
মহসিন হোসাইন: আসন্ন পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজার মূল্য নিয়ন্ত্রণ/সহনীয় রাখার লক্ষে ব্যাবসায়ীদের সাথে চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধায় চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সম্মেলন কক্ষে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন। রমজান উপলক্ষে বাজার নিয়ন্ত্রণ রাখতে ব্যাবসায়ীদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, যতো রকমের তরিতরকারি ও সবজি রয়েছে চাল, ডাল, তৈল,নুন, কাঁচামরিচ, বেগুন, টমেটো, সবকিছুই আপনারা বিক্রি করেন।
তিনি আরো বলেন, ইফতারের সময় এবং সেহরির সময় বিদ্যুৎ চলে যায়। সেটাকে কিভাবে সাশ্রয় করতে পারি, সে বিষয়েও আপনারা সহযোগীতা করবেন। এই বিষয়গুলো নিয়ে মূলতঃ আপনাদের সাথে আলোচনায় বসা।
আমি সবাইকে নিয়ে বসা সম্ভব নয়। তাই আপনাদের যতোগুলো প্রতিষ্ঠান রয়েছে সে সকল সমিতির সভাপতি ও প্রধানকে ঢেকে নিয়েছি। পৃথিবীর অনেক রাষ্ট্র রয়েছে যারা কিনা রমযানের সময় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমিয়ে দেয়। কিন্তু আমরা পারিনা। আমরা চাইনা তাই পারিনা। আমরা চাইলেই কিন্তু পারি।
জেলা প্রশাসক বলেন, আপনারা এই কমিটমেন্ট দেন যে,আপনি কম মুনাফা করবেন। পন্য কম আছে তাতে সমস্যা নেই। কিন্তু সীমিত আয় করবেন। পরে এই বিষয়ে সকল ব্যাবসায়ীরা জেলা প্রশাসকের সাথে একমত পোষণ করেন। চাল, ডাল,ছোলা এবং সব্জি সহ সবকিছুই আপনারা সংকট দেখান। এটা করা যাবেনা বলে নির্দেশ প্রদান করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন।
এদিকে তৈল ব্যাবসায়ীরা কিছু বিষয় নিয়ে জেলা প্রশাসকের সাথে সহযোগিতার জন্য জানান। তারা বলেন, আমরা যারা তৈল ব্যাবসায়ীরা আছি, আমাদেরকে তৈল কেনার সময় সাথে এক গাদি অন্যান্য মালামাল যেগুলো খুব কম বিক্রি হয় এমন পন্য ধরিয়ে দেয়। পরবর্তীতে এই পন্যগুলো দীর্ঘদিন দোকানে পড়ে থাকে।
সয়াবিন তেলের চাহিদা বেশি থাকায়,তেল বিক্রি হয়ে যায় দ্রুত। কিন্তু অন্যান্য মালামাল গুলো খুব কম বিক্রি হয়। এসময় জেলা প্রশাসক বলেন, তৈল বিক্রির সময় আপনারা খোলা তেল বেশি দামে বিক্রির উদ্দেশ্যে খোলা সয়াবিন তেল বোতলজাত করে বেশি দামে বিক্রি করা হয়।
এগুলো পরিহার করতে হবে। নয়তো বাধ্যতামূলক জরিমানা হবে। এছাড়াও যারা তেল নিয়ে তাল বাহানা করেন,তাদের বিষয়ে বিশেষ সোর্স কাজ করবে।
বিদ্যুৎ নিয়ে জেলা প্রশাসক জানতে চাইলে বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ নানান সমস্যা তুলে ধরেন।তাই জেলা প্রশাসক বলেন, আপনারা আমাদেরকে একটি চিঠি দেন,আমরা বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। বিশেষ করে ইফতার এবং সেহরির সময়ে বিদ্যুৎ যেন না যায়, সেই বিষয়টি নিয়ে সকলে সচেতন থাকতে হবে।
খাবার হোটেল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কাঁচা বাজার ছাড়া জুয়েলারী দোকান, মার্কেট, সুপারশপে এবং কাপড়ের দোকান ও কসমেটিকস, জুতার দোকানে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যাবহার করা যাবেনা।আপনাকে আরো সচেতন হতে হবে। পন্যের কৃত্রিম সংকট তৈরি করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রয়োজন ব্যাতিত অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যাবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। বিশেষ করে জুয়েলারি দোকানগুলো সময় মেইনটেইন করে দোকান চালাতে হবে। আপনারা নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কম রাখবেন, সাধারন মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখবেন বলে তিনি সতর্ক করেন সকল ব্যাবসায়ীদেরকে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- চাঁদপুর জেলা পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব পিপিএম,চাঁদপুর জেলা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক মোস্তাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আসাদুজ্জামান সরকার।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন শহরের নতুন বাজার ব্যাবসায়ী সমিতি,বিপনীবাগ,পাল বাজারসহ বিভিন্ন স্তরের ব্যাবসায়ীরা।