চাঁদপুর প্রেসক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির সাথে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময়

মহসিন হোসাইন : চাঁদপুর প্রেসক্লাবের নব-নির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি রহিম বাদশার ও সাধারণ সম্পাদক কাদের পলাশসহ কার্যনির্বাহী কমিটির নেতৃবৃন্দ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিনকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।

এ সময় চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেন, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের উৎকর্ষের মাধ্যমে পরিবর্তন হবে এবং চাঁদপুর প্রেসক্লাব সাংবাদিকদের উন্নয়ন ও কল্যাণে কাজ করবে। আমি আমার কাজের ক্ষেত্রে আপনাদের সহযোগিতা কামনা করি। বর্তমান সময়ে সাংবাদিকদের গুরুত্ব অপরিসীম। প্রতিটি সেক্টরের সাথে সাংবাদিকরা জড়িত। আপনাদের সাথে প্রশাসনের যতো সম্পর্কের উন্নয়ন হবে, ততো কাজের মান উন্নয়ন হবে। অনেক সময় একজন ভালো সাংবাদিক রোশানলে পড়ে, তার পাশেও আপনাদের দাঁড়াতে হবে।

তিনি আ বলেন, সংবাদ কোথায় আছে, তা খুঁজে নেওয়া সাংবাদিকদের কাজ। আমি বলেছি চাঁদপুর হতে পারে সিঙ্গাপুর। আমি স্বপ্ন দেখতে পারি। তবে স্বপ্ন বাস্তবায়নে সকলের সহযোগিতা করতে হবে। সরকারি কোন কাজ জেলা প্রশাসকের মনে করে করবেন না, এটা চাঁদপুর জেলার নাগরিকের কাজ মনে করতে হবে। তাহলে যে কোন কাজ আলোর মুখ দেখবে।

হাইমচরে যদি একটি অর্থনৈতিক জোন থাকে, আর মতলব উত্তরে আরেকটি অর্থনৈতিক জোন হয়, তাহলে কি পরিমান কর্মসংস্থান হবে, তা আপনি কল্পনা করতে পারবেন না। চাঁদপুরে আমার কর্মস্থলের শেষ দিন পর্যন্ত এই জেলার উন্নয়নে কাজ করে যাব। চাঁদপুর পৌরসভার রাস্তা, লেকসহ সৌন্দর্য্য বর্ধণে কাজ করা হবে। পুরাণবাজার এলাকায় ব্রিজের পাশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, ওয়ারলেস এলাকায় মাটি দিয়ে ভরাটের কাজ চলছে, শিঘ্রই সিএনজি সিদ্ধান্তের বিষয়ে কাজ করা হবে।

তিনি বলেন, আমি মনে করি যে আপনাদের নেতৃত্বের দ্বারা অন্যান্য সাংবাদিকদের মধ্যে গুণগতমান আরো উৎকর্ষ ঘটবে। আপনারা নেতৃত্বের দায়িত্বে যারা আছেন তারা বাকিদের পাশে থাকবেন ।

আপনারা যারা কমিটির সদস্যবৃন্দ আমাদের সাথে যারা কাজ করবেন, তারা অবশ্যই ভালো কিছু করতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি। সাংবাদিকতা একটি মহৎ কাজ। সাংবাদিকতার মাধ্যমে ভালো কাজগুলো যেমন উঠে আসে তেমন মন্দ কাজগুলো আপনাদের দ্বরাই ওতপ্রোতভাবে বেরিয়ে আসে। যা পরবর্তীতে আমরা সেগুলো খুব সহজেই সমাধান করতে পারি। আমরা যদি মনে করি একটা বার্তা দিতে হবে বা সরকার একটা বার্তা দিবে তাহলে সেটা কেবল সাংবাদিকদের মাধ্যমেই ঘটে এবং খুব দ্রুত এর ফল আসে।

আপনারা সাংবাদিকরা কেউই আমার একেবারে প্রিয় নয়, আবার কেউই আমার অপ্রিয় নয়। আপনারা যখন আলোচনা করেন, তখন কেউ এই বিষয়টা নিয়ে মন খারাপ করবেন না। একজন সংবাদকর্মীর প্রধান কাজ‌ই হলো সংবাদ তৈরি করা, সংবাদের খোঁজে থাকা। আপনাকে সংবাদ খোঁজে নিতে হবে।

জেলা প্রশাসক আরো বলেন, আমি আপনাদের শহরের উন্নয়নের লক্ষে যে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছি, সেটি হলো পৌরসভার উন্নয়ন, ময়লার ডাম্পিং সরিয়ে নেওয়া, চাঁদপুরের লোকজন বেশিরভাগই প্রবাসী। তাই তাদের কর্মের বিষয়টি আরো বেশি ভাবতে হবে।

