি। প্রয়াত বাবা-মা ও আত্মীয় স্বজনের কথা মনে করে। তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে আল্লাহর কাছে বিশেষ প্রার্থনা করে।