
হাইমচর প্রতিনিধি : চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার দূর্গাপুর স্কুল এন্ড কলেজের এসএসসি টেস্ট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে না পেরে গভীর রাতে শিক্ষকের বাড়িতে দলবল নিয়ে হামলা চালায় কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রনকারী বখাটে ছাত্র ।
২ ফেব্রুয়ারি (রবিবার) সকালে উপজেলা পরিষদের সামনে এসে শিক্ষকের উপর হামলার প্রতিবাদে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল করেন। পরে শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে বেশ কয়েকজনকে এবং শিক্ষকদেরকে সাথে নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তার কার্যালয়ে এবিষয়ে আলোচনা করেন এবং অভিযুক্ত ছাত্রদেরকে স্কুল থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
গত ৩০শে জানুয়ারি রাত আনুমানিক ১২:৩০ মিনিটের সময় দুর্গাপুর স্কুল এন্ড কলেজের সহকারী সিনিয়র শিক্ষক মোঃ মনির হোসেনের বাড়িতে গিয়ে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষকের পরিবার কে হুমকি প্রদান এবং অকথ্য অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করে শিক্ষককে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করে শিক্ষার্থী নামধারী কিশোর গ্যাংরা।
ভুক্তভোগী বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মোঃ মনির হোসেন বলেন, এসএসসি পরীক্ষার্থী রানা পাটোয়ারী ও বর্তমান অধ্যায়নরত কিছু শিক্ষার্থী সহ ৬ জন বহিরাগত লোক আমার বাড়িতে গিয়ে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ এবং হত্যার হুমকি দিয়ে আসছে। এ বিষয়ে আমি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছি। আমি প্রশাসনের কাছে এ বিষয়ে অভিযুক্তদের শাস্তি কামনা করছি।
দুর্গাপুর স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ রুহুল আমিন বলেন, আমার বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ মনির হোসেনের বাড়িতে হামলার বিষয়টি আমাকে অবগত করলে আমি তাকে পরামর্শ দিয়েছি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করার জন্য। শিক্ষককে লাঞ্ছিত করায় আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই। ইতিমধ্যে নির্বাহী কর্মকর্তা বিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির সভাপতির নির্দেশক্রমে অভিযুক্ত ছাত্রদেরকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ মান্নান শিকদার বলেন, আমি ঘটনাটি শুনে তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিবাদ করেছি ও তীব্র নিন্দা জানাই। জানতে পেরেছি, অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের কে বহিষ্কার করা হয়েছে। আমরা চাই শুধু বহিষ্কারের মধ্যেই যেন সীমাবদ্ধ না থেকে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।
হাইমচর থানা অফিসার ইনচার্জ মহিউদ্দিন সুমন, দুর্গাপুর হাই স্কুলের সহকারী শিক্ষক মোঃ মনির হোসেন শিক্ষার্থী দ্বারা লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডাইরি হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি কোন শিক্ষার্থী যাতে কিশোর গ্যাংয়ের সাথে জড়িত না হয় সে ব্যাপারে আমাদের নজরদারি রয়েছে। কিশোর গ্যাংয়ের বিষয়ে আমাদের কোন ছাড় নেই। এ ব্যাপারে আমরা সর্বোচ্চ আইনানুক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
হাইমচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে সালমা নাজনীন তৃষা বলেন, কিশোর গ্যাংয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট তিনজন শিক্ষার্থীকে রেজুলেশনের মাধ্যমে বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে এবং তাদেরকে আইনের আওতায় এনে বিচার করা হবে। যাতে করে ভবিষ্যতে যেন শিক্ষার্থীর দ্বারা কোন শিক্ষক লাঞ্ছিত না হয়।