মেঘনায় বালু তোলা নিয়ে গোলাগুলিতে নিহতের ঘটনায় ২৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

স্টাফ রিপোর্টার : চাঁদপুর-মুন্সীগঞ্জ মেঘনা নদীতে বালু তোলাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলিতে দুজন নিহত হওয়ার ঘটনায় পাঁচ দিন পর ২৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।

চাঁদপুরের মতলব উত্তর থানায় মঙ্গলবার রাত ১২টার পর ১১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১২ থেকে ১৩ জনকে আসামি করে মামলাটি করা হয়। এই হত্যার মামলার বাদী মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার নিহত রাসেল ফকিরের মা আনরা বেগম।

মামলার বাদী আনরা বেগম বলেন, গতকাল রাতে কয়েকজন তাঁদের বাড়িতে যান। তিনি তাঁদের চেনেন না। একটি কাগজে সই নিয়েছেন তাঁরা। কাদের আসামি করা হয়েছে, এ বিষয়ে তিনি ও তাঁর স্বামী কিছুই জানেন না।
আনরা আরো বলেন, আমরা গরিব মানুষ, পড়ালেখা জানি না। কারে আসামি করছে, হেইডা কইতে পারি না। যাঁর বিরুদ্ধে আপনার অভিযোগ, তাঁর নামে মামলায় নেই, আপনি বিচার পাবেন কি এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গরিবরা আবার বিচার পায় নাকি।

গত বৃহস্পতিবার রাত ৭টায় চাঁদপুর ও মুন্সীগঞ্জের মেঘনা নদীতে মধ্যবর্তী সীমান্তে কানা জহির ও কিবরিয়া মিজির নেতৃত্বাধীন দুই বালু দস্যু’র দলের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।

গোলাগুলির ফলে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার কলাকান্দা ইউনিয়নের রিফাত (২৯) ও মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার ভাষানচরের বাসিন্দা রাসেল (৩২) নিহত হন। এ ঘটনায় আরও একজন আইয়ুব আলী (৩২), গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন। বর্তমান তিনি চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।

আহত আইয়ুব আলীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর কিবরিয়া মিজি ও তার লোকজন মুন্সীগঞ্জ- চাঁদপুরের মোহনপুর সীমানাধীন চর বাংলাবাজার নাছিরার চর পদ্মা নদীতে চাঁদপুর নৌ পুলিশের সহযোগিতায় ২৫ থেকে ২৬টি ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করছে।

এ নিয়ে স্থানীয় জমির মালিকরা একাধিকবার বারণ করে কোনো প্রতিকার পায়নি। ওই সময়ে স্থানীয়রা মিলে কিবরিয়া মিজির অবৈধ বালু মহালে সাথে একটি ড্রেজার লাগাতে গেলেই কিবরিয়া মিজির লোক সশস্ত্র সদস্য জনি, জসিম দেওয়ান, মিছির বেপারী সহ তিনটি স্প্রিডবোট দিয়ে দাওয়া করে গুলি শুরু করে। এতে ট্রলার-স্পিডবোটে থাকা রিফাত, রাসেল ও স্পিডবোট চালক আমি গুলিবিদ্ধ হই।

স্থানীয় লোকজন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মতলবের নাসিরারচরে ১০-১৫টি ড্রেজারের মাধ্যমে অবৈধভাবে বালু কাটছিলেন কিবরিয়া। বালু কাটা নিয়ে কিবরিয়া ও কানা জহির বাহিনীর মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়।

নিহত রাসেল ফকিরের মা আনরা বেগমের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রবিউল হক বলেন, ‘আমরা তো মামলা নিতে চাইনি। সীমানা জটিলতার কারণে দেরি হয়েছে। সীমানা নির্ধারণের পর আমরা মামলা নিয়েছি। বাদী লিখিত যে অভিযোগ দিয়েছে, সেভাবে মামলা নিয়েছি। বাদী আমার সামনে এজাহারে সই করেছেন। কে বা কারা মামলা সাজিয়েছে, কাদের আসামি করেছে, এ বিষয়ে বাদী জানেন।

সম্পর্কিত খবর