চাঁদপুরে জুলাই বিপ্লবের শহীদদের স্মরণ করায় লাঞ্ছিত সমবায় কর্মকর্তা!

স্টাফ রিপোটার : জুলাই বিপ্লবের শহীদদের কথা স্মরণ করায় চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলামের দ্বারা লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন চাঁদপুর জেলা সমবায় উপ-সহকারী নিবন্ধক মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন। এসময় জহির পুরো অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন এবং সমবায় কর্মকর্তার দিকে তেড়ে আসেন।

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে শহরের জেএম সেনগুপ্ত রোডে চাঁদপুর সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাংক লিমিটেডের নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণাকালে সমিতির নিজস্ব ভবনে এই ঘটনা ঘটে।

নির্বাচন অনুষ্ঠানে উপস্থিত লোকজনের সাথে কথা বলে জানাগেছে, অ্যাড: জহিরকে ওই অনুষ্ঠানে কেউ আমন্ত্রণ করেনি। তিনি নিজেই পরিকল্পিতভাবে সেখানে গিয়ে এই বিশৃঙ্খলা চালায়। তবে সেখানে সমিতির নির্বাচিত নেতারা তাকে ওই কার্যক্রম থেকে অনেক চেষ্টায় শান্ত করে। তিনি একাধিকবার সরকারি কর্মকর্তাকে আক্রমণ করার জন্য তেড়ে যায়।

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) ছিলো চাঁদপুর সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাংক লি. এর নির্বাচন। নিয়মানুসারে সমিতির তিনটি পদে নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও কোন প্রতিদ্বন্দি না থাকায় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় নির্বাচিত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন।

নির্বাচিত সভাপতি হলেন চেয়ার প্রতীকে রঘুনাথপুর আদর্শ কৃষক সমবায় সমিতির সদস্য মো. মুরাদ হোসেন খান। বই প্রতীকে সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন দি চাঁদপুর মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সদস্য এ ওয়াই. এম জাকারিয়া এবং কাঁঠাল প্রতীকে ওয়ারলেছ বাজার বহুমূখী সমবায় সমিতি লিমিটেড এর সদস্য মো. জিয়াউদ্দিন পাটওয়ারী সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছেন।

নির্বাচনে পরিচালনা কার্যক্রমে সহযোগিতায় ছিলেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সদর উপজেলা সমবায় অফিসার নাজমুন্নাহার ও জেলা সমবায় কার্যালয়ের পরিদর্শক আলমগীর হোসেন।

এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলা সমবায় উপ-সহকারী নিবন্ধক এবং নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন বলেন, খুবই মুক্ত পরিবেশে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা দেয়া হচ্ছিল। আমি বক্তব্যের শুরুতে ২৪ এর জুলাই বিপ্লবের শহীদদের স্মরণ করায় এবং আহত ও যারা নানাভাবে আত্মত্যাগ করেছেন তাদের কথা স্মরণ করে বক্তব্য দিচ্ছি। ওই সময় অনুষ্ঠানে আগত জনৈক অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম আমাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ, বক্তব্য না দেয়ার জন্য বাঁধা প্রদান করেন এবং বক্তব্য প্রত্যাহার করতে বলেন। তিনি আমাকে দেখে নিবেন বলে হুমকি-ধমকি দেন এবং বার বার তেড়ে আসেন।

তিনি আরো বলেন, ওই ব্যাক্তি এই সভায় আমন্ত্রিত সদস্য না। সভায় বহিরাগত কেউ আছে এটি আমি অবগত ছিলাম না। জুলাই-আগষ্টে যারা আত্মত্যাগ করেছেন তাদের বিষয়ে অসম্মান এবং অসৌজন্যমূলক আচরণ খুবই দুঃখ জনক ও বেদনা দায়ক। এই ধরনের ব্যাক্তিদের বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

এদিকে ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন সমিতির পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি আহসান উল্লাহ আখন্দ। তাকে প্রশ্ন করা হয় তিনি কী অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলামকে এই সভায় আমন্ত্রণ জানিয়েছেন কি না। এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন-তিনি আমন্ত্রণ জানাননি। ওই কর্মকর্তার বক্তব্য প্রদানকালে আহসান উল্লাহ আখন্দও আপত্তি করেন এবং এই বক্তব্য দেয়া উচিৎ হয়নি বলে প্রতিবাদ করেন।

অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলামের এই ধরণের আচরণ বিষয়ে উপস্থিত একাধিক সমিতির নেতা ও সদস্যরা জানান, তিনি এই ধরণের আচরণ করা কোনভাবেই ঠিক হয়নি। তিনি সব সময়ই এই ধরণের আচরণ করেন। তার বিষয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানে এসে এমন পরিস্থিতি তৈরীর অপরাধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।

সম্পর্কিত খবর