আমি চাঁদপুরের উন্নয়নের লক্ষে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে উন্নয়নমূলক কাজগুলো করতে চাই। এই চাঁদপুরকে একটি সিঙ্গাপুরে রুপান্তরিত করতে চাই। তবে এক্ষেত্রে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের এগিয়ে আসতে হবে, আপনারা চাঁদপুরবাসী সবার আগে এগিয়ে আসতে হবে।

কাজটি যদি চাঁদপুরের এবং আপনাদের নিজেদের মনে করেন, তাহলে কাজটি সম্পূর্ণ হবে। আর যদি মনে করেন কাজটি সম্পূর্ণ জেলা প্রশাসকের আয়ত্তে তাহলে এটি সম্পূর্ণ হ‌ওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।

আমি হয়তো এটা নিয়ে শুরু করেছি, তাই আমি কাজ করে যাবো। কিন্তু আপনাদেরও এগিয়ে আসতে হবে। সহযোগিতা করতে হবে।

তিন উদাহরণ দিয়ে বলেন, চাইলে এই চাঁদপুরে একসাথে ট্যুরিজম ও বিজনেস দু’টোই সম্ভব। সেটি হলো, আপনি যদি মনে করেন, সিঙ্গাপুরের বিজনেসম্যানরা একজন বায়ারের সাথে যখন কথা বলেন কোনো বিষয় নিয়ে, তখন তারা বলেন, চলেন আমরা একটি রিসোর্ট অথবা অফিসিয়ালি বসি।

তখন তাঁরা ভালো একটি পরিবেশে বসতে গিয়ে দেখা যায় যে, ব্যাবসায়িক চুক্তির পাশাপাশি ব্যাবসায়িক কাজ‌ও হয়েছে এবং ব্যাবসাও হয়েছে যা কিনা একটি রাষ্ট্রের জন্য অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য কাজ করেছে। আপনারা চাইলে সবাইকে নিয়ে একটি বাস্তবায়ন পরিষদ তৈরি করেন। অনেক লোকের কর্মসংস্থান তৈরি হবে। অনেক লোকজন আত্মনির্ভরশীল হতে পারবে।

আপনারা যারা সিভিল সমাজের লোকজন আছেন এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ রয়েছেন, তারা সবাই মিলে চাইলেই একটি বাস্তবায়ন কমিটি করতে পারেন।

এছাড়াও তিনি বলেন, চাঁদপুর মেডিকেল কলেজের জন্য ইতোমধ্যেই জায়গা নির্ধারণ নিয়ে কাজ চলমান রয়েছে। অনেক ভালো এবং নির্দিষ্ট সুন্দর একটি জায়গা পছন্দ করার কাজ চলমান রয়েছে। আশাকরি এটাও খুব দ্রুত বাস্তবায়ন হবে।

সবশেষে তিনি বলেন, আপনারা চাঁদপুরের সকল সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজের লোকজন সবাই মিলে আমাকে সহযোগিতা করলেই আমি ভালো কাজ করতে পারবো। আপনাদের সহযোগিতা কামনা করছি। আপনারা আমার সঠিক বিষয়টি তুলে ধরবেন বলে আমি আশাকরি।

আপনাদের সাথে যতো দ্রুত আমাদের সম্পর্ক তৈরি হবে ততো বেশি কাজের গুণগতমান বৃদ্ধি পাবে। আমি আপনাদের নবাগত কমিটির সকলকে ধন্যবাদ জানাই এবং সকলের সহযোগিতা চেয়ে তিনি তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষ করেন।

বক্তব্যের আগে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের নবাগত কমিটির নেতৃবৃন্দকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।

এ সময় বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি জালাল চৌধুরী, গিয়াস উদ্দিন মিলন, সিনিয়র সহসভাপতি সোহেল রুশদী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান সুমন, জি এম শাহিন, মির্জা জাকির, লক্ষণ চন্দ্র সূত্রধর, আল ইমরান শোভন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আউয়াল রুবেল, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. চৌধুরী ইয়াছিন ইকরাম, তালহা জুবায়ের,

কোষাধ্যক্ষ কে এম সালাউদ্দিন, নির্বাহী সদস্য মুনির চৌধুরী।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন, চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) এরশাদ হোসেন, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক ইব্রাহিম রনি, প্রচার ও দপ্তর সম্পাদক শরীফুল ইসলাম, সাহিত্য, প্রকাশনা ও লাইব্রেরী সম্পাদক হাসান মাহমুদ,

ক্রীড়া সম্পাদক এম আর ইসলাম বাবু, সাংস্কৃতিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, আপ্যায়ন ও বিনোদন সম্পাদক আশরাফুল আলম, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম অনিক, নির্বাহী সদস্য মুনওয়ার কানন, আব্দুল ওয়াদুদ রানা।

সম্পর্কিত খবর